ঈদের বাকি আর মাত্র ১০-১১ দিন। ঈশ্বরদীতে এরইমধ্যে জমে উঠেছে ঈদবাজার। ফুটপাত, রেলওয়ে সুপার মার্কেট থেকে শুরু করে শহরের অভিজাত বিপণীবিতানগুলোতে এখন মানুষের উপচে পড়া ভিড়। আগামী দিনগুলোতে বেচাকেনা আরও বাড়বে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
সোমবার ( ১০ এপ্রিল) ঈশ্বরদী বাজারের রেলওয়ে সুপার মার্কেট, বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেট, মনির প্লাজা, জাকের সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখা যায় চৈত্রের প্রচণ্ড তাপ ও গরম উপেক্ষা করে পরিবার-পরিজনদের জন্য নতুন পোশাক কিনতে ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষ। এসব মার্কেটের ভেতরে ও আশপাশের রাস্তাগুলোতে হাঁটার মতো অবস্থা নেই। সবখানেই লোকে লোকারণ্য।
এদিকে দোকানগুলোতে বাহারি রঙের পোশাক সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রেতারা। ক্রেতারা তাদের পছন্দমতো কাপড় দেখছেন। ট্রায়াল দিচ্ছেন। কেউবা শাড়ি, জুতা, কসমেটিকসের দোকানে ভিড় জমিয়েছেন। ছেলেদের পাঞ্জাবির দোকানগুলোতেও ছিল চোখে পড়ার মতো ভিড়। ছেলেরা পাঞ্জাবির পাশাপাশি শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্ট কিনছেন।
বিক্রেতারা জানান, রমজানের শুরুতে বেচাকেনার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ভেবেছিলাম এবার পোশাকের বেচাকেনা খুব একটা ভালো হবে না। দোকানদারদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা দেখা গিয়েছিল। ১০ রোজার পর থেকে সে হতাশা কেটে গেছে। এখন বেচাকেনা খুব ভালো হচ্ছে। চার-পাঁচদিন হলো বাজারে ভিড় বেড়েছে। এখন শিশু ও নারীদের পোশাক বেশি বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতা আসাদুর রহমান বীরু বলেন, এবার নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম খুবই বেশি। তারপরও ঈদ বলে কথা। পরিবারের জন্য কেনাকাটার জন্য এসেছিলাম। সবকিছুর দামই বেশি। তারপরও চেষ্টা করছি সাধ্য অনুযায়ী কেনাকাটা করার।
শিশু রোজা খাতুন জানায়, বাবা-মায়ের সঙ্গে বাজারে এসেছি জামা, জুতা ও চুরি-মালা কিনবো। বাজারে অনেক মানুষ, খুব ভিড়। এরমধ্যেই নিজের পছন্দের জামা খুঁজছি।
ঈশ্বরদী বাজারের একুশে বুটিকস ও লেডিস ফ্যাশনের সত্ত্বাধিকারি ফারজানা ফেরদৌস পুষ্প বলেন, এবার মেয়েদের পোশাকের কালেকশনের মধ্যে রয়েছে লায়লা। এছাড়াও গাউন, ফ্রকসহ দেশি-বিদেশি পোশাক রয়েছে। বেচাকেনা শুরু হয়েছে। ক্রেতা সমাগমও ভালো। আশাকরি আগামীতে বেচাকেনা আরও ভালো হবে।
জাকের প্লাজার থান কাপড় বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ইসলাম এন্টারপ্রাইজের পরিচালক মো. তুষার বলেন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বেতন হয়েছে, অনেকে বোনাসও পেয়েছেন। সেজন্য বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে বেচাকেনার পরিমাণ আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।
সাজ কসমেটিকসের সত্ত্বাধিকারী সোহেল রানা বলেন, দুই-তিনদিন হলো কসমেটিকস বেচাকেনা বেড়েছে। শুক্রবার সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়েছে। আমাদের ধারণা ছিল এবার ঈদে বেচাকেনা খুব কম হবে। দুই-তিনদিন ধরে বাজারে ভিড় দেখে মনে হচ্ছে বেচাকেনা ভালোই হবে।
ঈশ্বরদী শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, ঈশ্বরদী বাজারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক বাজারে নজরদারি রেখেছে। বিগত দুই-তিন বছর করোনার কারণে বেচাকেনা কম হয়েছে। এবার ঈদবাজারে ক্রেতাদের সমাগম বেড়েছে। আশা করি এবার বেচাকেনা ভালো হবে।