দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশের মতো পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে বইছে উৎসবমুখর পরিবেশ।
শনিবার থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে ২৩ জন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দলীয় মনোনয়ন ফর্ম কিনেছে।
এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা অনেক বেশি হলেও আলোচনায় আছেন ৫ থেকে ৬ জন।
গণসংযোগসহ সরকারের নানামুখী উন্নয়ন কর্মকান্ড সাধারণ মানুষের মাঝে পৌঁছে দিয়েছেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা সাধারণ মানুষের মাঝে সরকারের উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিতে উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ, অবস্থান কর্মসূচি, গণসংযোগ করছেন প্রতিদিন।
যে নামগুলা আলোচনায় উঠে আসছে বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ রেজাউল করিম লাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গালিবুর রহমান শরীফ, আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক উপকমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম লিটন, ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ মিন্টু।
এদিকে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে এবং আজ মঙ্গলবার থেকে দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করবেন। অপরদিকে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিবে কি নিবে না সেই সিদ্ধান্তে এখনো পৌঁছাতে না পারার কারণে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীদের দেখা যাচ্ছে না নির্বাচনী মাঠে। তবে মাঝেমধ্যে দলীয় কর্মসূচিগুলো পালন করতে দেখা যায় ঈশ্বরদীর বিএনপিকে।
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে টিভি চ্যানেলগুলোতে টকশো মতোই ঈশ্বরদীর চায়ের আড্ডাগুলো বিশেষ করে চায়ের দোকানে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। কেউ সরকারের পক্ষে কেউ সরকারের বিপক্ষে, তেমনি পাবনা-৪ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের নিয়ে চলছে যোগ বিয়োগের হিসাব।
সুপ্রিয় পাঠক, ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন চায়ের আড্ডার সাধারণ মানুষের কথোপকথনের মন্তব্যগুলো তুলে ধরা হলো :
ঈশ্বরদী বাজারের বিভিন্ন চায়ের দোকানে রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ থাকলেও ফিসফিস করে চলছে আলোচনা।
আলাল নামের এক ব্যক্তি চায়ের কাপ চুমুক দিতে দিতে মন্তব্য করেন বর্তমান এমপি নুরুজ্জামান বিশ্বাস নির্বাচিত হওয়ার পর ঈশ্বরদী রাজনৈতিক পরিবেশ অনেকটাই ভালো। রাজনৈতিক সংঘাত নেই বললেই চলে। সেই কারণে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যাও এবার অনেক বেশি এবং গণসংযোগ করছে স্বাভাবিকভাবে।
ফিরোজ নামের আরেকজন বললেন, বর্তমানে ঈশ্বরদীর রাজনীতির যেই অবস্থা, আওয়ামী লীগে অদৃশ্য গ্রুপিং রয়েছে। নুরুজ্জামান বিশ্বাস পেলে ঈশ্বরদীর পরিবেশ ভালো থাকবে আমার মনে হচ্ছে সব দিক দিয়ে বিবেচনা করে তাকেই হয়তো এবারও দলীয় মনোনয়ন দিবে।
শহরের রেলগেটের চায়ের আড্ডাগুলোতে চলছে ভিন্ন আলাপচারিতা। বিশেষ করে এখানে বসেন চাকরিজীবী ব্যবসায়ী এবং কর্মজীবী মানুষরা। এই আড্ডায় একজনকে বলতো শোনা যায়, বর্তমান সময়ে তরুণ নেতৃত্ব দরকার। গালিবুর রহমান শরীফ শিক্ষিত এবং স্মার্ট, ভদ্র তার চিন্তা চেতনা অনেক সুন্দর। সে দলীয় মনোনয়ন পেলে এবং নির্বাচিত হলে ঈশ্বরদীর উন্নয়ন হবে।
অন্য আরেকজন বললেন, মনোনয়ন পাবে রেজাউল রহিম লাল। জেলা সভাপতি, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তার অবদান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনে।
ঈশ্বরদী বাজারের আরেক চায়ের দোকানের আড্ডায় শোনা গেল, রফিকুল ইসলাম লিটন এবার মনোনয়ন পাবে। ঈশ্বরদী-আটঘরিয়ায় তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে।
আলামিন নামের আরেকজন বললেন, জনপ্রিয়তা এবং নেতাকর্মীর সমর্থন সবচেয়ে বেশি আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর। দল যদি সঠিক তথ্য নেয় তাহলে মিন্টুই মনোনয়ন হবে।
এইসব চায়ের আড্ডাগুলোতে অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদুসহ আরোও দুই একজনের নাম ও শোনা গেছে।
তবে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটবে চলতি সপ্তাহ অথবা আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকেই জানা যাবে কে হচ্ছেন নৌকার মাঝি?