ঋতুরাজ বসন্তে বাংলা বছরের শেষ মাস চৈত্র। চৈত্রের মাঝামাঝি সময়ে ঈশ্বরদী উপজেলায় গম কাটা মৌসুম চলছে।
উচ্চফলনশীল জাতের ফসল আবাদ ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছরে ঈশ্বরদীতে ১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। গমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) সকালে গম ক্ষেতে গম কাটার ব্যস্ততা চোখে পড়ে। বৈশাখের শুরুতেই ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে, চৈত্রের শেষ সময়েই ফসল ঘরে তুলতে অনেকটা ব্যস্ত সময় পার করছেন গৃহস্থরা।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় এ বছরে ১ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। সঠিক মাত্রায় সার প্রয়োগ, আবহাওয়া ভালো থাকার কারণে কৃষি অফিসের সহযোগীতা ও পরামর্শ নিয়ে উচ্চফলনশীল হাতের গম আবাদ করার কারণে ফলন ভালো হয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, গম রবি মৌসুমের ঋতুরাজ বসন্তের বাংলা বছরের শেষ মাস চৈত্রের ফসল। চৈত্রের তপ্ত রোদে মাঠের পর মাঠ জুড়ে সোনালী রঙের পাকা গমে মাঠ সেজেছে অপরূপ সাজে। আর চৈত্রের মাঝামাঝি সময়ে ফসল কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। আবহাওয়া যদি ভালো থাকে এক সপ্তাহের মধ্যে ফসল কেটে তা মাড়াই করে ফসল ঘরে তুলতে পারলেই কৃষক বেশ লাভবান হবেন।
ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের দিয়াড় বাঘইল গ্রামের কৃষক শরিফুল আলম দিপু জানান, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছরে গমের বাম্পার ভালো হবে বলে মনে করছি। কারণ প্রতিটি গমের শীষ অনেকটা লম্বা ও গমের দানা খুব ভালো হয়েছে। চৈত্রের শুরুতে টানা গরমে ক্ষেতে পরিপূর্ণভাবে ফসল পেকেছে।
ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া ইউনিয়নের চাঁনমারি গ্রামের কৃষক ফিরোজ মাহমুদ বলেন, আমি কয়েকবিঘা জমিতে গম আবাদ করেছি। গম বপনের পর কয়েকবার সেচ দিতে হয়। এ বছরে গম রোপণের শুরুতে হালকা বৃষ্টি ও গমের চারা সামান্য বড় হওয়ার পর বৃষ্টিপাত হওয়াতে জমিতে সেচ দেওয়ার কোনো দরকারই হয়নি। কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে প্রতি বিঘা জমিতে ১২ মণ গম ঘরে তুলতে পারবো।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, কৃষিবিদ মিতা সরকার জানান, বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছরে ঈশ্বরদী উপজেলাতে গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া বেশ অনুকূলে থাকার কারণে কৃষক-কৃষাণীরা মনের আনন্দে ফসল কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কৃষিবিদ মিতা সরকার আরও জানান, এ বছরে গম রোপনের সময় হালকা বৃষ্টিপাত হওয়ার জন্য এবং গমের চারা গজানোর পর হালকা বৃষ্টির কারণে অনেক জমিতে কৃষকের জমিতে সেচ দেওয়ার দরকার হয়নি। আর রোগবালাই কম ছিল। বারি মৌসুমে উচ্চফলনশীল জাতের ১৯০০ হেক্টর জমিতে গম আবাদ হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে ফলন বেশ ভালো হয়েছে। বাজার দর ভালো থাকার কারণে লাভবান হবেন কৃষকরা