রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিকিমথ কোম্পানীর পরিচালকের গাড়ি চালক সম্রাট খান হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি এবং ভিকটিমের মোবাইল উদ্ধার করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। অধিকতর তদন্তের স্বার্থে গত ২৬ মার্চ সম্রাটের বন্ধু আব্দুল মমিনের স্ত্রী সীমা খাতুনকে আদালতের মাধ্যমে ২ দিনের রিমান্ড আনা হয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে সুমির দেওয়া তথ্য মোতাবেক সেফটি ট্যাংক হতে হাতুড়ি ও মোবাইল সেট উদ্ধার হয়।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ অরবিন্দ সরকার জানান, স্বীকৃত আসামী সীমা খাতুনকে রিমান্ডে আনার পর তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সোমবার সন্ধ্যার পর তার দেওয়া তথ্য ও দেখানো স্থান বাড়ির টয়লেটের সেফটি ট্যাংকের ভেতর হতে হত্যায় ব্যবহৃত হাতুড়ি এবং পাশের বাড়ির অব্যবহৃত সেফটি ট্যাংকি হতে সম্রাটের ভেঙ্গে ফেলা মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ২৬ মার্চ সীমা খাতুনকে রিমান্ডে আনার পর হতে ধারাবাহিকভাবে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে সীমা জানায়, সম্রাট প্রায়ই ছবি-ভিডিও ফাশ করার কথা বলে বিভিন্নভাবে তাকে ব্লাকমেইল করতো। ছবি ও ভিডিও প্রসঙ্গে সীমা জানায়, স্বামীর সাথে বন্ধুত্বের সূত্র ধরে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং উভয় পরিবারের বাড়িতে যাতায়াত ও খাওয়া-দাওয়া চলতো। এরই এক পর্যায়ে সম্রাট গোপনে তাকে কিছু খাওয়ালে সে অচেতন হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তাকে ধর্ষণের সাথে সাথে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। সেই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে সীমাকে বার বার ডাকতো এবং অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করতো। যা তার স্বামী আব্দুল মমিনও জানতো। এতে সীমা ও স্বামী মমিন সম্রাটের ওপর চরম ক্ষুদ্ধ ছিলো। ঘটনার রাতে সম্রাট বাঁশেরবাদায় তাদের বাড়িতে যায় এবং খাওয়া-দাওয়া করে। পরে সম্রাট বিছানায় শুয়ে পড়ে বলে মাথা ব্যাথা করছে। মমিনকে ওষুধ আনার জন্য দোকানে পাঠায়। মমিন ওষুধ কিনতে গেলে সম্রাট সীমার গায়ে হাত দেয় এবং ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় সীমা ভিকটিম সম্রাটের গোপনাঙ্গ জোড়ে চেপে ধরলে সে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে হাতুড়ি নিয়ে এসে মাথায় আঘাত করলে সম্রাট মারা যায়।
এরইমধ্যে র্যাব সম্রাট হত্যাকান্ডের ঘটনায় পলাতক আব্দুল মমিনকে গ্রেফতার করেছে। ওসি অরবিন্দ জানান, ঈশ্বরদী থানায় মমিনকে হস্তান্তরের পর সীমার সাথে ক্রস জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যে যাই বলুক না কেন, অল্প সময়ের মধ্যেই গাড়ি চালক সম্রাট খান হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হবে পুলিশ।