বৃহস্পতিবার , ৩০ নভেম্বর ২০২৩ | ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

ঈশ্বরদী জংশনে বারবার নাশকতার চেষ্টা : নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
নভেম্বর ৩০, ২০২৩ ১২:২৪ পূর্বাহ্ণ
ঈশ্বরদী জংশন

পাবনার ঈশ্বরদী রেল জংশনে বিএনপির ডাকা চলমান অবরোধ কার্যকরে বারবার নাশকতার চেষ্টা করছে দুর্বৃত্তরা।সর্বশেষ গত সোমবার (২৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দিকে রেলইয়ার্ডের ওয়াশফিটে ট্রেনের বগিতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ৫৫৫১ নম্বর কোচের ১১টি সিট আগুনে পুড়ে গেছে। এর আগে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, স্টেশনে ট্রেনের নিচে থেকে বোমা উদ্ধার এবং রেলগেটে রেললাইনের ওপর আগুন দেওয়ার ঘটনায় স্টেশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এসব ঘটনায় জানমালের কোনো ক্ষতি না হলেও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা বিষয়ে সোমবার রাতে রেলইয়ার্ডে সমাবেত প্রশাসন, পাবনা জেলা পুলিশ, ডিবি পুলিশের কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বারবার ঈশ্বরদী জংশনে নাশকতার প্রচেষ্টা চালানোর পরও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উদাসীনতাকে দায়ী করেন তারা।

সূত্র জানায়, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সবচেয়ে বড় জংশন স্টেশনের নিরাপত্তায় রেল পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা অপ্রতুল। স্টেশনের ১৭টি সিসি ক্যামেরাও নষ্ট। ইয়ার্ডে কোন সিসি ক্যামেরা নেই। ফলে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, স্টেশনের পাশে ট্রেনের বগির নিচ থেকে বোমা উদ্ধার এবং রেলগেটে রেললাইনের ওপর অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের অধীনে ঈশ্বরদী জংশনের ওপর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৪০টি ট্রেন চলাচল করে। এসব ট্রেনে প্রায় ২০ হাজারেরও যাত্রী যাতায়াত করে থাকেন। স্টেশনের উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে রয়েছে সুবিশাল রেল ইয়ার্ড। রেলইয়ার্ডে যাত্রীবাহী ও মালবাহী বিপুল সংখ্যক বগি সবসময় অবস্থান করে। ভারত হতে আমদানিকৃত পণ্য ছাড়াও দেশীয় পণ্য লোড-আনলোডের কারণে ব্যস্ত থাকে রেলইয়ার্ড। রয়েছে লোকোমেটিভ ও রেলওয়ে ক্যারেজ। সবকিছুরও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের প্রয়োজন। পাশাপাশি ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা অহরহ ঘটছে। যাত্রীসহ রেলে কর্মরতরাও এতে আহত হচ্ছেন। স্টেশন, রেলইয়ার্ডসহ সকল স্থাপনা ও ট্রেনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লোকবল বৃদ্ধি করা দরকার বলে সংশ্লিষ্ঠরা দাবি করেছেন।

স্টেশনের দায়িত্বরত সুপারিনটেনডেন্ট (এসএস) মহিউল ইসলাম ট্রেনের বগিতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় তিনি রেল নিরাপত্তা বাহিনীকে দায়ী করে বলেন, ‘তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতো তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না। দায়িত্বে ঘাটতি রয়েছে, যেকারণে সন্ধ্যার সময় আগুন দিয়ে চলে গেল। নিরাপত্তা বাড়াতে সিসি ক্যামেরাগুলো দ্রুত চালু ও আরও নতুন ক্যামেরা স্থাপন করা দরকার।’

সিসি ক্যামেরা নষ্ট থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ইউএনও সুবীর কুমার দাস বলেন, ‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও বৃহত্তম জংশন স্টেশনে সিসি ক্যামেরা না থাকা দুঃখজনক। থাকলে সহজে অপরাধীদের শনাক্ত করা যেত। এসব বিষয়ে নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষকে বারবার বিশেষ করে পাকশীর ডিআরএমকে বলা হলেও তিনি পদক্ষেপ গ্রহন করেননি। এমনকি নাশকতার ঘটনা ঘটার পর তারা ঘটনাস্থলে আসেননি।’

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মাসুদ আলম সোমবার রাতে নিরাপত্তার বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এসব ঘটনা রেল পুলিশের অধীনস্থ হলেও পাবনা জেলা পুলিশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তৎপর রয়েছে বলেও জানান তিনি।

রেল পুলিশের পাকশীর পুলিশ সুপার সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘রেল ইয়ার্ডের নিরাপত্তার দায়িত্ব রেল নিরাপত্তা বাহিনীর। ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানা পার্বতিপুর রুটের আব্দুলপুর স্টেশন, রাজশাহী রুটের হরিয়াণ স্টেশন, পাবনার ঢালারচর স্টেশন, সিরাজগঞ্জ রুটের মাঝগ্রাম স্টেশন এবং খুলনা রুটের পাকশী স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত। রেলইয়ার্ড ছাড়াও চার-পাঁচটি ট্রেনে রেল পুলিশকে এসকর্টের দায়িত্ব পালন করতে হয়। রেল থানায় কর্মকর্তা-সিপাহীসহ মোট মঞ্জুরিকৃত পদ মাত্র ৫০টি। বর্তমানে কর্মরত আছে ৪৫ জন।’

রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) ঈশ্বরদী সার্কেলের পরিদর্শক ফিরোজ আহমেদ জানান, সুদীর্ঘ ফাঁকা ইয়ার্ড, আমাদের কম জনবল দিয়ে নিরাপত্তা বিধান করা খুবই কষ্টসাধ্য। পাশাপাশি সিরাজগঞ্জ রুটের লাহিড়ী মোহনপুর স্টেশন, পার্বতীপুর রুটের আব্দুলপুর স্টেশন, রাজশাহী রুটের হরিয়াণ স্টেশন, পাবনার ঢালারচর স্টেশন এবং খুলনা রুটের পাকশী স্টেশন পর্যন্ত বিস্তৃত। কর্মকর্তা-সিপাহীসহ এই সার্কেলে জেনারেল শাখায় মঞ্জুরিকৃত পদ ১৪৮টি। কর্মরত রয়েছে মাত্র ৬৯ জন। শুণ্য পদের সংখ্যা ৭৯ জন। শূন্য পদের বিপরীতে পাকশী রিজার্ভ থেকে মাত্র পাঁচজনকে রিলিভিং দেওয়া হচ্ছে বলে সার্কেলের পরিদর্শক ফিরোজ আহমেদ জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, আরএনবি’র গোয়েন্দা শাখায় ১৮ জন ও অস্ত্র শাখায় ২১ জন কর্মরত আছে।

হরতাল-অবরোধ পরিস্থিতিতে জেনারেল ও অস্ত্র শাখার সদস্যদের সমন্বয়ে অস্ত্র টহল পার্টি গঠন করা হয়েছে জানিয়ে ফিরোজ বলেন, ‘অতি নগণ্য সংখ্যক সদস্য নিয়ে ঈশ্বরদীর বিশাল রেলইয়ার্ড এবং উল্লেখিত রেল এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে আরএনবি।’

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ