ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিজের ছেলে-পুত্রবধূ ও নাতিকে হারিয়ে শোকে পাগলপ্রায় এক বয়স্ক নারী। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে নিজের দুরবস্থার কথা সবাইকে জানানোর আর্তি জানিয়েছেন তিনি।
ভূমিকম্পের এপিসেন্টার কাহরামানমারাশের বাসিন্দা সেই নারী বলেন, সোমবার ভোরে ভূমিকম্পের পর অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছিল তার ছেলে, পুত্রবধূ ও নাতি। তাদের সেখান থেকে বের করতে সহায়তার জন্য গত তিন দিন তিনি পাগলের মতো এদিক-সেদিক ছোটাছুটি করেছেন।
‘অবশেষে আজ উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে তার পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করতে পেরেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাদের কেউই আর বেঁচে নেই’- বলেন সংবাদ সংগ্রহের কাজে তুরস্কে অবস্থানরত আলজাজিরার প্রতিনিধি রেসুল সেরদার। সেরদারের সঙ্গেই কথা হয়েছে ওই নারীর।
সেরদার আরও বলেন, ‘এখানকার প্রতিটি পরিবারেরই কাহিনি এমন। বহু পরিবার এখনও অপেক্ষায় আছে— ধ্বংসস্তূপ থেকে তাদের স্বজনরা জীবিত অবস্থায় ফিরে আসবে। ভূমিকম্পের পর প্রায় ৮০ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে, তবুও তারা অপেক্ষায় আছেন।’
সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তুরস্ক ও তার প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া। ওই ভূমিকম্পের ১৫ মিনিট পর ৬ দশমিক ৭ মাত্রার আরও একটি বড় ভূমিকম্প এবং পরে আরও অনেকগুলো আফটারশক হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তাৎক্ষণিক এক বিবৃতিতে বলা হয়, তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় কাহরামানমারাস প্রদেশের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে ছিল ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল।
গত কয়েক দশকের মধ্যে ঘটা ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ১৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। দুদিনের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও উভয় দেশে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অসংখ্য মানুষ আটকা পড়ে আছেন। ধ্বংসাবশেষ আর আবর্জনার নিচে আটকে পড়া লোকজনকে জীবিত উদ্ধারের আশা সময়ের সাথে সাথে ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে।