উপরে বাঁ থেকে গালিবুর রহমান শরীফ, ইছাহক আলী মালিথা, মোখলেছুর রহমান মিন্টু, নিচে বাঁ থেকে শিরহান শরীফ তমাল, এমদাদুল হক রানা সরদার, আব্দুস সালাম খান, তারও নিচে বাঁ থেকে আনিস উর রহমান শরীফ, আলাউদ্দিন বিপ্লব ও আবির হাসান শৈশব | ছবি: সংগৃহীত
পাবনার ঈশ্বরদীতে যুবদল কর্মীকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্যসহ (এমপি) আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৭১ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
যুবদল কর্মী নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম।
মামলায় পাবনা-৪ আসনের সাবেক সংসদ গালিবুর রহমান শরীফকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র ইছাহক আলী মালিথা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মিন্টু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমদাদুল হক রানা সরদার, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম খান, লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিস উর রহমান শরীফ, পৌর যুবলীগ সভাপতি আলাউদ্দিন বিপ্লব এবং পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি আবির হাসান শৈশবসহ ৭১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকার পতনের একদফা দাবিতে ৪ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলন প্রতিরোধে শহরের রেলগেট খায়রুজ্জামান বাস টার্মিনালে অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়ে জড়ো হতে থাকেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে আন্দোলনকারীরা ঈশ্বরদী-বানেশ্বর আঞ্চলিক মহাসড়কে অবস্থান নেন। এসময় ঈশ্বরদী যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমালের নেতৃত্বে যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এদিকে শহরের পশ্চিম টেংরি কাঁচারীপাড়া ঈদগাহের কাছে পৌর যুবদলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন জুয়েলসহ কয়েকজন যুবদল নেতাকর্মীকে দেখে মিছিল থেকে যুবলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়েন। এতে ওই এলাকায় ভেতরে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এসময় উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম রিপন ও কর্মী নজরুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হন।
এর জের ধরে পরদিন ৫ আগস্ট সকালে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বিক্ষুব্ধ যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা। এসময় শহরে স্টেশন রোড উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল এবং পোস্ট অফিস মোড়ে উপজেলা যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক কার্যালয় ভাঙচুর করেন যুবদলের নেতাকর্মীরা।
পৌর যুবদলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন জুয়েল বলেন, ‘বিএনপির দুর্গ ঈশ্বরদীতে যাঁরা এত দিন ক্ষমতার অপব্যবহার করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে, বিএনপির শত শত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দিয়ে নির্যাতন করেছে, ছাত্র আন্দোলন দমাতে যাঁরা হামলা ও হত্যায় ইন্ধন দিয়েছে, তাঁদের আইনের আওতায় আনতে একটি মামলা হয়েছে। আরও মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো খুদে বার্তায় পাবনা-৪ আসনের সাবেক সংসদ গালিবুর রহমান শরীফ বলেন, ‘আমি কখনো কারও সঙ্গে অমানবিক আচরণ করিনি। শুধু রাজনীতির কারণে আমার নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ন্যায় ও সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশা করছি।’
এ বিষয়ে ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে যাচাই করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে মামলাটি রুজু করি। আসামিদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।’