প্রতারণা ব্যবসায় চালকল মালিকেরা
ঈশ্বরদীতে চাল নিয়ে প্রতারণায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। বস্তার উপরের লেখার সঙ্গে ভিতরে থাকা চালের কোন মিল নেই। এমনিতে চালের বাজার উর্ধ্বমুখী। তার উপর কোন কোন চালকল মালিক এর এই অভিনব প্রতারণা অসহায় হয়ে পড়েছে সাধারণ ভোক্তারা। নষ্ট হচ্ছে উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় চালের মোকাম ঈশ্বরদীর জয়নগরের সুনাম।
কৃষি কর্মকর্তা, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা, চালকল মালিক সমিতি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, এটা সম্পূর্ণ বিবেক বর্জিত কাজ।
ঈশ্বরদী বাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্লাস্টিকের বস্তায় মোড়ানো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাল বিক্রি হচ্ছে। বস্তার উপরে চালের নাম, পরিমাণ, প্রতিষ্ঠান নাম, ঠিকানা লেখা রয়েছে।
জানা যায়, ঈশ্বরদীর জয়নগর মোকাম, দাশুড়িয়া ও মুলাডুলির কিছু অসাধু চালকল মালিক অতিরিক্ত মুনাফার লোভে বস্তার গায়ে অন্য প্রতিষ্ঠান যেমন কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী মিনিকেট চাল, বাজারের সেরা স্পেশাল, দিনাজপুরের দেশে সেরা চাল লিখে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছে।
কোন কোন প্রতিষ্ঠান ব্রি-২৮ ধানের চাল ছেঁটে চিকন ও পালিশ করে মিনিকেট, নাজিরশাইল, বাসমতি, জিরাশাইল চাল নাম দিয়ে বিক্রি করছে।
সম্প্রতি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঈশ্বরদী উপজেলার পাঁচটি চালের মিলে অভিযানে জরিমানা করে।
চালকল মালিকদের নিয়ে প্রতারণায় ঈশ্বরদী বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বাজারের তিন-চারজন খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, মিল মালিকরা যদি বস্তার উপরে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের নাম না লেখে অন্য প্রতিষ্ঠানের নাম লিখে সরবরাহ করে তাহলে আমরা কি করতে পারি?
তারা জানায়, এসব নামকরা প্রতিষ্ঠানের চাল বিক্রি করার পর ক্রেতাদের অনেকেই অভিযোগ করে বলেন যে, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ভাত ভালো থাকে না, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, খেতে ভালো লাগে না ইত্যাদি। এই প্রতারণা কাজ যারা করছে তারা ঠিক করছেন না। এদের বিরুদ্ধে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
ঈশ্বরদী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ( অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ) শফিকুল ইসলাম বলেন, এক সময় ঈশ্বরদীর জয়নগর চালের মোকাম হিসেবে সুখ্যাতি রয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ৪/৫টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ও অনিয়ম না করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।