রবিবার , ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. তারুণ্য
  14. ধর্ম
  15. নির্বাচন

ঈশ্বরদী : ‘ভোটের আগে উন্নয়নের স্লোগান পরে বাজেট বরাদ্দের অজুহাত’

প্রতিবেদক
বিশেষ প্রতিনিধি :
সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩ ১১:৩৮ অপরাহ্ণ

পাবনার ঈশ্বরদীর অধিকাংশ সড়কেরই বেহাল দশা। গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো খানাখন্দ সৃষ্টি হয়ে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই চলাচল করছে পথচারী, যাত্রীসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালক। বরাদ্দ না থাকার অজুহাতে নতুন বা পুরাতন কোনো সড়কই নির্মাণ বা সংস্কার করছে না কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ভারী যানবাহন চলাচলে সড়কগুলো ভেঙে বেহাল অবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

ঈশ্বরদী পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আকবরের মোড় থেকে অরনকোলা বটতলা মোড় পর্যন্ত ৩ দশমিক ৩ কিলোমিটার, পোস্ট অফিস মোড় থেকে ইস্তা গোলচত্বর মোড় পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার, রেলগেট থেকে ইপিজেড গেট পর্যন্ত সাঁড়া গোপালপুরের টিপু সুলতান রোড ৩ কিলোমিটার, সাকরিগাড়ি মোড় থেকে ভাষা শহীদ বিদ্যানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন রোডের ১১ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার, উপজেলা গেট থেকে চানমারী মোড় পর্যন্ত ৫ দশমিক ৩ কিলোমিটার সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সড়কে ভারী যানবাহন চলাচলে শহরের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কগুলো অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছ। এ ছাড়াও নবনির্মিত সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে বিটুমিন, ইট, পাথর উঠে খানাখন্দ আর বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। হালকা বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে পানি জমে যায়। সড়কের এমন বেহাল দশায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাক, বাস, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, রিকশা, ভ্যান, অটোবাইক চালকসহ যাত্রীদের।

ঈশ্বরদী পৌরসভা ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আকবরের মোড়-অরনকোলা বটতলা রোড এবং টিপু সুলতান রোড-এ দুটি সড়ক সর্বশেষ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সংস্কার করা হয়েছে। এ ছাড়াও উপজেলা গেট থেকে চানমারী মোড়, ইস্তা গোলচত্বর সড়ক, ভাষা শহীদ বিদ্যানিকেতন উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কগুলো এলজিইডির আওতাধীন। উপজেলা গেট থেকে চানমারী মোড় পর্যন্ত ২ হাজার ৭০০ মিটার সড়কটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সংস্কার করে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। এর বাইরে অন্যান্য সড়কের নির্মাণ বা সংস্কারে কোনো তথ্য জানাতে পারেনি তারা। সব মিলিয়ে পৌরসভার সড়কগুলো বিগত ৭ বছর ও এলজিইডির সড়কগুলো ৩ বছরে কোনো নির্মাণ বা সংস্কার করা হয়নি।

এ সড়কগুলো ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ঈশ্বরদী ইপিজেডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসা করে। ভাঙাচুরা সড়কে যানবাহনের ধীরগতির কারণে বেশি সময় লাগছে। ফলে সঠিক সময়ে তারা যেতে পারছে না কর্মস্থলে। এ ক্ষেত্রে পৌরকর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।

ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি আসাদুর রহমান বীরু বলেন, ‘ঈশ্বরদী পুরাতন শহর ও প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। পৌরসভার প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ সড়কের এখন বেহাল দশা। সড়কগুলো ভেঙে খানাখন্দ হয়ে গেছে। জনসাধারণের দুর্ভোগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কগুলোর দিকে তাকালে মনে হচ্ছে অভিভাবকহীন পৌরসভা। মানুষের দুর্ভোগ কমাতে পৌরসভাকে দ্রুত সড়কগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে।’

পাকশি এলাকার রিকশাচালক ইউনুস আলী যাত্রী নিয়ে টিপু সুলতান রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন আর বলছিলেন ‘ভোটের আগে উন্নয়নের স্লোগান, আর ভোটের পর শুধু বাজেট বরাদ্দের অজুহাত’ এই হলো জনপ্রতিনিধিরা। তিনি বলেন, ‘রাস্তা ভাঙা হলে নেতাদের কোনো যায় আসে না। কারণ তারা বড় বড় দামি গাড়িতে চলাচল করে। কিন্তু আমাদের বাধ্য হয়েই যাতায়াত করতে হয় এই ভাঙাচুরা রাস্তা দিয়ে। এ রাস্তাগুলোর অবস্থা এতটাই খারাপ যে অসুস্থ রোগীকে নিয়ে যাওয়া যায় না। রিকশার হ্যান্ডেল ভেঙে যাওয়া, রিং বসে যাওয়াসহ নানান ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। আর দুর্ঘটনার শঙ্কা তো আছেই।’

নতুনহাট এলাকার শেখ মেহেরুল্লাহ মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী শাহান বলেন, ‘ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, প্রকল্পের আবাসিক এলাকা গ্রিনসিটি ও ইপিজেডসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার কারণে দেশের মধ্যে একটা অন্যতম ও নামকরা উপজেলা ঈশ্বরদী। এ উপজেলার বিভিন্ন সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলে মনে হয় কোনো অজপাড়াগাঁয়ের মাটির রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি। সড়কগুলোর এতটাই ভগ্নদশা চলাচল করতে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।’

ঈশ্বরদী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এনামুল কবির বলেন, ‘এলজিইডির আওতাধীন সড়কগুলো সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে চলমান অর্থবছরেই সড়কগুলো সংস্কার করা হবে।’

পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা বলেন, ‘সড়কগুলো ২০-২২ টনের গাড়ি চলাচলের উপযোগী। কিন্তু সেখানে ৫০ টনের বেশি ওজনের ভারী যানবাহন চলাচল করে। চেষ্টা করেও ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে পারছি না। তাই সড়ক দ্রুত ভেঙে বেহাল হয়ে যায়। সড়কগুলো সংস্কারে ইতোমধ্যে নতুন একটি প্রকল্প (আরএমজিডিপি) হাতে নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে। এ ছাড়াও ওয়ার্ড ভিত্তিক ছোট ছোট সড়কগুলো চলতি অর্থবছরেই নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

error: Content is protected !!