বৃহস্পতিবার , ১৪ জুলাই ২০২২ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. তারুণ্য
  14. ধর্ম
  15. নির্বাচন

ঈশ্বরদীর কাঁঠালে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষি

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
জুলাই ১৪, ২০২২ ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ
ঈশ্বরদীর কাঁঠালে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষি

⇒উপজেলার ১৫৮ হেক্টর জমিতে এ বছর কাঁঠালের আবাদ

⇒রাজধানীসহ সারাদেশে সরবরাহ হচ্ছে

⇒দাম বেশি পাওয়ায় খুশি কৃষক

ঈশ্বরদীর গ্রামীণ হাটবাজার জমজমাট হয়ে উঠেছে সুস্বাদু ফল কাঁঠালে। উপজেলার আওতাপাড়া, শিমুলতলা, বড়ইচারা, দাশুড়িয়ার হাটবাজারে প্রতিদিন প্রচুর কাঁঠাল কেনাবেচা হচ্ছে। বিশেষ করে উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ঈশ্বরদী-কুষ্টিয়া সড়ক সংলগ্ন জয়নগর বোর্ডঘর পাইকারি কাঁঠাল ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। এখানে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে কাঁঠাল কেনাবেচা।

পাইকার ব্যবসায়ীরা শত শত কাঁঠাল কিনে তা ট্রাকে বোঝাই করে নিজ নিজ এলাকায় নিয়ে যাচ্ছেন বিক্রির জন্য। ঢাকা, খুলনা, মোংলা, যশোর, বরিশাল, পটুয়াখালী, গলাচিপা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুয়াকাটাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা কাঁঠাল কিনতে এই জয়নগর বোর্ডঘর এলাকায় আসছেন।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পৌর এলাকাসহ উপজেলার সাত ইউনিয়নেই প্রচুর কাঁঠাল গাছ রয়েছে। কাঁঠাল গাছের বাগানো রয়েছে কোনো কোনো কৃষকের। ঈশ্বরদীতে কাঁঠাল গাছের সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। উপজেলার সাহাপুর ও সলিমপুর ইউনিয়নে কাঁঠালের আবাদ সবচেয়ে বেশি। বাগান ও বসতভিটা এলাকার জমি নিয়ে উপজেলার ১৫৮ হেক্টর জমিতে এ বছর কাঁঠালের আবাদ হয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ঈশ্বরদীর কাঁঠাল দেশজুড়ে সমাদৃত। এখানকার কাঁঠাল মিষ্টি ও সুস্বাদু। এখানে উৎপাদিত কাঁঠালের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের জয়নগর বোর্ডঘর। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় উৎপন্ন হওয়া কাঁঠাল বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয় এই বোর্ডঘরের বিস্তৃত খোলা জায়গায়। উপজেলার বাইরে পাবনা, আটঘরিয়ার টেবুনিয়া, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকেও এ বোর্ডঘরে কাঁঠাল বিক্রি করতে আসেন কৃষকরা। বোর্ডঘর ছাড়াও উপজেলার সাহাপুরের আওতাপাড়া হাট, বড়ইচারা, দাশুড়িয়া, মুলাডুলিতে কাঁঠাল কেনাবেচা হয়ে থাকে।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকারদের কাঁঠাল কিনে দেয়ার জন্য জয়নগর বোর্ডঘর এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি আড়ত। সড়কের পশ্চিম পাশে বিশাল খোলা জায়গায় ট্রাক, ভ্যান, পিকআপ, রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশায় কাঁঠাল নিয়ে আসা হয় এখানে। অস্থায়ী আড়তে কাঁঠাল কিনে জড়ো করে রাখা হয় পাইকারদের জন্য। টানা এক মাস সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে কাঁঠাল কেনাবেচা হয়ে থাকে। ছোট, মাঝারি থেকে বড় ভ্যানে কাঁঠাল বেঁধে বোর্ডঘরে এনেছেন কৃষকরা, খুচরা ব্যবসায়ীরা। আবার কেউ এনেছেন নছিমনে করে।

সলিমপুরের আজগর আলী নামে এক কৃষক ভ্যানে করে এনে ছোট-বড় সাইজের ১৩টি কাঁঠাল ৯০০ টাকায় বিক্রি করেছেন আড়তদারের কাছে। খুলনার মজিবর রহমান নামে এক ফল ব্যবসায়ী জানান, এখান থেকে একদিনে ২ হাজারের বেশি কাঁঠাল কেনা হয় তার। পরে তিনি খুলনায় নিয়ে বেশি দামে বিক্রি করবেন বলে জানান। খুলনায় কাঁঠালের দাম বেশি, এখান থেকে কাঁঠাল কিনে বিক্রি করলে তার লাভ ভালোই বলে তিনি জানান।

আড়তদার আবুল আলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ২০ বছর ধরে জয়নগরের এই বোর্ডঘর মৌসুমের কাঁঠাল বিক্রির জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কাঁঠালের মৌসুমে প্রতিদিন হাজার হাজার কাঁঠাল বিক্রি হয়। জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত এক মাস এই বোর্ডঘর এলাকায় কাঁঠাল ব্যবসা বেচাকেনা হয়ে থাকে। প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত জায়গাজুড়ে কাঁচা-পাকা কাঁঠাল সাজিয়ে রাখে খুচরা বিক্রেতা ও আড়তদাররা। আকার ভেদে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত প্রতিটি কাঁঠাল বিক্রি হয়ে থাকে। এখান থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার ২ থেকে ৩ ট্রাক কাঁঠাল পাইকাররা কিনে দেশের অন্য জায়গায় বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জানান, পৌর এলাকা ও উপজেলার সাত ইউনিয়নের বিভিন্ন বাগানের জমি নিয়ে ঈশ্বরদীতে ১৫৮ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল উৎপন্ন হয়ে থাকে। এই বছর ৩ হাজার ৫৫ মেট্রিক টন কাঁঠাল উৎপন্নের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ টাকা।

তিনি আরো বলেন, ঈশ্বরদীর মাটি কাঁঠাল গাছ দ্রুত বেড়ে উঠা ও কাঁঠাল উৎপন্নের জন্য উপযোগী। দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় ঈশ্বরদীর কাঁঠাল অত্যন্ত সুস্বাদু। এখানকার কৃষকরা কাঁঠাল বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

আপনার জন্য নির্বাচিত
error: Content is protected !!