সোমবার , ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

ঈশ্বরদীতে চায়ের স্বাদে জীবিকা অর্জন প্রতিবন্ধী ফারুকের

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩ ১১:৪৩ অপরাহ্ণ

পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আবাসিক গ্রিন সিটির পাশে নতুনহাট গোলচত্বর মোড়ে শারিরীক প্রতিবন্ধী ফারুক হোসেনের চায়ের দোকান। তার মালাই চায়ের কদর পুরো জেলা জুড়ে। ফারুকের চায়ের সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ায় দূর-দূরান্ত থেকে চা পান করতে মানুষ এখানে ছুটে আসেন। রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্পে কর্মরত বিদেশি নাগরিকরাও তার মালাই চা পছন্দ করেন। শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দুদিন ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় ফারুককে। তাই এ দুদিন ফারুকের চায়ের স্বাদ নিতে দোকানের সামনে বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয় চা প্রেমীকদের।

জন্ম থেকেই ডান হাত বাঁকা ও শক্তি প্রয়োগ করে কোনো কাজ করতে পারেন না ফারুক। শারিরীকভাবে প্রতিবন্ধী হয়েও চায়ের স্বাদ বিক্রি করে টিকে আছেন জীবন সংগ্রামে। অর্থের অভাবে পড়াশোনা করতে না পারা এ যুবক বেশ কয়েক রকমের চা বিক্রি করে খ্যাতি অর্জন করেছে জেলা জুড়ে।

নতুনহাট গোলচত্বর মোড়ের স্থানীয় কয়েকজন দোকানী বলেন, ২০ বছর ধরে চায়ের দোকান চালাচ্ছেন ফারুক। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি মালাই চা বিক্রি করছেন। তার মালাই চা খেতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন আসেন। বিশেষ করে রূপপুর প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ার নাগরিক, প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার চা খুব পছন্দ করেন। এ ছাড়া পাবনা সদর, লালপুর ও ঈশ্বরদী শহর থেকে মানুষ মালাই চা খেতে ছুটে আসেন।

তারা আরও বলেন, মালাই চায়ের পাশাপাশি ফারুকের দুই লেয়ার চা, দুধ চা, মাল্টা চা ও লাল চায়ের বেশ সুনাম রয়েছে। অনেকেই তার লাল চা বেশ পছন্দ করেন।

ঈশ্বরদী পৌর এলাকার মশুরিয়া পাড়া থেকে আসা শেখ তুষার বলেন, ‘আমি ঈশ্বরদী শহর থেকে ফারুক ভাইয়ের চা খাওয়ার জন্য এসেছি। শহর থেকে ফারুকের চায়ের দোকান প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে। এ দোকানে প্রায়ই চা খেতে আসি। এখানে ঈশ্বরদী শহর, পাবনা জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন চা খেতে আসে। বিদেশী নাগরিক, সেনা সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তা, রুপপুর প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের এখানে চা খেতে দেখি। শারিরীকভাবে প্রতিবন্ধি হয়েও তার যে জীবন সংগ্রাম এবং তার এক হাত দিয়ে তৈরি চায়ের স্বাদ ছড়িয়ে পড়েছে চারদিকে।’

উপজেলার মানিকনগর এলাকার বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন চা খেতে এসে বলেন, ‘সময়-সুযোগ হলেই ফারুক ভাইয়ের দোকানে চা খেতে আসি। তার তৈরি ৪ রকমের চায়ের প্রতিটিই আমার কাছে ভালো লাগে। আমি মালাই চা ও দুধ চা বেশি পছন্দ করি। তার চা অসাধারণ। আমি যখনই আসি তখনই দেখি ভিড় লেগেই আছে। এ দোকানে বেশি ভিড় হয় সন্ধ্যার পর। চা খাওয়ানোর পাশাপাশি তার কন্ঠে গানও শুনি আমরা। এতে দীর্ঘ সময় নিয়ে এ দোকানে বসে আড্ডা দেওয়া যাই।’

চায়ের দোকানদার ফারুক হোসেন বলেন, মালাই চা তৈরি হয় গরুর খাঁটি দুধ দিয়ে। দুধ ৭/৮ ঘণ্টা জ্বালিয়ে এ চা তৈরি করা হয়। সেজন্য এ চা খুব সুস্বাদু।

তিনি বলেন, ‘পাঁচ ছয় বছর আগে নতুনহাট এলাকায় শীতকালীন মহড়ায় একদল সেনা সদস্য এসেছিলেন। তারা মাঝেমধ্যে চা খেতে আসতেন। তাদের মধ্যে থেকে একজন আমাকে মালাই চা তৈরির বিষয়টি বলেন এবং কিভাবে এ চা তৈরি করতে হয় সেটিও জানান। তারপর থেকেই নিয়মিত মালাই চা বিক্রি করছি।’

ফারুক আরও বলেন, ‘চা ভালো হওয়ায় একজন খেয়ে আরেকজনকে বলেন। এভাবেই এলাকায় আমার চায়ের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিন প্রায় ২০০ কাপ মালাই চা বিক্রি হয়। এ ছাড়া লাল চা (রং চা), দুধ চা ও দুই লেয়ারের চা আমি বিক্রি করি। আমার সবধরনের চায়ের কাস্টমার আছে। চায়ের দোকানে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয় শুক্রবার ও শনিবার । চা দোকানের আয় দিয়ে বাবা-মা ও ভাই-বোনদের নিয়ে সুখেই আছি।’

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ