ঈশ্বরদী দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে ফেরার পথে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষসহ পাঁচজনকে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় দুর্বৃত্তরা নগদ অর্থ ও মোবাইল ফোন লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত রোববার রাতে উপজেলা সদরের দরিনারিচা হরিজন কলোনী দূর্গা মন্দিরের সামনে ওই ঘটনাটি ঘটে।
এদিকে সোমবার রাতে এ ঘটনায় থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন আহতের স্ত্রী টুনি চৌধুরী।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় সাঁড়া ইউনিয়নের পদ্মা নদীর পাঁচ নম্বর ঘাট সীমানায় প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন কাকন চৌধুরী (৩০)। হরিজন কলোনী দূর্গা মন্দিরের সামনে পৌঁছালে বারো থেকে তেরজন যুবক দুটি মোটরসাইকেলে করে এসে তাঁর পথ আটকান। এরপর তারা হাসুয়া, রামদা লোহার রড ও কাঠের বাটাম দিয়ে তাঁকে পেটান। ওই সময় প্রতিবেশী যুবক সুজন, অমৃত, সুমিতসহ সীমা নামে এক নারী এগিয়ে এলে তাঁদের কেউ ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত ও লাঠিপেটা করা হয়। হামলার কারণে কাকনের মাথা ফেটে রক্ত ঝরে। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা কাকনের কাছ থেকে নগদ টাকা ও একটি মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে নেন। দুর্বৃত্তরা চলে যাওয়ার পর স্বজনরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
আহত কাকন দরিনারিচা হরিজন কলোনী এলাকার দয়াল চৌধুরীর ছেলে।
এলাকার চারজন বাসিন্দা জানান, শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বী কয়েকজন যুবক নৌকার উপরে ঢোল বাজাচ্ছিল। পরে সেখানে পাঁচ থেকে ছয়জন যুবক এসে ঢোল বাজাতে চাইলে তাদের নিষেধ করা হয়েছে। এ সময় ঢোল বাজানো নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। ধারণা করা হচ্ছে ওই বিরোধের জেরে কাকনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।
আহত কাকন চৌধুরী জানান, ‘পিয়ারাখালী এলাকার আপন শেখের নেতৃত্ব যারা তাঁর উপর হামলা করেছে, তারা সবাই এলাকার ইভটিজার ও বখাটে ছেলে। এলাকায় নানা ধরনের খারাপ কাজের সঙ্গে তারা জড়িত। এসব যুবকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি।
এদিকে জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সজিব কুন্ডু তপু ওই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে বিচারের দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান জানান, এই ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
হামলা চালানোর অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য আপন শেখের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তাঁকে পাওয়া যায়নি।
শাহিনুর রহমান বাঁধন
ঈশ্বরদী প্রতিনিধি
০১৭২২১৫৭৮৯২