পাকশী রেলওয়ের অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংগুলো যেন মৃত্যুফাঁদ। যার বেশির ভাগ অবৈধ। এ জন্য রেলক্রসিংয়ের একটি বড় অংশই অরক্ষিত বলে জানা যায়। অরক্ষিত এসব রেলক্রসিংয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
খুলনা থেকে মৌচাক, ঈশ্বরদী থেকে চিলাহাটি, আব্দুলপুর থেকে রহনপুন, মাঝগ্রাম থেকে ঢালানচর, পোড়াদহ থেকে গোয়ালন্দ ঘাট, পাচুরিয়া থেকে ভাঙা, কালুখালি থেকে ভাটিয়াপাড়া এবং কাশিয়ানি থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত পাকশী বিভাগীয় রেলপথ। এসব রেলপথের মধ্যে ২২৩টি রেলক্রসিং রয়েছে। যার মধ্যে গেটম্যান রয়েছে মাত্র ৬০টিতে। অরক্ষিত রয়েছে ১৬৩টি। অরক্ষিত ১৬৩টি রেলক্রসিংয়ের মধ্যে পাকশী রেলওয়ে বিভাগ থেকে রেলগেট নির্মাণ করা হয়েছে ২২টি। বাকি ১৪১টি রেলগেটই অবৈধভাবে করা। স্থানীয়রা বলছেন, অরক্ষিত এসব রেলক্রসিংয়ে ঘটছে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা। নেই ট্রেন ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণের কর্মী, নেই সংকেত বাতি।
ঈশ্বরদীর পাকশী বিভাগীয় রেলপথের রেললাইনে গত দুই বছরে ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছে ২৫ জনের। ২০২০ থেকে ২০২২ এই দুই বছরে ২৩টি ট্রেন দুর্ঘটনার মধ্যে অরক্ষিত লেবেল ক্রসিংয়ে ঘটেছে ৮টি। এর মধ্যে রেলের এই বিভাগের অরক্ষিত রেলক্রসিং দিয়ে ট্রেন চলাচলের সময় কোনো বাধা না থাকার কারণে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে ৮ বার আর মুখোমুখি ট্রেন দুর্ঘটনা ও ইঞ্জিন বিকল হয়ে দুর্ঘটনায় পড়েছে দুই বার। অরক্ষিত রেলক্রসিং এর কারণে মানুষ অহরহ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগ, পশ্চিমাঞ্চলীয় রেল ও বিভিন্ন দপ্তরে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা যায়।
রেলপথে দুর্ঘটনা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা (এটিও) মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের বেশির ভাগই অবৈধভাবে করা। যাতায়াতের সুবিধার্থে স্থানীয়রা করেছে। অনুমোদন নিয়ে আমরা অরক্ষিত লেবেল ক্রসিংগুলো সংরক্ষিত করতে কাজ করছি।
পাকশী বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী (টেলিকম) সৌমিক শাওন কবীর জানান, লেবেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনা কমাতে পাকশী বিভাগীয় রেলের আওতায় ২২৮টি লেবেল ক্রসিং গেটম্যানকে পর্যায়ক্রমে মোবাইল দেয়া হচ্ছে। বিভাগীয় কন্ট্রোল রুম, স্টেশন মাস্টার ও রেলওয়ে কমকর্তাদের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রাখার জন্য এটি দেয়া হবে।