পাবনার ঈশ্বরদীতে বীণা বেগম (৪৭) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার ( ৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত গভীর রাতে ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের মসজিদ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহত গৃহবধূ বীণা বেগমের সাবেক স্বামী ওমর আলী কাজী (৫৫) ও তার প্রথম স্ত্রী মোছা. রাজিয়া খাতুন (৫০)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর রাতেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার বিকেলে গ্রেপ্তারদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
নিহত বীণা বেগম সাহাপুর মসজিদ মোড় এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের মেয়ে।
পুলিশ, এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা জানান, পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলার জনৈক এমদাদুল হকের সঙ্গে বীণা বেগমের প্রথম বিয়ে হয়। সেখানে বীণার ১টি ছেলে ও ১টি মেয়ে রয়েছে। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় কয়েক বছর আগে উভয়ের ছাড়াছাড়ি হলে বীণা সাহাপুরে বাবার বাড়ির পাশেই বাড়ি করে বসবাস শুরু করেন। এরইমধ্যে বছর খানেক আগে একই এলাকার ওমর আলী কাজীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করে দ্বিতীয় বিয়ে হয় বীণার। ওমরের এটি তৃতীয় বিয়ে। তার এক স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হলেও ঘরে আরেক স্ত্রী রয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি বীণাকে তৃতীয় বিয়ে করেন। তবে বিয়ের পর বীণা নিজ বাড়িতেই থাকতেন। ওমর ওই বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন।
এসব নিয়ে সংসারে তীব্র অশান্তির সৃষ্টি হলে ওমর আলী কাজী বীণাকে তালাক দেন। তালাকের নোটিশ পেয়ে বীণা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বিচার চেয়ে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ওমর আলীর বাড়িতে গিয়ে তালাক দেওয়ার কারণ জানতে চান। এ সময় সেখানে ঝগড়াঝাঁটি শুরু হয়। এর এক পর্যায়ে বীণা বেগমকে তার সাবেক স্বামী ওমর আলী কাজী ও তার প্রথম স্ত্রী রাজিয়া বেগম লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করে খড়ির ঘরে লাশ লুকিয়ে রাখে। পরবর্তীতে রাতে নিহত বীণার আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীরা হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ঈশ্বরদী থানা পুলিশে খবর দেয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে গভীর রাতে লাশ উদ্ধার করে এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক স্বামী ওমর আলী কাজী ও প্রথম স্ত্রী মোছা. রাজিয়া খাতুনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানায় ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ অরবিন্দ সরকার জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত বীণা বেগমের মেয়ে ইসরাত জাহান বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছে। সেই মামলাতেই আসামিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাবনা আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।