দ্রব্যমূলের উর্ধ্বগতির এই বাজারে সাধারণ মানুষ অনেকটাই ঘরমুখী হয়ে গেছে। রাস্তায় বের হলে কিংবা কোথাও বসলে কিংবা চায়ের আড্ডায় একত্র মিলিত হলে কিছু খরচা হয়। বলা যায় সেই খরচ থেকে বাঁচতে এখন আর মানুষ প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হয় না, রাস্তায় বের হলে গুনতে হয় দ্বিগুণ ভাড়া, আড্ডায় বসলেও পকেটের টাকা শেষ হয়, ইচ্ছেমতো কিছু খাওয়া যায় না।
এই তো মানুষ এখন ঘরমুখী, অলস সময় ফেসবুক আর টিভি নিয়েই পড়ে থাকে। মনের মাঝে লুকিয়ে থাকা সাংস্কৃতিক কিংবা খেলাধুলার সেই খোরাক মনের অজান্তেই নিভে গেছে। আর নিভে যাওয়া সেই মানুষের মনের খোরাক মিটিয়ে উজ্জীবিত করতে এগিয়ে এসেছে মানাব।
এক সময় দেখা যেত সমাজের বিত্তবানরা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান কিংবা ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে আর্থিক সহযোগিতা করতে। তাদের সহযোগিতায় এসব সংগঠনগুলো বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং ক্রীড়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজের তরুণদেরকে ভালো কাজে একত্রিত করত। এখন আর সেইসব বিত্তবানদের দেখা যায় না এসব প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশে এসে দাঁড়াতে। তাই ক্রমাগতই এসব প্রতিষ্ঠানগুলো ধুকে ধুকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে সংস্কৃতিকমনা মানুষ ও খেলোয়াররা।
ঈশ্বরদীর মাদক বিরোধী সংগঠন মানাব গ্রাম পর্যায় থেকে খেলাধুলার মান উন্নয়নে কাজ করছে। এ যেন নব অংকুরের শিকড়। সেই ধারাবাহিকতার প্রথম পর্যায়ে ঈশ্বরদী মাজদিয়া খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতিকে আগামী এক বছর ফুটবল উন্নয়নে তাদের ক্লাবকে সকল প্রকার সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে।
মানাবের সভাপতি সাংবাদিক মাসুম পারভেজ কল্লোল বলেন, বাংলাদেশের নামিদামি সকল খেলোয়াড়রা গ্রাম পর্যায়ে থেকে উঠে এসেছে। তারা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। তাই আমরাও মানাবের পক্ষ থেকে গ্রাম পর্যায় থেকেই খেলাধুলা বিশেষ করে ফুটবলের মান উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছে।
এ ছাড়াও উপজেলার আরো বিভিন্ন গ্রামের ক্লাবগুলোকে খেলাধুলার উন্নয়নে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করবো।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সংগঠনের নিজস্ব কোন ফান্ড নেই, সংগঠনের বেশিরভাগ সদস্যই ছাত্র-ছাত্রী। তবে আমাদের শুভাকাঙ্ক্ষী এবং ভালবাসার মানুষের সংখ্যা অনেক। যারা আমাদের সকল ভাল কাজের আর্থিক সহযোগিতা করে থাকে। বলা যায় তাদের জন্যই আমরা এই কাজগুলো করতে পারি।
করোনাকালীন সময়ে তাদের আর্থিক সহযোগিতায় কয়েক দফায় মানবের পক্ষ থেকে হাজার হাজার পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী এবং আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছি। সিলেটের ভয়াবহ বন্যার সময় আমাদের সেই শুভাকাঙ্ক্ষী ও ভালোবাসার মানুষগুলো মানাবের মাধ্যমে বন্যার পানিতে আটকে থাকা অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে।
খেলাধুলার মান উন্নয়নে আমরা যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি এগুলোও তাদের ভালোবাসা এবং সহযোগিতাতেই এগিয়ে যাবে।
এদিকে শুক্রবার ( ১২ আগস্ট) মাজদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা মাঠে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচে অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় ঈশ্বরদী মাজদিয়া খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি ৪-০ গোলে বাঘার কিশোরপুর ফুটবল একাডেমিকে পরাজিত করে। মাজদিয়ার পক্ষে মিজান ২ টি, সুমন ও ইমন ১ টি করে গোল করেন।
আমি বিশ্বাস করি এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে মাজদিয়া থেকেই ভালো খেলোয়াড় তৈরি হয়ে দেশের সর্বোচ্চ ঈশ্বরদী নাম উজ্জ্বল করবে।
-মাসুম পারভেজ কল্লোল
মাজদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সম্মানিত অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক খানের সভাপতিত্বে প্রীতি ফুটবল ম্যাচে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মানাবের সভাপতি মাসুম পারভেজ কল্লোল। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঈশ্বরদী ব্রাদার্স ইউনিয়নের সহ-সভাপতি আবুল কালাম রনা, সাবেক ফুটবলার মোঃ আবুল হোসেন, ঈশ্বরদী মেসার্স রাফি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ও মানাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাদিকুল ইসলাম রাসেল, প্রভাষক আব্দুল হাকিম টিটন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাসুম পারভেজ কল্লোল বলেন, কিছুদিন আগেও এই মাজদিয়া এলাকায় মাদকের অভয়ারণ্য ছিল। তরুণ সমাজ এই মাদকের কারণে ক্রমাগতই বিপথগামী হচ্ছিল। আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই মাজদিয়া খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতিকে। তাদের ক্লাবের মাধ্যমে আবারও ক্রীড়াঙ্গন উজ্জীবিত করার মাধ্যমে এই এলাকার তরুণরা এখন খেলাধুলায় ব্যস্ত সময় পার করছে। আমি বিশ্বাস করি এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে মাজদিয়া থেকেই ভালো খেলোয়াড় তৈরি হয়ে দেশের সর্বোচ্চ ঈশ্বরদী নাম উজ্জ্বল করবে।
আরও পড়ুন :