শখের বসে ছাদ বাগান করে, শেষ পর্যন্ত একজন উদ্যোক্তা বনে গেছেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পৌর এলাকার বাসিন্দা জান্নাতুল ফেরদৌস যুথি। অল্প কিছু গাছ দিয়ে শুরু করলেও এখন তার সংগ্রহ রয়েছে শোভাবর্ধনকারী দেশি-বিদেশি তিন শতাধিক ক্যাকটাস ও সাকুলেন্ট প্রজাতির গাছ। আর অনলাইন অফলাইনে চারা বিক্রি করে মাসে তিনি আয় করছেন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা।
যুথির বাগানে গেলেই চোখে পড়বে লাল, নীল, বেগুনি, হলুদ, সবুজসহ নানা রঙের সমাহার। যে দিকে তাকানো যায় দেখা মেলে বাহারি রংয়ের উদ্ভিদের মেলা। ২০১৯ সালে পৌরসভার পেছনে নিজ বাড়ির ছাদে কয়েকটি টবে চারা লাগিয়ে বাগান চর্চা শুরু করেন গৃহিনী জান্নাতুল ফেরদৌস যুথি। আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে সৌখিনতা। পাঁচ বছরে তার বাগান সমৃদ্ধ হয়েছে এঞ্জেল উইং, ক্রিসমাস, লেডিফিঙ্গার, প্যারোডিয়া, ইদুরের লেজ, ব্যারেল, চাঁদ, অ্যালো, ঘৃতকুমারী ও ঘৃতকাঞ্চন, জেব্রা প্ল্যান্ট, এচিভেরিয়া, এয়ার প্ল্যান্ট, স্যানসেভিরিয়া, পাথরকুচি সহ দেশ বিদেশের বিভিন্ন ধরনের তিন শতাধিক ক্যাকটাস ও সাকুলেন্ট গাছে।
শখ থেকে শুরু হলেও এই ছাদ বাগান এখন জুঁই যুথির আয়ের একটি উৎস। তবে চারা বিক্রির এসব টাকা তিনি অন্য কোথাও ব্যয় না করে বাগান বৃদ্ধিতে কাজে লাগাচ্ছেন।
গৃহিনী যুথি জানান, করোনাকালীন সময়ে গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় বাগান করার পরিকল্পনা মাথায় আসে । প্রথমে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ছাদে ক্যাকটাস ও সাকুলেন্ট জাতের অল্প কিছু চারা সংগ্রহ করি । তবে সময়ের সাথে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে বিনিয়োগ ও চারা সংগ্রহ। বর্তমানে দেশি বিদেশি কয়েকশো জাতের চারা রয়েছে আমার বাগানে। যুথি আরও বলেন, আমাদের দেশের নারীরা নিজেদের স্বাবলম্বী করতে সব সময় একটা সামাজিক প্রতিবন্ধকতা সম্মুখীন হয়। সকলের বাহিরে চলাফেরার সুযোগ হয় না। বাড়িতে থেকে যারা নিজেরা স্বাবলম্বী হতে চায়, এই উদ্যোগ সেসকল নারীদের সাবলম্বী হতে আরও উৎসাহ দেবে। আমার মত যারা বাগান তৈরিতে আগ্রহী আমি তাদের সব সময় পরামর্শ ও চারা সংগ্রহে সহযোগিতা করবো।
যুথির স্বামী এনামুল হক বাবু বলেন, ছোটবেলা থেকে গাছের প্রতি আমার একটা দুর্বলতা কাজ করে। আমি ঈশ্বরদী পৌরসভাতে চাকরি করি। আমাদের বাগানটিতে বেশিরভাগ সময় আমার স্ত্রী পরিচর্যা ও দেখাশোনার কাজ করে থাকেন । আমি শুধু দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চারা সংগ্রহ করে দেই। বাগানটা এখন বাণিজ্যিকভাবে রূপ নেওয়ায় দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতারা অর্ডার করে থাকেন। চারা গুলো কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে তাদের কাছে পৌঁছে দিয়ে আমি আমার স্ত্রীকে সহযোগিতা করি । নাম ছড়িয়ে পড়তে শুরু করার পর বিভিন্ন জায়গা থেকে বাগান দেখতে ভিড় করছেন অনেকে।