রবিবার , ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. তারুণ্য
  14. ধর্ম
  15. নির্বাচন

ঈশ্বরদী : বাবা-মাকে এক নজর দেখার জন্য মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে এলো ছেলে

প্রতিবেদক
আমাদের ঈশ্বরদী রিপোর্ট :
ডিসেম্বর ১৭, ২০২৩ ১১:৪৮ অপরাহ্ণ

“মাদ্রাসা থেকে ছুটি না পাওয়াই দীর্ঘ এক বছর বাবা-মাকে দেখিনা, আদরও পাইনি। তাই বাবা-মাকে এক নজর দেখার জন্য মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে চলে এসেছি। কিন্তু আমি জানিনা কিভাবে বাড়ি যাবো। স্টেশনে এসে ট্রেন দেখে উঠে পড়েছি। এখন কোথায় আছি তাও জানিনা, আমাকে আমার বাবা-মায়ের কাছে নিয়ে চলেন” ঠিক এভাবেই কান্নাজড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলছিলেন দশ বছর বয়সের মাদ্রাসা ছাত্র সিয়াম।

চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার আমিনিয়া দারুল কওমী মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র ছিল সিয়াম। সে নিজের বাড়িতে বাবা-মায়ের কাছে যাওয়ার উদ্দেশ্য কাউকে কিছু না বলেই মাদ্রাসা থেকে চলে আসে। তারপর উপজেলার আনসারবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের একটি রকেট মেইল ট্রেনে উঠে পড়ে সে। ট্রেনটি পাবনার ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে এসে থামলে নেমে যায় সিয়াম। গন্তব্য ভুলে হারিয়ে যাওয়া শিশুটির কান্না দেখে এরশাদ নামে ট্রেনের এক যাত্রী ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে তাৎক্ষণিক ঈশ্বরদী আমবাগান পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক(এএসআই) সোহেল রানা রাত ৯ টার দিকে শিশুটিকে উদ্ধার করে। তারপর মাদ্রাসা ছাত্র সিয়ামের দেওয়া তথ্যমতে ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে বাবার মুঠোফোন নম্বর বের করে অবশেষে সিয়ামকে রবিবার রাত ১ টার দিকে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনেই বাবার হাতে তুলে দেন পুলিশ।

শিশু সিয়াম চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার খাসপাড়া এলাকার মোঃ ইউসুফ আলীর ছেলে। তার বাবা ইউসুফ আলী ঢাকা ডিস লাইন অফিসের একজন কর্মচারী। শিশু সিযামের ভাষ্য, মাদ্রাসা থেকে কোন ছুটি না পেয়ে সে বাবা-মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য মাদ্রাসা থেকে পালায়। কোন গাড়িতে করে নিজের বাড়িতে যেতে হয় সেটা তার জানা নেই। শনিবার বিকালে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে চুয়াডাঙ্গা আনসার বাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে রকেট মেইল ট্রেনে ওঠে সে। ট্রেনটি পাবনার ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে পৌঁছে হঠাৎ দাঁড়িয়ে যায়। সেখানে ট্রেন থেকে নেমে যায় সিয়াম। এরপর ট্রেনের এক যাত্রী তাকে দেখতে পেয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।

এরশাদ নামে ট্রেনের ওই যাত্রী বলেন, ট্রেনের মধ্যেই দেখছিলাম পাঞ্জাবি পরে ছেলেটি একা একা ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেকবার জিজ্ঞেস করেও কিছু বলেনি। পরে স্টেশনে নেমে আমি ৯৯৯ নম্বরে কল করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।

শিশু সিয়ামকে উদ্ধার করা আমবাগান পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই(উপ-পরিদর্শক) সোহেল রানা বলেন, ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে আমি সাথে সাথে স্টেশনে গিয়ে শিশুটিকে নিয়ে আসি এবং তার শরীরে শীতের পোষাক না থাকায় শীতের পোশাক কিনে দিয়ে তার থেকে ঠিকানা জানার চেষ্টা করি। এক পর্যায় সে তার বাবার মোবাইল নম্বর বল্লে তার বাবাকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানালে তার বাবা এসে ছেলেকে শনাক্ত করে। এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে বাবার কাছে শিশুটি কে হস্তান্তর করে।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ৯৯৯ নম্বরে একজন লোক খবর দিলে সাথে সাথে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে। পরে ঠিকানা বের করে তার পরিবারে খবর দিলে তার বাবা আসলে স্টেশন থেকেই শিশুটি কে বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

error: Content is protected !!