ঈশ্বরদীতে বোরো ধানের উচ্চ ফলনেও কৃষকের মুখ হাসি নেই। ধান কাটার ভরা মৌসুমে চড়া মজুরি দিয়েও মিলছে না শ্রমিক। বৃষ্টি ও বাতাসে অনেক জমির ধান নুয়ে পড়েছে। শ্রমিকের অভাবে ধান কেটে সময়মতো ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিন ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ বাতাসে দোল খাচ্ছে সোনালি ধান। আগাম জাতের ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ধান ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কিষান-কিষানিরা। অনেকেই মাঠেই ধান শুকিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার ধান সিদ্ধ ও গরুর খাবারের জন্য কাঁচা ধানের খড় শুকাচ্ছেন।
উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের বেতবাড়িয়া গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন হোসেন বলেন, ‘ধানের আবাদ করে এবার বিপদে পড়েছি। টাকা না থাকায় মজুরি দিয়ে শ্রমিক নিতে পারছি না। শ্রমিককে ৮০০-৯০০ টাকা দিতে হয়। তারা সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কাজ করেন। এরপর কাজ করলে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়।’
এবার ৮ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছেন আলাউদ্দিন হোসেন। সার, বীজ, কীটনাশক ও দিনমজুর বাবদ প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ধান হবে ২২ থেকে ২৫ মণ। বাজারে কাঁচা নতুন ধান প্রতি মণ ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, ধানের আবাদ করে লাভ করার কোনো উপায় নেই।
বাঘআচলা গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ধানের আবাদ ভালো হয়েছে কিন্তু এতে কৃষকদের আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। সার, কীটনাশকের অতিরিক্ত দামের পাশাপাশি এবার শ্রমিকের চড়া মজুরির কারণে শেষ পর্যন্ত আর লাভের মুখ দেখবে না কৃষক।
তিনি আরও বলেন, ‘এবার মাঠে আগের চেয়ে ধানের আবাদ কমেছে। এভাবে ধানে লোকসান হতে থাকলে আবাদ আরও কমে যাবে।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জানান, ঈশ্বরদীতে এবার ২৭০৬ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি অফিস সময়মতো নানান পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের পাশে রয়েছেন।