ঈশ্বরদীতে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ‘বড় জমায়েত ও শোক র্যালি করে ‘শক্তি’ দেখাল স্থানীয় আওয়ামী লীগের কোনঠাসা ও পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার দুপুরে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে পদবঞ্চিতদের এ শোক র্যালি ও শোকসভা আয়োজন করা হয়।
সকালে দলীয় কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দুপুর ১২টার দিকে শহরের রেলগেট বাস টার্মিনালে এ পৃথক কর্মসূচি শুরু। এ কর্মসূচিতে যোগদিতে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে খন্ডখন্ড মিছিল নিয়ে বাস টার্মিনালে জমায়েত হয়। দূরদুরান্ত থেকে আসা নেতাকর্মীরা দলীয় শ্লোগানের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জয়েরধ্বনি করেন। পরে এখানেই অনুষ্ঠিত হয় শোকসভার আলোচনা। পদবঞ্চিতদের মিছিল ও উপস্থিতিতে শোকসভা বিশাল সমাবেশে পরিনত হয়।
এ সময় বক্তব্য দেন ঈশ্বরদী পৌর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র ইছাহক আলি মালিথা, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাকিবুর রহমান কনক শরীফ, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম লিটন, পৌর কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বাচ্চু, সাবেক ছাত্রনেতা ও সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি আসাদুর রহমান বিরু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ফরিদুল আলম ফরিদ, হামিদুর রহমান, সাবেক যুবলীগ নেতা আনিসুল হক মোল্লা, উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহানা পারভিন রুনা, আওয়ামী লীগ নেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন প্রমুখ।
এ সময় রফিকুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘ঢাকায় তৃণমূলের সভায় যশোরের এক নেতা বক্তব্য রেখেছিলেন ‘আওয়ামী লীগ আজ দুই ভাগে বিভক্ত। একদিকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ আরেকটি হল ‘আমিলীগ’। এই আমিলীগরা দলের নির্যাতিত, বঞ্চিত, পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে নিজেরা কমিটি দখল করে আওয়ামী লীগকে দ্বিখন্ডিত করতে চায়। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না। আমরা ঐক্য চাই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে সবাই মিলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের সোনার বাংলাদেশ গড়তে চাই.’।
সাবেক ছাত্রনেতা আসাদুর রহমান বিরু বলেন, ‘দলের ভিতরে ঘাপটি মেরে থাকা পদলেহী কিছু নেতা তাদের পছন্দমত কমিটি করছে। এতে দীর্ঘদিনের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। সামনে জাতীয় নির্বাচন এটা হতে দেওয়া যাবে না। সভায় অনেকের বক্তব্যে তাদের কোনঠাসা করে রাখার বিষয়টি উঠে আসে।’
জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য সাকিবুর রহমান কনক বলেন, শোককে শক্তিতে পরিণত করে ২০৪১ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। এসময় আগামী নির্বাচনে বর্তমান সরকারকে নির্বাচিত করার শপথ করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতার রাজনীতিকে অবলম্বন করলেই মুক্তিযুদ্ধের পথে থাকতে সক্ষম হবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু প্রণীত বিদেশনীতিকে সামনে রেখেই আগামী দিনের স্বদেশ গঠন করতে হবে, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
সভাশেষে পদবঞ্চিতদের একটি বিশাল শোক র্যালি রেলগেট থেকে প্রধান সড়ক দিয়ে বাজার প্রদক্ষিণ করে।
দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, ঈশ্বরদীতে দলের অনেক নেতাকর্মীকে কমিটিতে রাখা হয়নি। মূলত তাদের দলে ফেরানো, উৎসাহ, উদ্দিপনা ও প্রেরণা দেওয়ার জন্য ইছাহাক আলি মালিথা, রফিকুল ইসলাম লিটন ও সাকিবুর রহমান কনক শরীফ এ শোকসভা ও শোক র্যালির আয়োজন করেন।
ইছাহাক আলি মালিথা দলের বঞ্চিতদের পাশে থাকার জন্য তারা এ কর্মসূচির আয়োজন বলে স্বীকার করেন।