শনিবার , ১০ জুন ২০২৩ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. তারুণ্য
  14. ধর্ম
  15. নির্বাচন

ঈশ্বরদীতে কথিত হোমিও ডাক্তার মাসুম হাসান বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে অপকর্ম

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
জুন ১০, ২০২৩ ৮:৪৮ অপরাহ্ণ

জামায়াত পরিবারের সক্রিয় সদস্য কথিত হোমিও (যৌন) ডাক্তার মাসুম হাসানের একের পর এক বিতর্কিত কর্মকান্ড যেন পিছু ছাড়ছে না। ছাত্রাবস্থায় শিবিরের সদস্য থাকলেও ভোল পাল্টিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের কতিপয় নেতাদের বিভিন্ন ভাবে ‘ম্যানেজ’ করে আদায় করেছেন নানা রকম সুবিধা। আর পাকশী রেলওয়ের এষ্টেট অফিসের শীর্ষ কর্মকর্তাকে ‘বিশেষ’ সুবিধা দিয়ে বাগিয়ে নিয়েছেন রেলওয়ের একর একর জমি। চাল-চলন, চেহারা আর পোষাকে জামায়াতের প্রত্যক্ষ ছাপ থাকলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের বেশ কিছু নেতা আর জনপ্রতিনিধিদের বোগলদাবা করেছেন বেশ সহজেই। শিক্ষাগত যোগ্যতা খুব বেশি না থাকলেও চতুরতা দিয়ে নামের আগে ঠিকই লাগিয়েছেন ‘ডাক্তার’ শব্দটি। এখানেই শেষ নয়, ডাক্তার শব্দটি ব্যবহারের জন্য তিনি হোমিও চিকিৎসার যেই সার্টিফিকেটটি ব্যবহার করেন সেটিও ‘ভুয়া’। যা তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে।

এখানেই শেষ নয়, ক্ষমতাসীনদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ আর সহযোগীতায় ঈশ্বরদীতে বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছেন একের পর এক অপকর্ম। সামান্য হোমিও চিকিৎসক হলেও চড়ে বেড়ান বিলাশ বহুল পাজারো জিপ ও প্রাইভেট কার এ। নামের আগে ডাক্তার আর গাড়ী দুটির সামনে পেছনে ‘প্রেস’ লিখে দাপিয়ে বেড়ান তিনি। নিষিদ্ধ থাকলেও গাড়ী দুটিতে তিনি ব্যবহার করেন ‘কালো গ্লাস’। ব্যক্তি জীবনে অসংখ্য নারীর সাথে সখ্যতা থাকলেও বিয়ে করেছেন একাধিক। সর্বশেষ খায়েস হয়েছে জনপ্রতিনিধি হওয়ায়র। এজন্য রঙিন পোষ্টার টাঙ্গিয়ে ঈশ্বরদী পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডেও কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য দোয়া চেয়েছেন তিনি। অপর দিকে নিজের এতসব অপকর্ম যাতে প্রকাশ না পায় সে জন্য স্থানীয় একটি পত্রিকার সম্পাদককেও ‘ম্যানেজ’ করে হয়েছেন সাংবাদিক।

সব কিছু মিলিয়ে এসব বিষয়ে সরেজমিন অনুসন্ধানে কথিত হোমিও ডাক্তার মাসুম হাসানের বিরুদ্ধে বেড়িয়ে এসেছে লোকহর্ষক তথ্য।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, জামাত পরিবারের সদস্য হওয়ায় ছাত্র জীবনে শিবিরের সক্রিয় সদস্য ছিলেন মাসুম হাসান। ২০০৬ সালে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের পতন হলে জীবিকার তাগিদে ঈশ্বরদীর ভাদুর বটতলায় হোমিও (যৌন) চিকিৎসার ব্যবসা শুরু করেন। শহরের রেলগেট থেকে ভ্যানে চড়ে যাওয়া-আসা করতেন তিনি। সেখানে বিতর্কিত কর্মকান্ডে বিতারিত হয়ে চলে আসেন ঈশ্বরদীতে।

শহরের পাবনা রোডস্থ রহমান প্লাজার দ্বিতীয় তলায় চেম্বার খুলে প্রচার করেন স্ত্রী ও যৌন রোগের চটকদারী বিজ্ঞাপন। সমাজের অসহায় ও সহজ-সরল গৃহবধুদের বিভিন্নভাবে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। শুধু টাকাই নয়, ওই সমস্ত গৃহবধুদেও দূর্বলতার সুযোগে তাদের সাথে গড়ে তুলেন শারীরিক সম্পর্ক্য। সেই সমস্ত বিশেষ মুহুর্তেও ভিডিও ধারণ করে বিপদগ্রস্থ গৃহবধুদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন অঢেল টাকা পয়সা। বাদ যায়নি শারীরিকভাবে অক্ষম পুরুষরাও। তাদেরও বিভিন্ন যৌন উত্তেজক আর শক্তিবর্ধক ঔষধ সরবরাহ করে বাগিয়ে নিয়েছেন টাকা আর নানা ধরণের সুযোগ-সুবিধা। কিছুদিন যেতেই তার প্রতারণার খবর ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে ঈশ্বরদী থেকে তল্পি গুছিয়ে আস্থানা গাড়েন বনপাড়া ও পাবনায়।

বিশ্বস্ত একাধিক সুত্র জানায়, প্রতিটি চেম্বারেই তিনি রাখছেন একাধিক নারী কর্মী। যাদের দিয়ে তিনি নিজে এবং বিভিন্ন ব্যক্তিদের মনোরঞ্জন করাতেন। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, যৌন চিকিৎসার অন্তরালে মাদক আর নারী ব্যবসা কথিত হোমিও (যৌন) ডাক্তার মাসুম হাসানের প্রধান হাতিয়ার। এই হাতিয়ারকে কাজে লাগিয়ে অঢেল বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন মাসুম হাসান। সুত্রটি আরও জানায়, ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি আর পাকশী বিভাগীয় ভুমি কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামানকে নারী সরবরাহ করে বাগিয়ে নিয়েছেন রেলওয়ের একর একর জমি। তাকে নিয়ে ঈশ্বরদীর একটি রিসোর্টে মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করেন তিনি। যা তদন্ত করলেও বেরিয়ে আসবে।

সুত্রটি আরও জানায়, পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের এমন কোন এলাকা নেই যেখানে কথিত হোমিও (যৌন) ডাক্তার মাসুম হাসানের নামে লিজকৃত জমি নেই। শোনা যায়, বর্তমানে রেলওয়ের লিজ কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও পাকশী বিভাগীয় ভুমি কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামানকে নানাভাবে ম্যানেজ করে ‘ব্যাক ডেটে’ কাগজপত্র বানিয়ে কাজ হাসিল করেন চতুর মাসুম হাসান।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, মাদক ও নারী ব্যবসার খবর প্রচার হয়ে যাওয়ায় পাবনা ও বনপাড়ার চেম্বার গুটিয়ে বর্তমানে ঢাকায় চেম্বার খুলেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়াও পুলিশের হাত থেকে রক্ষার জন্য সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গাড়ী দুটির রং পাল্টিয়ে ফেলের মুহুর্তেই। বিষয়টি এমন, চেম্বার বদলানোর সময় গাড়ীর রংও পাল্টিয়ে ফেলেন তিনি। এই সমস্ত পুরো কাজ সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে তিনি গড়ে তুলেছেন বিশেষ একটি সিন্ডিকেট। যার সদস্য রয়েছে সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, এনজিও কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতা। তাদের মনোরঞ্জনের জন্য পাবনার টেবুনিয়ায় রেলওয়ের জমিতে তিনি গড়ে তুলেছেন বিশেষ ফার্ম হাউজ। ওই কলো গ্লাস লাগানো গাড়ীতে করেই সুন্দরী রমনী ও সিন্ডিকেট সদস্যদের নিয়ে সেখানে প্রবেশ করেন তিনি। নিদিষ্ট সময় শেষে আবার ওই কলো গ্লাস লাগানো গাড়ীতে করে বের হয়ে আসেন।

এদিকে ঈশ্বরদীর কতিপয় সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদেও ম্যানেজ করে বীরদর্পে নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন কথিত হোমিও (যৌন) ডাক্তার মাসুম হাসান। সম্প্রতি রেলগেটস্থ মেথর পোট্টির সামনে অবৈধভাবে লিজ নেওয়া জমিতে দোকান ঘর নির্মানের সময় রেলওয়ে শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন বাবুলের সাথে চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। সে সময় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ চড়াও হলে ঈশ্বরদীর একজন শীর্ষ জনপ্রতিনিধি ও নারীবাজ পাকশী বিভাগীয় ভুমি কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান এর সহযোগীতায় তার কাজ হাসিল করেন।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

error: Content is protected !!