অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ১৪টি প্রতিষ্ঠান ও ২৯ ব্যক্তির তালিকা প্রস্তুত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তালিকায় বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসের, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার পরিবারের পাঁচ সদস্যের নামও রয়েছে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রোববার এ তালিকা দাখিল করা হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শনিবার দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, দুদক অর্থপাচারে সঙ্গে জড়িতদের একটি তালিকা চূড়ান্ত করেছে, যেটি রোববার হাইকোর্টে দাখিল করা হবে।
দুদকের তালিকায় রয়েছেন মুসা বিন শমসের, আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার ছেলে তাবিথ আউয়াল
তালিকায় উল্লিখিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের প্রমাণ মিলেছে কি-না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের নাম সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়ে মূলত যাদের বিরুদ্ধে দুদক এখন তদন্ত করছে, সেই তথ্য তুলে ধরা হবে।
তালিকায় থাকা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো হলো মাল্টিমোড লিমিটেডের আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার স্ত্রী নাসরিন ফাতেমা আউয়াল এবং তাদের সন্তান তাবিথ আউয়াল, তাফসির আউয়াল ও তাজওয়ার মো. আউয়াল, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মোগল ফরিদা ওয়াই, টেপাসের শহিদ উল্লাহ, ঢাকার বনানীর চৌধুরী ফয়সাল, বারিধারার আহমাদ সামির, ব্রামার অ্যান্ড পার্টনার্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড, ভেনাস ওভারসিজ কোং-য়ের মুসা বিন শমসের, ডাইনামিক এনার্জির ফজলে এলাহী, ইন্ট্রিপিড গ্রুপের কেএইচ আসাদুল ইসলাম, খালেদা শিপিং কোম্পানির জুলফিকার আহমেদ, বেঙ্গল শিপিং লাইনসের তাজুল সলাম তাজুল, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের মোহাম্মদ মালেক, ওসান আইস শিপিং কোম্পানির ইমরান রহমান, শামস শিপিং লিমিটিডের মোহাম্মদ এ আউয়াল, ঢাকার উত্তরার এরিক জনসন আনড্রেস উইলসন, ইন্ট্রিডিপ গ্রুপের ফারহান ইয়াকুবুর রহমান, জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের তাজুল ইসলাম, পদ্মা টেক্সটাইলের আমানুল্লাহ চাগলা, রাশিয়ার নিউটেকনোলজি ইনভেস্টমেন্টের মোহাম্মদ আতিকুজ্জামান, মাল্টার মোহাম্মদ রেজাউল হক, নারায়ণগঞ্জের জেমিকো ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মোহাম্মদ কামাল ভূঁইয়া, তুহিন-সুমন, সেলকন শিপিং কোম্পানির মাহতাবা রহমান, নারায়ণগঞ্জের জেমিকো ট্রেড ইন্টান্যাশনালের ফারুক পালওয়ান, আয়ারল্যান্ডের গ্লোবাল এডুকেশন সিস্টেমের মাহমুদ হোসাইন ও ঢাকা ইপিজেডের সাউদার্ন আইস শিপিং কোম্পানির শাহনাজ হুদা রাজ্জাক।
বিদেশি ব্যাংক, বিশেষত সুইস ব্যাংকে পাচার করা ‘বিপুল পরিমাণ’ অর্থ উদ্ধারের যথাযথ পদক্ষেপের নির্দেশনা চেয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান ও সুবীর নন্দী দাস। পরে ওই রিটের শুনানি নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় এবার হাইকোর্টে অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তালিকা দিচ্ছে দুদক।