শনিবার , ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ | ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

রাজনৈতিক সহিংসতা, ট্রেনের গতি নেমেছে অর্ধেকে

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
ডিসেম্বর ১৬, ২০২৩ ১০:৫২ অপরাহ্ণ

চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার কারণ দেখিয়ে রাতে ট্রেনের গতি কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। ফলে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটারে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ফলে সকালের ও রাতের ট্রেনগুলোর যাত্রায় দেরি হচ্ছে। এ বিষয়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার আব্দুল করিম জানান, রাতের ট্রেনগুলো দেরি পৌঁছানোর কারণে সকালে দেরিতে ছেড়ে যাচ্ছে।

রেলপথে নিরাপদ ভ্রমণের জন্য সুবিদিত। কিন্তু নাশকতার কারণে সম্প্রতি ট্রেন দুর্ঘটনা বেড়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেন দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য রেললাইনে পাহারা, রেললাইনের ক্লিপার ও নাট-বল্টু ঠিকঠাক করা, রেললাইনের অপসারিত মাটি ভরাট ও ট্রেনের গতি কমিয়ে ট্রেন পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ট্রেন দেরিতে পৌঁছানোর কারণে দেরিতে ছেড়ে যাচ্ছে। অনেক এলাকায় গতি কমিয়ে ট্রেন চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। মূলত দুর্ঘটনা এড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ১৫ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস, সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস, চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস, কিশোরগঞ্জগামী এগারসিন্দুর প্রভাতী, দেওয়ানগঞ্জ বাজারগামী তিস্তা এক্সপ্রেস, মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার, চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী, রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াগামী তিতাস কমিউটার দেরিতে ছেড়েছে।

এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চলের রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার জানান, চলমান বিরূপ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিরাপদে ট্রেন পরিচালনার জন্য পশ্চিমাঞ্চলের সব সেকশনে নিয়মিত ট্র্যাক পেট্রল, রাত্রিকালীন (রাত ১১টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত) ট্রেনগুলো নিয়ন্ত্রিত গতিতে (ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার) পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী আসাদুল হক জানান, রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে প্রতিদিন রেলপথে নাশকতা হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণে করণীয় নিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রকৌশলী বিভাগের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিরাপদ ট্রেন চলাচলের জন্য রেলপথে নাশকতা প্রতিরোধে ২৪ ঘণ্টা ট্রলি যোগে টহল, রেললাইনের নাট-বল্টু পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ ছাড়া নাশকতা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্টদের তৎপরতার পাশাপাশি সকলকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।

পাকশী বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মো. আবু জাফর জানান, তারা রেলপথ সচল রাখতে সহকর্মীদের নিয়ে বিরামহীন কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া রেললাইন তদারকির জন্য প্রতিদিন ট্রলি নিয়ে পরিদর্শন করছেন এবং সহকর্মীদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।

তিন বছরে ২৮ ট্রেন দুর্ঘটনা

গত তিনবছরে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়েতে ২৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ২৫ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। অরক্ষিত রেলগেট, দেখভালের লোকবল সংকট, রেললাইনে পাথর-স্বল্পতা, কাঠের স্লিপার পচে নষ্ট হওয়া, কংক্রিটের স্লিপার ভাঙা, লোহার স্লিপারের ক্লিপ না থাকা, লাইনের নিচের মাটি সরে যাওয়া এসব দুর্ঘটনার প্রধান কারণ বলে রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের রেললাইন দেখভালে অবহেলা ও অব্যবস্থাপনাসহ প্রশিক্ষণবিহীন অদক্ষ চালক ও রেললাইন নিয়মিত মেরামতের অভাব তো রয়েছেই।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঢাকার টাঙ্গাইল, গাজীপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ীসহ খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর প্রশাসনিক বিভাগের পুরো এলাকা নিয়ে রেলের পশ্চিমাঞ্চল। এই অঞ্চলের বিভিন্ন লাইন সম্পর্কে রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা নানা সংকটকে দায়ী করেছেন। সূত্র মতে, দেশের সর্ববৃহৎ ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪০টি ট্রেন চলাচল করে। এই জংশনের রেললাইনের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক।

জানা গেছে, পাকশী বিভাগে ১২শ কিলোমিটার রেলপথের মধ্য ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ ও রেলপথ এলাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রেনের স্পিড ১০ কিলোমিটারে নামিয়ে আনা হচ্ছে। এই বিভাগে ২৮টি ট্রেন দুর্ঘটনার মধ্যে ৯টিই অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং এলাকায় ঘটেছে। এ ছাড়া অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে কোনো বাধা না থাকায় ১১ বার ট্রেন লাইনচ্যুত হয়েছে। দু’বার মুখোমুখি ট্রেন দুর্ঘটনা ও ইঞ্জিন বিকালের কারণে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে মোট ২২৭টি রেলক্রসিং আছে, এর মধ্যে অরক্ষিত ১৪৫টি।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ম্যানেজার (ডিআরএম) শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ বলেন, দুর্ঘটনা রোধে সার্বক্ষণিক রেললাইনে মোটর ট্রলির মাধ্যমে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অফিসারেরা ট্রলি যোগে সার্বক্ষণিক দেখভাল ও তদারকি করছেন।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের জিএম অসিম কুমার বলেন, রেল দুর্ঘটনায় কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর দায় বা গাফিলতি থাকলে তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আমাদের লোকবল সংকট আছে। এ কারণে কিছু রেলক্রসিং অরক্ষিত রয়ে গেছে। গেটম্যান নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ