জনসভা |
বক্তব্য দেন গালিবুর রহমান শরীফ। ছবিটি বৃহস্পতিবার বিকেলে তোলা
পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী গালিবুর রহমান শরীফ বলেছেন,আওয়ামী লীগ দৃশ্যমান উন্নয়ন রাজনীতি করে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াতের জোট সরকারের সময় ক্ষমতাই আসার পর চুরি, দূর্নীতি, লুটপাট ছাড়া কিছুই জনগনকে দিতে পারেনি।
২০০১ সালে বিএনপি জোট ক্ষমতাই ছিল, তখন হাওয়া ভবন তৈরী করে হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করে লন্ডনে পাঁচার করা টাকা নিয়ে তারেক জিয়া লন্ডনে বসে আছে। আন্দোলন করবে, নেতাকর্মীর পাশে থাকবে এসব নাই।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারী) সন্ধায় শহরের প্রাণকেন্দ্র ঈশ্বরদী আলহাজ্ব খায়রুজ্জামান বাবু কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের আয়োজনে এক বিশাল জনসভায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার প্রচারণার শেষের দিন বিশাল জনসভায় পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি ভিন্ন পেক্ষাপটে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি- জামায়াত তারা এই নির্বাচণকে প্রতিহত করার ডাক দিয়েছেন।এই নির্বাচন প্রতিহত করার ডাক দিয়েছেন।এই নির্বাচন বর্জন করার ডাক দিয়েছেন। তাদের একজন নেতা আছে, ২০০১ সালে হাওয়া ভবনের নামে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে পাচার করে লন্ডনে বসে সুরম্ভ অট্টলিকায় বসে সে ডাক দিচ্ছেন, ঝাঁপিয়ে পড়ো,জ্বালাও পোড়াও করো, জীবন্ত মানুষদেরকে পুড়িয়ে মারো। আমি এসব রাজনৈতিক শক্তির সমর্থকদের বলতে চাই, আপনারা এগুলো করতে গিয়ে জনরোষের স্বীকার হবেন, বিচারের আওতায় আসবেন,তখন লন্ডন থেকে তারেক জিয়া কিন্তুু আপনাদের বাঁচাতে আসবে না। তার খারাপ সময়ে তিনি বাংলাদেশে আসবেন না।
আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী গালিবুর রহমান শরীফ বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতার রাজনীতি পরিহার করে আওয়ামী লীগের পতাকা তলে সকলকে একতাবদ্ধ হয়ে সুন্দর দেশ গড়ার আহবান জানিয়ে বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সফল রাষ্ট্র নায়ক শেখ হাসিনা যে উন্নয়নের রাজনীতি করছেন, আগামীতে আধুনিক বাংলাদেশ তৈরীর যে ঘোষনা দিয়েছেন, আসুন, একটি সুন্দর দেশ গড়ি, সকলে মিলে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, নৌকা মার্কার প্রার্থী প্রয়াত বাবা আলহাজ্ব শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর আমলের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমার প্রয়াত বাবা বেঁচে থাকা অবস্থায় রাস্তা-ঘাট,স্কুল-কলেজ,ব্রীজ-কালভাটসহ অধিকাংশ উন্নয়ন করে গেছেন। আপনারা সকলে আমার পাশে থাকলে আমার মরহুম প্রয়াত পিতার মতই আমি আপনাদের জন্য কাজ করতে চাই।আমাদের ব্যাক্তিগত চাওয়া পাওয়ার কিছুই নাই। আমাদের মহান রাব্বুল আলামিন অনেক যোগ্যতা দিয়েই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আমি আমার প্রয়াত পিতার মত কাজ করতে চাই, আল্লাহ্ যতদিন হায়াত দিয়েছে। আমি যেন আমার কাজের মধ্য দিয়ে তার স্মৃতি, মান-ইজ্জত, এই শহরে তিনি যা রেখে গেছেন, সেটি যেন টিকে থাকে শত বছর ধরে, তার সন্তান হিসেবে এটি চাওয়া।
গালিবুর রহমান শরীফ আরও বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা, আধুনিক মানবতার মা, দেশরত্ন শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়েছেন। তেমনি করে তিনি ঈশ্বরদীকেও এগিয়ে নিয়েছেন। আপনার জানেন? বাংলাদেশে যতগুলো উপজেলা আছে?চারটি শ্রেষ্ঠ উপজেলার মধ্যে ঈশ্বরদী হয়েছিল আমার পিতা জীবিতকালে।
জনসভা |
জনসভায় যোগ দিতে আসছেন নেতা–কর্মীরা |
গালিব আরও বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারী তারিখে যদি আপনারা আমাকে একটি ভোট বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বিজয়ী করে সংসদে পাঠাতে পারেন? তাহলে আমার প্রয়াত পিতা যেভাবে এলাকার উন্নয়নগুলো করেছেন,সেভাবে আমি আপনাদের জন্য কাজ করব। তখন ঈশ্বরদী হবে সারা বাংলাদেশের মধ্যে একটি উন্নত রোল মডেল উপজেলা। ঈশ্বরদী ১৪ টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভবিষ্যৎ আমরা আরও করব। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা এবারের নির্বাচণে যে ইশতিহার দিয়েছেন। আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে পারে। তরুন-তরুনীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। কৃষি ব্যবস্থাকে আধুনিকরন করবেন, বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির ব্যবহার হবে, দ্রব্যমুল্যের দাম সহনশীল হবে। এরকম ১১ টি প্রতিপাদ্য তিনি কিন্তুু ঘোষনা করেছেন। আপনারা যদি একটি ভোট বিপ্লবের মাধ্যমে আমাকে নির্বাচিত করেন তাহলে ইনশাল্লাহ দিনরাত আপনাদের জন্য কাজ করব।।
জনসমাবেশে আসা মা বোন মুরব্বিদের উদ্দ্যেশে গালিব বলেন, দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আপনাদের পাশে ছিলেন, ভবিষ্যৎ থাকবেন ইনশাআল্লাহ তিনি সরকার গঠন করতে পারলে। ৭৩:রকমের রাষ্ট্রীয় সুবিধা এখন আপনারা পাচ্ছেন, আগামীতে ক্ষমতাই আসলে আরও বৃদ্ধি পাবে। আপনাদের সামাজিক অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। মুরব্বীদের বলতে চাই, আপনাদের যথার্থ মুল্যায়ন করে আপনাদের দূঃখ দূর্দশার কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সুবিধা বঙ্গবন্ধুর কন্যা দিয়েছেন। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর-মুক্তিযোদ্ধারা অনেকটাই সুবিধা পেয়েছেন, যা কোন সরকার কখনো করেনি।
তাই আগামী ৭ জানুয়ারী পরিবার পরিজন আত্বীয় স্বজন, প্রতিবেশী নিয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে উপস্থিত হয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন। আমি জয়লাভ করলে আপনাদের উন্নয়নের জন্য কাজকর্মের জন্য আমার যোগ্যতা দিয়ে, শারীরিক সক্ষমতা দিয়ে তার শতভাগ আপনাদের জন্য কাজ করব।
জনসভা |
জনসভায় যোগ দিতে আসছেন শতশত নারী ও তরুণী |
ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে সাধারন সম্পাদক পৌর মেয়র ইছাহক আলী মালিথার পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, সাবেক সাধারন সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোকলেছুর রহমান মিন্টু, লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক, লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিস উর রহমান শরীফ, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, বীর-মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ রশীদুল্লাহ্, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাহজেবীণ শিরিন পিয়া, পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কাশেম গোলবার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর-মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মুস্তফা চান্না, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মল্লিক মিলন মাহমুদ তন্ময়।
মিছিল |
জনসভায় যোগ দিতে মিছিল নিয়ে আসছেন সাঁড়া ইউনিয়নের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা |
তার আগে জনসভাকে কেন্দ্র করে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জনসভায় যোগদান করেন ঈশ্বরদীর বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগসহ অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে জনসভাস্থল রূপ ধারন করে বিশাল জনসমুদ্রে। কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে ঈশ্বরদীর কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড এলাকাসহ আশপাশ। জনসভায় নারী পুরুষের পাশাপাশি সকল পেশাজীবী শ্রেনী পেশার মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়।