দীর্ঘদিন ধরে লক্কর-ঝক্কর কোচ নিয়ে খুলনা-ঈশ্বরদী-চিলাহাটি রুটে চলাচল করছে রূপসা এক্সপ্রেস। চলতিপথে প্রায় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় ট্রেনটিতে। প্রতিদিন ২-৩ ঘণ্টা বিলম্বে চলাচল করছে ট্রেনটি। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, রূপসা আপ-ডাউন দুটি ট্রেন প্রায় তিন ঘণ্টা বিলম্বে চলাচল করছে। ঈশ্বরদী জংশনে ট্রেনটি প্রবেশের নির্ধারিত সময় ১১টা ২০ মিনিটে হলেও সেটি ১টা ৫মিনিটে স্টেশনে প্রবেশ করে। এরপর ট্রেনের প্রতিটি কোচ পর্যবেক্ষণ শুরু করেন পরীক্ষক (টিএক্সআর)। প্রায় ৫০ মিনিট ট্রেনের বগির চাকা, টুলবক্স, বাফোর, ব্যাকাম, এয়ার সিলিন্ডার, স্পিরিং, ব্রেকব্লক, সুইচবোর্ড, হোসপাইপ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও মেরামত শেষে দুপুর ২টার দিকে ট্রেন চিলাহাটির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এরপরও যাত্রাপথে বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন থামার পর এটিকে মেরামত করতে হয়। পুরাতন ও চলাচলের অনুপযোগী কোচ দিয়ে ট্রেন চলাচলের কারণে যাত্রাপথে বিলম্ব হচ্ছে।
অপরদিকে খুলনাগামী রূপসা (ডাউন) ট্রেন ঈশ্বরদী জংশনে ২টায় নির্ধারিত সময় থাকলেও এটি প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিলম্বে বিকেল ৪টায় প্রবেশ করে। এরপর ট্রেনের কোচ পর্যবেক্ষণ শেষে আধাঘণ্টা পর সেটি ছেড়ে যায়।
খুলনা থেকে চিলাহাটি যাচ্ছিলেন মামুনুর রশীদ নামে এক যাত্রী। তিনি জানান, ট্রেনটি সকাল ৭টা ১০ মিনিটে খুলনা থেকে ছেড়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় চিলাহাটি পৌঁছানোর কথা। ২টা বাজলেও ট্রেন এখন ঈশ্বরদীতে। চিলাহাটি যেতে আরও ৪-৫ ঘণ্টা সময় লাগবে। চলতি পথে স্টেশনে-স্টেশনে ট্রেনের কোচ মেরামত করতে সময় গেছে।
পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্র জানায়, রূপসা এক্সপ্রেসের কোচগুলো পুরানো হওয়ায় নানা ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। চলতি পথে মেরামতের কারণে ট্রেনটির যাত্রা বিলম্বিত হচ্ছে। তবে খুব শিগগির এ ট্রেনে নতুন কোচ সংযুক্ত করে সংকট নিরসন করা হবে।
রূপসা এক্সপ্রেসের দায়িত্বরত পরিচালক (গার্ড) এস আর চৌধুরী বলেন, ট্রেন চললে সমস্যা হতেই পারে। তবে রূপসা এক্সপ্রেসের কোচ পুরনো হওয়ায় প্রায় মেরামতের প্রয়োজন হচ্ছে। এতে যাত্রা বিলম্ব হলেও ট্রেনের গতিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
ঈশ্বরদী স্টেশনের ট্রেন পরীক্ষক (টিএক্সআর) আনোয়ার হোসেন বলেন, চলার সময় ঝাঁকুনিতে কিছু যন্ত্রে ক্রুটি দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে কোচের নিচের যন্ত্রাংশ বারবার সমস্যা দেখা দেয়। তাই ট্রেন স্টেশনে এলে পর্যবেক্ষণ করা হয়। প্রয়োজনে মেরামত করা হয়।
ঈশ্বরদী স্টেশন মাস্টার মোছা. মাহবুবা খাতুন বলেন, প্রতিনিয়ত ট্রেনটি মেরামত করা হয়। এটা সবাই জানে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে প্রকৌশল বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।
পাকশি রেলওয়ে বিভাগীয় যন্ত্র প্রকৌশলী (ক্যারেজ) মো. মমতাজুল ইসলাম বলেন, এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। আমরাও খুব চাপে রয়েছে বিষয়টি নিয়ে। চলতি মাসে রূপসা এক্সপ্রেসসহ বেশ কয়েকটি ট্রেনে নতুন কোচ সংযোগ করা হবে। আশা করছি এ সমস্যা নিরসন হবে।