ঈশ্বরদীতে প্রেমিক-প্রেমিকাকে পিটিয়ে সঙ্গমে বাধ্য করেছে একদল বখাটে। আবার সঙ্গমের সময় ধারণকৃত সেই ভিডিও ফাঁসের (ইন্টারনেটে ভাইরাল) ভয় দেখিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি গত ৯ই জুন রবিবার রাত আনুমানিক ৯ ঘটিকার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ৬-নং ওয়ার্ডের কোলেরকান্দি বটতলা গুচ্ছগ্রাম এলাকায় ঘটেছে।
কিশোরী সাবিনা আক্তার ১৩ ( ছদ্মনাম ) কোলের কান্দি গুচ্ছ গ্রাম ( আশ্রয়ণ প্রকল্পের) এলাকার মো. নায়েব আলীর মেয়ে এবং মিরকামারী আদর্শ দাখিল মাদ্রসার ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী।
ঘটনার বিবরনীতে জানা যায়, একই আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা মো. একরাম হোসেনের ছেলে মো. হৃদয় হোসেন’র ১৮ সঙ্গে কিশোরী সাবিনার (ছদ্মনাম) প্রেম চলে আশছিলো দীর্ঘদিন ধরে ( এলাকাবাসী এবং পরিবারের ভাস্য মতে)। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৯ই জুন রবিবার রাত আনুমানিক ৯ ঘটিকার দিকে রাজমিস্ত্রীতে কর্মরত প্রেমিক হৃদয়ের ফোন পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে বাড়ির পাসের একটি পরিত্যাক্ত বাড়িতে যায় ছাবিনা। সেখানে যাওয়ার সময় বখাটে নওদাপাড়া এলাকার মো. রেজাউল ইসলামের ছেলে এবং এক সন্তানের জনক মো. রইদুল ইসলাম ২৮, কোলের কান্দি এলাকার মো. ইদ্রিস আলীর ছেলে মো. মাহফুজ, মো. রাতুল এবং মিনহাজ দেখে ফেলে। এসময় বখাটেরা তাদের পিছু নিলে হৃদয় এবং সাবিনা সেখান থেকে ঘরে ফিরতে চাইলে তারা তাদের বাধা দেয় এবং জোর করে ঘরের ভেতরে টেনে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তারা দুজনার মুখ বেঁধে মারপিট শুরু করে।
মারপিটের এক পর্যায়ে বখাটেরা কুমতলব আটে এবং তাদের কে যৌন সঙ্গমে বাধ্য করে এবং সেই মূহুর্তের ভিডিও রেকর্ড করে হৃদয়ের থেকে ছিনিয়ে নেয়া মোবাইলসহ তাদের তিনজনের মোবাইলে। ভিডিও ধারনের এক পর্যায়ে তাদের সাথেও সঙ্গম করতে হবে মর্মে কু-প্রস্তাব দেয় বখাটে রইদুল। প্রথমে ছাবিনা অস্বীকার করে এবং পরে ভিডিও ইন্টার নেটে ছেড়ে ভাইরাল করে দেবে ভয়ে রাজি হতে বাধ্য হয়।
ঘটনাটি ছাবিনা রাতে ভয়ে কাউকে না বললেও সকালে তার মা কে বলে দেয়। ধান চাতালে কর্মরত ছাবিনার মা এমন কথা শুনে দিকবিদিক হারিয়ে ন্যায় বিচার চাইতে হৃদয়ের পরিবারের কাছে গেলে তাদের কাছে কোন প্রকার সাহায্য না পেয়ে তিনি বিষয়টি জানান আশ্রয়ন প্রকল্পের সভাপতি মো. রহমানের কাছে সভাপতি মো. রহমান সঠিক বিচার করবেন বলে ছাবিনার মাকে আশ্বস্থ করলেও তিনি ব্যর্থ হন।
জানতে চাইলে সভাপতি মো. রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে দাশুড়িয়া ইউপি সদস্য মো. বাকি মেম্বর, চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যের বিচার করার কথা ছিলো কিন্তু তারা কোন এক কারনে আমাদের বিচারে আসেননি ।
তিনি আরও বলেন, বাকি মেম্বরের ছোট ভাই মো. কল্লোলের কাছে এই ঘটনার ভিডিও আছে বলে আমি জেনেছি। এখানে ঘটে যাওয়া ঘটনার ভিডিওসহ আটককৃত হৃদয়ের ফোন কল্লোলের কাছে আছে এবং ভিডিওর জন্য কল্লোল দশ হাজার টাকা দাবি করছে বলেও উপস্থিত সবাই জানান। ছেলের ধর্ষণের দায় স্বীকার করে হৃদয়ের মা মোছা. নারগিস খাতুন বলেন, আমার ছেলে অন্যায় করেছে তার বিচার আমরা সবাই চাই। সেই সাথে আমার ছেলেকে দিয়ে যারা এই পাপ কাজ করাইছে তাদের ও সঠিক বিচার চাই।
জানতে চাইলে ঈশ্বরদী থানার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হাদিউল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিয়ে থানায় একটি নারী শিশু ও পন্যগ্রাফী আইনে মামলা হয়েছে। এ মামলায় হৃদয় নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা চলার পাশাপাশি ভিডিও গুলো উদ্ধারেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি নিরলস ভাবে।