একই দিন দুটি আন্তঃনগর ট্রেনে ঢাকা যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছে পাবনার ঈশ্বরদীবাসী। এ ট্রেন পেয়ে উচ্ছ্বসিত সাধারণ জনগণ। শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) রাজশাহী-ঢাকা রুটে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচলকারী আন্তঃনগর মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। ট্রেনটি ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে।
অন্যদিকে ওই দিন রাতে রাজশাহী-ঢাকা রুটে বঙ্গবন্ধু সেতু (যমুনা সেতু) হয়ে চলাচলকারী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে যাত্রাবিরতি শুরু করেছে। আগে এ ট্রেনের ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে যাত্রাবিরতি ছিল না।
পশ্চিম রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলাচলকারী মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন গতকাল শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) থেকে পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল শুরু করেছে। ট্রেনটি ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। আর ৭টা ৪০ মিনিটে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে ২০ মিনিট যাত্রা বিরতি দিয়ে ৮টায় ছেড়ে যায়। ট্রেনটিতে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন থেকে ৫৫টি আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলাচলকারী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন শুক্রবার রাত ১২টা ২৩ মিনিটে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেবে। ট্রেনটিতে ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনের জন্য ২৫টি আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী আশিকুর রহমান ওমর বলেন, অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল পদ্মা সেতু দেখার। ঈশ্বরদী থেকে ট্রেনে উঠে পদ্মা সেতু দেখতে পেয়ে স্বপ্ন পূরণ হলো। খুবই ভালো লাগছে।
স্বপ্না খাতুন নামে এক ট্রেন যাত্রী বলেন, ঈশ্বরদীবাসী দীর্ঘদিন সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা যাতায়াত করেছে। এ ট্রেন দুটি পদ্মা সেতু হয়ে চলাচল শুরু করায় ঈশ্বরদীর মানুষ এক সঙ্গে ট্রেন দুটির সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। আজ থেকে মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা চলাচল করবে। প্রথম দিন এ ট্রেনের যাত্রী হতে পেরে ভালো লাগছে।
ঈশ্বরদী নাগরিক কমিটির সভাপতি মোস্তাক আহমেদ কিরণ বলেন, ঈশ্বরদী তথা পাবনার মানুষ এই প্রথম ট্রেনে উঠে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় যাচ্ছে। এদিকে অনেকেরই পদ্মা সেতু দেখার সৌভাগ্য হয়নি। এখন ট্রেনের সুবাধে তাদের পদ্মা সেতু দেখার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে।
ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন এলাকার বাসিন্দা রওশন আলম বলেন, মধুমতী এক্সপ্রেস অনেকদিন ধরে ঈশ্বরদী-ভাঙ্গা রুটে চলাচল না করায় এ ট্রেনে যাতায়াত করা থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। গতকাল শুক্রবার থেকে ট্রেনটি আবারও ঈশ্বরদী থেকে ভাঙ্গা রুটে চলাচল করছে। এখন থেকে আমরা ঈশ্বরদী থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় যেতে পারব। আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়।
ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট মহিউল ইসলাম বলেন, সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেন ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে প্রবেশ করে। এখানকার নির্ধারিত যাত্রী নিয়ে সকাল ৮টায় ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এ ট্রেন প্রথম দিন ৯টি কোচ নিয়ে চলাচল করছে। গতকাল শুক্রবার প্রথমবারের মতো ট্রেনটি পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে দুপুর ২টায় ঢাকা পৌঁছায়। ঢাকা থেকে বিকেল ৩টায় ছেড়ে রাত সাড়ে ৯টায় ঈশ্বরদীতে পৌঁছায়। এ ট্রেনে ৫৫৮টি আসন আছে।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা এম নুরুল আলম বলেন, মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটির ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনসহ ১৮টি স্টেশনে যাত্রা বিরতি রয়েছে। একই দিনে ঈশ্বরদী জংশন ও বাইপাস স্টেশন থেকে যাত্রীরা ঢাকা যাতায়াতের জন্য দুটি আন্তঃনগর ট্রেনে যাত্রার সুবিধা পেল। ট্রেনটি পদ্মা সেতু হয়ে নির্ধারিত সময়ে ঢাকায় পৌঁছেছে। একই সঙ্গে শুক্রবার রাতে প্রথমবারের মতো রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলাচলকারী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়েছিল।