ঈশ্বরদী পশ্চিম টেংরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ রকিবুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রভাবশালী কর্তৃক বিদ্যালয়ের জমি বেদখলে নেওয়ায় নীরব ভূমিকা পালন, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারী অর্থ আত্মসাত করা ও শিক্ষার্থীদের সাথে অশালিন আচরণ করাসহ নানা অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। অভিযোগের পর দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির আহবায়ক করা হয় পাবনার সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাককে। সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ঈশ্বরদীর সহকারী শিক্ষা অফিসার জহুরুল ইসলাম।
বুধবার সকালে পাবনার সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করা হয়। তদন্ত কমিটি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর করা অভিযোগের কয়েকটি সত্যতা পেয়েছেন বলে তদন্ত কমিটির আহবায়ক সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের আরও জানান,নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষক রেলওয়ের চতুর্থ শ্রেণীর এক মহিলাকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করেছেন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির পদ থেকে ঐ মহিলাকে বাদ দিয়ে অন্যান্য সদস্যদের মধ্য থেকে ক্রমানুসারে সিনিয়র সদস্যকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিচালনা কমিটির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। একই সাথে প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা স্বপ্না পারভীনকে অন্য স্কুলে বদলীর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সহকারী কমিশনার অফিসের সার্ভেয়ার দিয়ে জমি মেপে বুঝে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কর্তৃক দায়েরকৃত একটি মামলা কোর্টে চলমান থাকায় আপাতত তাকে(প্রধান শিক্ষককে) বদলী করা যাচ্ছেনা।
সম্প্রতি শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও এলাকাবাসীর পক্ষে মার্সাল রোমেল সুমন, হাফিজা বেগম, সমছের আলম,আসাদুজ্জামান, আরিফুজ্জামান লিখিতভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ রকিবুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের লিখিত অভিযোগ করেন শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে। সেই লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়,ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নিকট প্রাইভেট না পড়লে ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো, অনিয়ম করে রেলওয়ের চতুর্থ শ্রেণীর এক মহিলাকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি সভাপতি করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি করে গোপন রাখা, অর্থ আত্মসাত করা ও শিক্ষার্থীদের সাথে অশালিন আচরণ করাসহ নৈতিক চরিত্রের স্খলনের সাথে জড়িত।
উল্লেখ্য যে, পশ্চিম টেংরী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় ৩৩দশমিক ৭০ শতাংশ জমির উপর। পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আর্থিক সুবিধা নিয়ে সুকৌশলে বিদ্যালয়ের এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালীকে বেদখল করতে সহায়তা করেন। পরবর্তীতে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ ভুক্ত হওয়ায় বিদ্যালয়ের নিজস্ব জমিতে চারতলা একটি ভবণ নির্মাণের বরাদ্দ আসে। কিন্তু বিদ্যালয়ের জমি প্রভাবশালীদের দখলে থাকায় কোনরুপ মাপযোগ ছাড়াই বিদ্যালয়ের চার তলা ভবণ ও বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা হয়। এবং অনেকাংশই রেলওয়ের জমির মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে পশ্চিম টেংরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাকিবুজ্জামান সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সকল অভিযোগ মিথ্যা । এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি আক্রোশ মূলখভাবে অভিযোগ দায়ের করেন।