হঠাৎ করেই ঈশ্বরদীতে কমে গেছে ডিমের দাম। খামারিদের ডিম বিক্রির টাকায় মুরগির খাদ্য ও ওষুধের দাম উঠছে না। মুরগির খাবার, বাচ্চা, ওষুধ, শ্রমিকের মজুরি, খামার তৈরির নানা উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে খামার টিকিয়ে রাখা এখন কষ্টকর। গত তিনদিন ধরে কম ডিমের দাম। এ অবস্থায় প্রতি হালি ডিম ৫.৬০ টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে খামারিরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
খামারিরা বলছেন, প্রতিটি ডিমের উৎপাদন ব্যয় ১০.৫০ টাকা। পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৯.১০ টাকা। এতে প্রতি ডিমে লোকসান হচ্ছে ১.৪০ টাকা।
শনিবার (১২ নভেম্বর) সকালে ঈশ্বরদীর ডিমের আড়ত ঘুরে জানা যায়, নভেম্বরের শুরুতে খামারিরা এক হালি ডিম ৪২ টাকায় বিক্রি করেছেন। বাজারে আমদানি বেড়ে যাওয়ায় এখন আড়তে বিক্রি করছেন ৩৬.৪০ টাকা। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ৪০ -৪২ টাকা।
কলেজ রোডের ডিমের আড়তদার খায়রুল জানান, খামারিদের কাছ থেকে ৩৬.৪০ পয়সা হালি দরে ডিম কিনে ৩৬.৮০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীতে ডিমের দাম নির্ধারণ হয়। খুচরা বা পাইকারি ব্যবসায়ীরা মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডিমের বাজার দর জেনে ডিমে কিনতে আসে। আমদানি বেড়ে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান তিনি।
শহরের হান্নানের মোড়ের স্বপন রায় বলেন, ডিম প্রতি হালি ৪০ থেকে ৪২ টাকায় হালি বিক্রি করছি।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদকপ্রাপ্ত খামারি ও পাবনা জেলা পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আকমল হোসেন জানান, বাজারদর অনুযায়ী প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা ৪০ পয়সা। খাদ্যের দাম বাড়ছে আর ডিমের দাম কমছে। ডিমের দাম কমতে থাকলে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র খামারিরা কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে। তখন ডিম উৎপাদনকারী বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো সিন্ডিকেট করে ডিম ও মুরগির মাংসের দাম বাড়িয়ে দেবে। ডিমের বাজারদর ওঠানামা করার পেছনে যে সিন্ডিকেট আছে তার লাগাম এখনই টেনে ধরার জন্য তিনি সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন ।
দাশুড়িয়ার খামারি নজরুল ইসলাম জানান, খামারে ডিমের দাম কমেছে হালিতে ৫.৬০ টাকা। ৪২ টাকা হালির ডিম এখন ৩৬ টাকা ৪০। অথচ প্রতিটির উৎপাদন খরচ প্রায় ১০.৫০ টাকা। বিক্রি করতে হচ্ছে ৯.১০ টাকা। প্রতি ডিমে লোকসান ১.৪০ টাকা। এভাবে চলতে থাকলে খামার বন্ধ হয়ে যাবে।