পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রায় ১০ বছরের বেশি সময় আগাম জাতের শিমের আবাদ হচ্ছে। দাম ভালো পাওয়ার আশায় এই শিমের চাষ করা হয়। কিন্তু এবার সে আশার গুড়েবালি। হঠাৎ পাইকারি বাজারে শিমের দাম কমে গেছে। দু’দিনের ব্যবধানে ৭০ টাকা কেজির শিম এখন ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে হতাশ ঈশ্বরদীর চাষিরা।
শনিবার (০৫ নভেম্বর) মুলাডুলি ইউনিয়নের সরেজমিনে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শুধু শিম আর শিম। আগাম শিমের পাশাপাশি এখানে শীতকালীন শিমের আবাদও রয়েছে।
কৃষকরা জানান, আষাঢ়ের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে আগাম শিমের আবাদ শুরু হয়। আশ্বিন মাসের শুরু থেকে ফলন পাওয়া যায়। তবে এবার আষাঢ়-শ্রাবণে তীব্র খরার কারণে গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বহু গাছ মরে গেছে যেগুলো বেঁচে ছিল সেগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছিল। পরে বৃষ্টি হওয়ায় শিম গাছগুলো সবল হয়ে উঠলেও ফলন কম হয়েছে। বেশি দামের আশায় অধিক খরচ করলেও এবার লাভের সম্ভাবনা খুবই কম।
রামেশ্বরপুর গ্রামের শিম চাষি আবেদ প্রামাণিক জানান, আশ্বিন মাস থেকে প্রতি বিঘা আগাম শিম ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। এবার ১০ হাজার টাকাও বিক্রি হয়নি।
আটঘরিয়া গ্রামের শিম চাষি কাশেম আলী বলেন, খরায় শিম গাছের ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া সার, ডিজেল, কীটনাশক ও বীজের দাম বেশি ছিল। ফলনও অন্যবারের তুলনায় কম। বাজারে হঠাৎ দাম কমে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়ছি।
মুলাডুলি আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক জানান, শনিবার সকালে প্রতি কেজি শিম বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। অথচ বুধ ও বৃহস্পতিবার শিম বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, তীব্র খরায় প্রথমে শিমগাছের কিছুটা ক্ষতি হলেও পরে বৃষ্টিপাতের কারণে আবাদ ভালো হয়েছে। শিম গাছে ফুল ও ফলন খুবই ভালো মনে হয়েছে। আশাকরি সামনের দিনগুলোতে শিমের ফলন আরও বাড়বে।
দরপতন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি আমিও চাষিদের মাধ্যমে শুনেছি। বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতির কারণে দাম কমে যেতে পারে বলে জানান তিনি।