ঈশ্বরদীতে দিনে দুপুরে টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে তিন লক্ষ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করার চেষ্টায় রাজু আহম্মেদ নামে এক যুবক কে গ্রেফতার করেছে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ঐ যুবক ঈশ্বরদী বাজারের আমব্রেলা শোরুমের ম্যানেজার ও উপজেলার শেরশাহ রোডের কাঠালতলায় এলাকার ভাড়াটিয়া।
মলম পাটির খপ্পরে পরে তিন লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে গত কাল (১৩ জুন) ঐ যুবক ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন।
বিষয় টি নিয়ে পুরো শহরের চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষনিক ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার সহ পুলিশের একটি টিম হাসপাতালে ছুটে যান। এরপর ঐ যুবকের দেওয়া তথ্য সন্দেহজনক মনে হওয়ায় ঘটনার তদন্তে নামে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আটককৃত ঐ যুবক যে বাসায় ভাড়া থাকতো সেখানে আদুরী নামে একজন কাজের মহিলা ছিল। কাজের মহিলা বিভিন্ন বাসায় কাজ করে যে টাকা আয় করতেন তার একটি অংশ রাজু কে দিয়ে ব্যাংকে রাখত। গত মাসের ১৯ তারিখ রাজু, ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে আদুরীর সম্মতিতে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা উত্তোলন করে এবং আদুরী আরও ২০ হাজার টাকা রাজু কে দেয় এবং বলে তিনলক্ষ টাকা আদুরীর নামে ন্যাশনাল ব্যাংকে এফডিআর করতে। অথচ ব্যাংকে টাকা জমা না করে রাজু আদুরীকে জানায় টাকা গুলো এফডিআর করা হয়েছে।
এরপর গত সপ্তাহে আদুরী বেগম, রাজুকে তার এফডিআর এর তিন লাখ টাকা তুলে দিতে বলে একটি চেক দেয়। রাজু সেই চেক দিয়ে ১৩ই জুন আদুরীর এ্যাকাউন্ট থেকে ৫ হাজার টাকা উত্তোলন করে।
এরপর বেলা অনুমান ১১ টার দিকে ব্যাংক থেকে তিনলাখ টাকা তুলে সাদা ব্যাগে নিয়ে শেরশাহ রোড আদুরীর বাসায় হেটে যাওয়ার পথে পিছন থেকে একজন মাথার পিছনে মলম জাতীয় কিছু দিয়ে অচেতন করে তার নিকট থেকে তিনলাখ টাকা নিয়ে যায় বলে প্রচার করে এবং ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে ভর্তি হয়।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তার আচরন ও কথা সন্দেহজনক মনে হওয়ায় পুলিশ ন্যাশনাল ব্যাংকে খোজ নিয়ে দেখে রাজু (১৩ জুন) সোমবার তিন লাখ টাকা উত্তোলন করে নি। এমন কি আদুরীর নামে যে তিন লাখ টাকার এফডিআর করার কথা ছিল সেটাও করে নি।সে আদুরীর নামে সোনালী ব্যাংকে দুই লাখ টাকার এফডিআর করার জন্য টাকা নিয়ে ১ লাখ টাকার এফডিআর করেছে। এভাবে সে আদুরী বেগমের ৪ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাত করে পরিকল্পিত ভাবে ছিনতাই এর ঘটনা বলে প্রচার করার চেষ্টা করেছিল।
তদন্তে এমন সত্যতা পেলে ভুক্তভোগী আদুরী বেগম ঈশ্বরদী থানায় বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করেন। তার দেয়া তথ্য মতে তিন লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে এবং বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ধৃত আসামী রাজুর বিরুদ্ধে ঈশ্বরদী থানার পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তাকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।