ঋণ দেওয়ার নামে শতাধিক সদস্যের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের সঞ্চয় আদায় করে আসছিল ‘আস্থা ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংস্থা। ঋণের টাকা দেওয়ার কথা বৃহস্পতিবার। কিন্তু ঋণ দেওয়ার দুদিন আগে মঙ্গলবার থেকে সংস্থার কার্যালয় বন্ধ। অফিসের কাউকেই আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমানতের কোটি টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার এ অভিযোগ উঠেছে ‘আস্থা ফাউন্ডেশন’ নামে পাবনা জেলার ঈশ্বরদীর একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে। ক্ষতিগ্রস্তদের একজন ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত সদস্য ও এলাকা সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ঈশ্বরদী শহরের কলেজ রোড বকুলের মোড়ে আস্থা ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি বাসা ভাড়া নেয় তারা। প্রায় দুই মাস ঈশ্বরদী বাজার ও কলেজ রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় ঋণদানের কথা বলে গ্রাহকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের সঞ্চয় আদায় এবং অফিস পরিচালনা করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধিরা। তাদের মূল টার্গেট ছিল ঈশ্বরদী বাজারের ব্যবসায়ীরা। নামমাত্র শর্তে মোটা অঙ্কের টাকা ঋণ প্রদানের আশ্বাসে তারা সদস্য ভর্তি ও সঞ্চয় জমা নিত।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে বাজারে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘ গত প্রায় এক মাসে তিনি ৮০ হাজার টাকা সঞ্চয় দিয়েছেন বড় ঋণ পাওয়ায় আশায়। কিন্তু মঙ্গলবার খবর পাই ওই অফিসে তালা ঝুলছে। খোঁজ নিয়ে জেনেছি অফিসের সবাই পলাতক।’ আরেক ভুক্তভোগী মনসুর বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আমাদের ঋণ দেওয়ার কথা। কিন্তু মঙ্গলবার থেকেই তারা পলাতক। খোঁজখবর নিয়ে এদের গ্রেপ্তার করা করে সবার টাকা ফেরত দেওয়া উচিত।
ক্ষতিগ্রস্ত সদস্যরা শুক্রবার সকালেও অফিসের সামনে এসে ক্ষোভ জানান। এর আগে বৃহস্পতিবার আস্থা ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে রাকিব বিশ্বাস নামে এক সদস্য ঈশ্বরদী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এদিকে অফিস বন্ধ দেখে গ্রাহকেরা ব্রাঞ্চের ম্যানেজার রিয়াজুল ইসলামকে ০১৭৪২-১৫১৩২৪ নম্বরে এবং ফিল্ড অফিসার রেজাউল ইসলামের সঙ্গে ০১৭৭৯-৭৫৪১২৭ নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করলে মোবাইল দুটি বন্ধ পাওয়া যায়।
আরেক ভুক্তভোগী রাকিব হোসেন জানান, সরল বিশ্বাসের সুযোগে তিনিসহ শতাধিক সদস্যের কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে সংস্থাটি। আমরা বিচার চাই। অনেক ব্যবসায়ীর টাকা মেরে উধাও হয়ে গেছে এই প্রতিষ্ঠান।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, আস্থা ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। সংস্থার নামে ঋণ আদায়ের অনুমতি আছে কিনা তাও খোঁজখবর নিচ্ছি। না পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।