রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে (আরএনপিপি) রসাটমের প্রকৌশল শাখার অধীনে বিভিন্ন সাব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিকদের (করোনা ভাইরাস-১৯) রাশিয়ার স্পুটনিক টিকা প্রদান শুরু করা হয়েছে।
রোসাটমের এদেশীয় জনসংযোগ বিভাগ ও এটমস্ত্রয়েক্সপোর্ট সুত্র জানায়, সম্প্রতি এটমস্ত্রয়েক্সপোর্ট (এএসই) তার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৫০০ ডোজ স্পুটনিক টিকা ক্রয় করে রূপপুর প্রকল্প সাইটে পাঠিয়েছে। এরপর বাংলাদেশী চিকিৎসকদের মাধ্যমে প্রকল্পের বিভিন্ন কোম্পানিতে কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীদের এই টিকা প্রদান করা। এর আগে এক হাজার ৭০০ জন বাংলাদেশী শ্রমিককে এই টিকা প্রদান করা হয়েছিলো।
সুত্র মতে, স্থানীয়ভাবে আরো ১০ হাজার ডোজ টিকা সংগ্রহ এবং রূপপুর এনপিপি সাইটের কাছাকাছি কোন স্থানে টিকা প্রদান সেন্টার স্থাপন করে টিকা প্রদানের জন্য ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এর ফলে প্রকল্পে কর্মরত দেশীয় শ্রমিকদের মধ্যে নুন্যতম ৮০ শতাংশ মাত্রার ‘হার্ড ইমিউনিটি’ অর্জন সম্ভব হবে।
একই সঙ্গে প্রকল্পে কর্মরত রুশ এবং সিআইএস ভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের বুস্টার ডোজ প্রদানের কাজও এগিয়ে চলছে। এর জন্য অতিরিক্ত আরো ৭৫০ ডোজ টিকা আনা হয়েছে। এই টিকা প্রদানের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল বাংলাদেশে অবস্থান করছেন।
এটমস্ত্রয়েক্সপোর্ট (এএসই) ভাইস-প্রেসিডেন্ট এবং রূপপুর এনপিপি নির্মান প্রকল্প পরিচালক আলেক্সি দেইরি জানান, প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদান এবং প্রকল্পের কাজ নিরবিচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে নিতে এই পদক্ষেপগুলো জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরো জানান, “রসাটমের আন্তর্জাতিক প্রকল্পগুলোতে প্রথম দিকেই (৬ মাসেরও অধিক সময় পূর্বে) টিকাদান কর্মসূচী শুরু করা হয়। সেই কর্মসূচিতে বাংলাদেশকেও অন্তভূক্ত করা হয়েছে। বুস্টার ডোজ প্রদানের ক্ষেত্রেও প্রথম সারিতে থেকে বাংলাদেশীদেরও টিকা গ্রহনের সুযোগ করে দিতে পারছি।
তিনি দাবী করে জানান, আমাদের পেশাগত ও সামাজিক দায়বদ্ধতা সম্পর্কে আমরা সম্পূনরুপে সচেতন। প্রকল্পে কর্মরতদের টিকা প্রদানের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মনে করি, প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে টিকাদান অন্যতম ভূমিকা পালন করবে।
উল্লেখ্য, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিভিন্ন কোম্পানিতে বাংলাদেশী শ্রমিক রয়েছে প্রায় ২৬ হাজার। আর রুশসহ বিদেশী নাগরিক রয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। বিদেশীদের পাশাপাশি ইতোমধ্যে এদেশীয় প্রায় ১২ হাজার শ্রমিকদের টিকা প্রদান করা হয়েছে। বাকি রয়েছে আরো ১৪ হাজার শ্রমিক।