সোমবার , ৬ জুন ২০২২ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড মজুত ও সংরক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
জুন ৬, ২০২২ ৫:০৮ অপরাহ্ণ
হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড মজুত ও সংরক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন

জসীম উদ্দীন : বাংলাদেশে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড (H2O2) উৎপাদনে বৈধ কারখানা রয়েছে ছয়টি। এসব কারখানায় উৎপাদিত পণ্য দেশে ব্যবহারের পাশাপাশি রপ্তানিও হয়। রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দেয় সরকার। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের কারণে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের পর এ রাসায়নিকের উৎপাদন, মজুত ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

কেমিক্যাল, বায়োলজিক্যাল, রেডিওলজিক্যাল অ্যান্ড নিউক্লিয়ার (সিবিআরএন) ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক্সপ্লোসিভ প্রি-কারসার হিসেবে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড বা কেমিক্যাল কম্পাউন্ডগুলো যে ব্যবহার হতে পারে, এটা অনেক ব্যবসায়ীর অজানা। ব্যবসায়ীদের অজ্ঞতা বা অসতর্কতা কিংবা নিরাপদ সংরক্ষণের গুরুত্বহীনতা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। কেমিক্যাল ব্যবসায় জড়িতদের অসততা, অসতর্কতা ও অযোগ্যতা একটি বুবি ট্র‍্যাপ (গোপন বোমা) হিসেবে কাজ করে। যার বড় উদাহরণ সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণ। এ বিষয়ে এখনই সতর্কতা ও নিরাপদ মজুতের পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।


এক্সপ্লোসিভ প্রি-কারসার হিসেবে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড বা কেমিক্যাল কম্পাউন্ডগুলো যে ব্যবহার হতে পারে, এটা অনেক ব্যবসায়ীর অজানা। ব্যবসায়ীদের অজ্ঞতা বা অসতর্কতা কিংবা নিরাপদ সংরক্ষণের গুরুত্বহীনতা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। কেমিক্যাল ব্যবসায় জড়িতদের অসততা, অসতর্কতা ও অযোগ্যতা একটি বুবি ট্র‍্যাপ (গোপন বোমা) হিসেবে কাজ করে। যার বড় উদাহরণ সীতাকুণ্ডের বিস্ফোরণ। এ বিষয়ে এখনই সতর্কতা ও নিরাপদ মজুতের পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি


বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড একটি রাসায়নিক, যা বস্ত্রসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহার হয়। যেসব দেশে বস্ত্র কারখানা বেশি, সেখানেই এ রাসায়নিক রপ্তানি হয়। ইপিবির তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রপ্তানি করেছে ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামে। মোট ১৪টি দেশে রাসায়নিকটি রপ্তানি হয়।

হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের রপ্তানি আয়ও দ্রুত বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে যে পরিমাণ রপ্তানি হয়েছে, তা আগের অর্থবছরের পুরো সময়ের চেয়ে ২৩ শতাংশ বেশি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের পুরো সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) ১০ মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে তিন গুণ।

সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের পর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা নীল ড্রাম। ধারণ করা হচ্ছে এসব ড্রামে ভর্তি ছিল হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড / ছবি- সংগৃহীত


সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপোতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রাসায়নিকের উপস্থিতির কারণে বড় বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে মনে করছে ফায়ার সার্ভিস। সেখানকার অগ্নিনির্বাপণে কাজ করছে সেনাবাহিনীও। ইতোমধ্যে ডিপোতে থাকা চারটি কনটেইনারে রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে সেনাবাহিনী। যে কারণে আগুন নির্বাপণে বেগ পেতে হচ্ছে। এখনও ধোঁয়া উড়ছে। কনটেইনারগুলো ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বিশেষ পদ্ধতিতে অপসারণের চেষ্টা করছেন।

হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের রপ্তানি আয়ও দ্রুত বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে যে পরিমাণ রপ্তানি হয়েছে, তা আগের অর্থবছরের পুরো সময়ের চেয়ে ২৩ শতাংশ বেশি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের পুরো সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে তিন গুণ

হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড একটি রাসায়নিক যৌগ, যার সংকেত H2O2। বিশুদ্ধ অবস্থায় এটি বর্ণহীন তরল। হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডকে অক্সিডাইজিং এজেন্ট হিসেবে দেখা হয়। সাধারণভাবে একে বলা যায় ব্লিচিং এজেন্ট।
সরাসরি হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ব্যবহার বিপজ্জনক। নিরাপত্তাজনিত কারণে সব সময় এর জলীয় দ্রবণ পরিমিত পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, রাসায়নিক সংরক্ষণের ম্যাটারিয়াল সেইফটি ডেটশিট অনুযায়ী হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রাখতে হবে গ্লাস, স্টেইনলেস স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম অথবা প্লাস্টিকের কনটেইনারে। অন্য কোনো ধাতুর সংস্পর্শ পেলে এটা বিক্রিয়া করে।

তিনি বলেন, উচ্চ তাপে এটা বিস্ফোরকের ন্যায় আচরণ করতে পারে। এটা দাহ্য পদার্থ না হলেও অক্সিডাইজিং এজেন্ট। অর্থাৎ এটা অক্সিডাইজার হিসেবে কাজ করে। তার মানে হলো, আগুন লাগলে তার আশেপাশে কোনো অক্সিডাইজিং এজেন্ট থাকলে সেটা আগুনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। পর্যাপ্ত তাপ ও জ্বালানি পেলে আগুনের তীব্রতা বাড়ে এবং এ তীব্রতায় বিস্ফোরণও ঘটতে পারে।


উচ্চ তাপে এটা বিস্ফোরকের ন্যায় আচরণ করতে পারে। এটা দাহ্য পদার্থ না হলেও অক্সিডাইজিং এজেন্ট। অর্থাৎ এটা অক্সিডাইজার হিসেবে কাজ করে। তার মানে হলো আগুন লাগলে তার আশেপাশে কোনো অক্সিডাইজিং এজেন্ট থাকলে সেটা আগুনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। পর্যাপ্ত তাপ ও জ্বালানি পেলে আগুনের তীব্রতা বাড়ে এবং এ তীব্রতায় বিস্ফোরণও ঘটতে পারে

বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন


পানির সংস্পর্শে এলেও বিস্ফোরক আচরণ করতে পারে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড। এটা যেহেতু রাসায়নিক যৌগ, আগুন লাগলে পানি দিয়ে তা নেভানো যায় না। এ ধরনের আগুন নেভাতে হয় অন্য কৌশলে। ফগ সিস্টেম বা ফোম বা ড্রাই পাউডার জাতীয় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে এর আগুন নেভাতে হয়।

ঢাকা কলেজের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আসলাম হোসেন বলেন, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড নিজে আগুন সৃষ্টি করতে না পারলেও এটা অক্সিডাইজার হিসেবে কাজ করে। যার মানে হলো, অক্সিজেন ছাড়াই আগুন জ্বালাতে পারে এ রাসায়নিক পদার্থ। এ কারণে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের অক্সিজেন আগুনের তীব্রতা বাড়ায় এবং পর্যাপ্ত জ্বালানি ও তাপ থাকলে আগুন জ্বলার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অর্থাৎ হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড আগুন জ্বলার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতেও আগুন দীর্ঘক্ষণ জ্বলতে পারে অথবা বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।


অক্সিজেন ছাড়াই আগুন জ্বালাতে পারে এ রাসায়নিক পদার্থ। এ কারণে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের অক্সিজেন আগুনের তীব্রতা বাড়ায় এবং পর্যাপ্ত জ্বালানি ও তাপ থাকলে আগুন জ্বলার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অর্থাৎ হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড আগুন জ্বলার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতেও আগুন দীর্ঘক্ষণ জ্বলতে পারে অথবা বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে
ঢাকা কলেজের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আসলাম হোসেন


অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) কেমিক্যাল, বায়োলজিক্যাল, রেডিওলজিক্যাল অ্যান্ড নিউক্লিয়ার (সিবিআরএন) নামে নতুন একটি টিম যুক্ত হয়েছে। এর কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সিটিটিসি’র বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটে দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সুপার সানোয়ার হোসেন।
তিনি নিজের ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের মজুত, নিরাপত্তা ও সংরক্ষণে উদাসীনতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি লেখেন, নীল ড্রামগুলো অনেক দিন ধরেই আমাদের যন্ত্রণার কারণ। বিগত কয়েক বছরে বেশকিছু জঙ্গি আস্তানা থেকে এরকম অসংখ্য নীল ড্রাম উদ্ধার হয়েছে। এ নীল ড্রামের হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড দিয়ে জঙ্গিরা বিস্ফোরক বানাতো। অথচ, এগুলো নানা ধরনের শিল্পে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিছু অসাধু সরবরাহকারী ও শিল্পসংশ্লিষ্ট অসাধু ব্যক্তি এরকম বেশকিছু কেমিক্যাল (যেমন- অ্যাসিটোন, এইচএমডিটি, হাইড্রোক্লোরিক এসিড, অ্যালুমিনিয়াম পাউডার প্রভৃতি) ব্যাকডোরে সন্ত্রাসীদের কাছে বিক্রি করে। এ অপরাধে ইতোমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে এটা ঠিক, এক্সপ্লোসিভ প্রি-কারসার হিসেবে যে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড বা উল্লেখিত কেমিক্যাল কম্পাউন্ডগুলো ব্যবহৃত হতে পারে, এটা অনেক ব্যবসায়ীর অজানা। তেমনি অনেকেই অজ্ঞ কিংবা অসতর্ক ছিল এগুলোর নিরাপদ সংরক্ষণের গুরুত্ব নিয়ে। তবে তাদের এ অজ্ঞতা কিংবা অসতর্কতা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।

অগ্নিনির্বাপণ করতে করতে ক্লান্ত এক ফায়ার ফাইটার। বিশ্রামরত অবস্থায় হয়তো প্রিয়জনের সঙ্গে মোবাইলে কথা সেরে নিচ্ছেন তিনি / ছবি- সংগৃহীত


এ বিষয়ে সোমবার (৬ জুন) যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কেমিক্যাল ব্যবসা ও সংশ্লিষ্ট শিল্পের সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যক্তির অসততা, অসতর্কতা ও অযোগ্যতা হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড একটি বুবি ট্র‍্যাপ (গোপন বোমা) হয়ে আমাদের মাঝে বিরাজ করছে। এটা বিস্ফোরিত হয়ে আমাদের জানিয়ে দেয় যে আমরা কতটা অসতর্কতা, অসাধুতা আর অদক্ষতা নিয়ে নানা রকম পেশায় নিয়োজিত আছি।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী জঙ্গিবাদে জড়িতরা টিএটিপি এক্সপ্লোসিভ তৈরিতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড, অ্যাসিটোন ব্যবহার করেন। করোনার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের চার/পাঁচটা জঙ্গি আস্তানায় হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ও অ্যাসিটোন পেয়েছিলাম। এরপর আমরা বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করি। জিজ্ঞাসাবাদ করি। অনেক সময় সোর্স পাওয়া যায় না। এটা নিয়ে এখনও আমরা কাজ করছি।


বিশ্বব্যাপী জঙ্গিবাদে জড়িতরা টিএটিপি এক্সপ্লোসিভ তৈরিতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড, অ্যাসিটোন ব্যবহার করেন। করোনার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের চার/পাঁচটা জঙ্গি আস্তানায় হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ও অ্যাসিটোন পেয়েছিলাম। এরপর আমরা বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করি। জিজ্ঞাসাবাদ করি। অনেক সময় সোর্স পাওয়া যায় না। এটা নিয়ে এখনও আমরা কাজ করছি
সানোয়ার হোসেন, পুলিশ সুপার, এটিইউ


জঙ্গিরা হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড, অ্যাসিটোনের মতো ঝুঁকিপূর্ণ কেমিক্যাল ব্যবহারে বিস্ফোরক তৈরি করছে— এটা জানার পর আমরা এসব কেমিক্যাল মজুত, সুরক্ষা ও নজরদারি সচেতনতায় বিভিন্ন সময় কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসেছি। বৈধতা বা অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা ব্যবসায়ীর কাছে এসব বিক্রি যাতে না করা হয় সেজন্য আমরা বৈঠক করেছি। আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের এসব জানিয়েছি।

হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের মতো কেমিক্যাল বিস্ফোরণের পর যে পানি দিয়ে নেভানো যায় না, এটা প্রাথমিকভাবে না জেনেই ঝুঁকি তৈরি করা কতটা যৌক্তিক ছিল— জানতে চাইলে তিনি বলেন, নরমালি কেউই ওখানে সুইসাইড (আত্মহত্যা) করতে যাননি। আমার মনে হয় ফায়ার সার্ভিসের ফাস্ট রেসপন্ডিং টিম হয়তো মিস ইনফরমেশনের শিকার বা সঠিক তথ্য তারা অবগত হননি। ফায়ার ফাইটাররা এসব জানেন, তারা প্রাইমারি এসব মাথায় নিয়েই রেসকিউ বা নির্বাপণ কাজে যান। এ ধরনের এক্সপ্লোরেশনের ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই এখন ফায়ার সার্ভিস আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করবে।

হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড কিন্তু সরাসরি দাহ্য পদার্থ নয়। এটা প্রিপায়ার্ড সাজেস্ট। অন্য কোনো এক্সপ্লোশনের ঘটনা ঘটলে তখন এটা বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। হয়তো এমনই ঘটেছে। তদন্তে নিশ্চয়ই এসব উঠে আসবে— বলেন পুলিশ সুপার সানোয়ার হোসেন।

তার পরামর্শ হলো, প্রত্যেকটা কেমিক্যালের ধর্ম জেনে, এর মজুত ও সংরক্ষণে বাড়তি সতর্কতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা উচিত। শুরু থেকেই আমরা এ বিষয়ে বলে আসছি।


নরমালি কেউই ওখানে সুইসাইড (আত্মহত্যা) করতে যাননি। আমার মনে হয় ফায়ার সার্ভিসের ফাস্ট রেসপন্ডিং টিম হয়তো মিস ইনফরমেশনের শিকার বা সঠিক তথ্য তারা অবগত হননি। ফায়ার ফাইটাররা এসব জানেন, তারা প্রাইমারি এসব মাথায় নিয়েই রেসকিউ বা নির্বাপণ কাজে যান। এ ধরনের এক্সপ্লোরেশনের ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই এখন ফায়ার সার্ভিস আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করবে
সানোয়ার হোসেন, পুলিশ সুপার, এটিইউ


কেমিক্যালের মজুত ও সংরক্ষণের বিষয়ে বিস্ফোরক পরিদপ্তরের উপপ্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক ড. মো. আব্দুল হান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তিনি মিটিংয়ে আছেন, ‘ব্যস্ত আছি’ বলে এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে শনিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় প্রথমে ৪৯ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়। পরে ‘ভুল শিকার’ করে মৃতের সংখ্যা ৪১-এ নামিয়ে আনে প্রশাসন। আহত হন দেড় শতাধিক মানুষ। হতাহতদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও রয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনও আগুন নির্বাপণ করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসসহ সেনাবাহিনীর বিশেষ টিম।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিপোর একটি কনটেইনারে আগুন লাগার পর আশেপাশে থাকা শেড ও কনটেইনারে থাকা হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ভর্তি ড্রামে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।

এদিকে, সীতাকুণ্ডে ভয়াবহ কেমিক্যাল বিস্ফোরণের ঘটনায় চট্টগ্রাম বন্দরে চার বছর ধরে পড়ে থাকা ৬০৯ ড্রাম হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড স্পট নিলামে বিক্রি করে দিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, চার বছর আগে গাজীপুরের কেয়া নিট কম্পোজিট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান তুরস্ক থেকে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের চালানটি আমদানি করে। বন্দরে আসার পর প্রতিষ্ঠানটি সেগুলো খালাস করেনি। এরপর থেকে দুই কনটেইনারভর্তি হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড সেখানে পড়ে ছিল।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ