রবিবার , ২৮ মে ২০২৩ | ৫ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

মজুরি বৈষম্যের শিকার ঈশ্বরদীর ৩০ হাজার লিচুকন্যারা

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
মে ২৮, ২০২৩ ১:৩৭ অপরাহ্ণ

ভরা মৌসুমে পাবনার ঈশ্বরদীর গ্রামাঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার নারী প্রত্যক্ষভাবে লিচুর বাগানে নানান কাজের সঙ্গে জড়িত থাকেন। লিচু পাকার পর বাছাই ও গণনার কাজ নারী শ্রমিকরাই করেন। এদের কেউ গৃহিণী, দিনমজুর, স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কর্মরত এই নারীরা ঈশ্বরদীতে ‘লিচুকন্যা’ নামে পরিচিত।

তীব্র গরমে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও লিচুকন্যারা ন্যায্য মজুরি পায় না। পুরুষের থেকে ২০০-৩০০ টাকা কম মজুরিতে তারা কাজ করেন। দীর্ঘদিন যাবৎ লিচুকন্যারা এমন মজুরি বৈষম্যের শিকার বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, বোম্বাই লিচুর রাজধানী খ্যাত ঈশ্বরদী মধুমাস আসলে প্রতিবছরই আলোচনায় আসে। এখানকার রসালো লিচুর কদর দেশজুড়ে। ঈশ্বরদীতে এবার ৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে লিচু গাছে কাঙ্ক্ষিত মুকুল আসেনি। মাত্র ৪০-৫০ ভাগ গাছে বোম্বাই লিচুর মুকুল আসলেও এরমধ্যে বিরাজমান ছিল তীব্র দাবদাহ। টানা তাপদাহে লিচু পাঁকার আগেই লালচে রং ধারণ করে। ফলে গাছেই ফেটে ঝরে পড়েছে অনেক লিচু।

সরেজমিনে লিচু বাগান ঘুরে দেখা যায়, বোম্বাই লিচু পেঁকে লালচে রং ধারণ করেছে। প্রতিটি বাগানেই কাজে নেমেছেন নারী শ্রমিকরা। লিচু উৎপাদন, পরিচর্যা ও বিপণনের কাজ করছে। অনেকটা অন্তরালে থেকে যান লিচু উৎপাদনের সাথে জড়িত এসব লিচুকন্যারা। তাদের সঙ্গে বাগানমালিক ও চাষিদের পরিবারের নারী সদস্যরাও লিচু বাছাই ও গণনার কাজে অংশ নেন।

মানিকনগর গ্রামের লিচু বাগান মালিক হানিফ শেখ বলেন, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মধ্যে বিভিন্ন বাগানে লিচুকন্যারা কাজ করেন। দুই বেলা খাওয়া এবং ৩০০-৪০০ টাকা মজুরি দেওয়া হয়। তবে ৬০০-৭০০ টাকার কমে পুরুষ শ্রমিকরা কাজে আসেন না।

আওতাপাড়ার রোজিনা খাতুন বলেন, বাড়তি আয়ের আশায় সংসারের কাজের ফাঁকে বাগানে কাজ করি। সারাদিন কাজ শেষে ৪০০ টাকা পাই। অথচ একই কাজে পুরুষরা পায় ৬০০-৭০০ টাকা। আমরা নারীরা বৈষম্যের শিকার।

আবেদ মোড় এলাকার আরতি রানী বলেন, সংসারের বাড়তি আয়ের আশায় লিচু মৌসুমে সারাদিন কাজ করি। যে আয় তা দিয়ে কেউ ছাগল, কেউ ঘরের আসবাবপত্রসহ সাংসারিক কাজে ব্যবহৃত হাঁড়ি-পাতিল কিনি। এ টাকা ছেলেমেয়ের পড়াশোনার কাজেও অনেকে ব্যয় করে। লিচু বাগানে কাজ করলে বাড়তি টাকা আয় করা যায়।

চরমিরকামারীর কলেজ ছাত্রী মলিনা খাতুন মলি বলেন, লিচু মৌসুমে আমার মতো শত শত স্কুল-কলেজের ছাত্রী কাজ করে। মজুরি হিসেবে যে টাকা পাই তা দিয়ে সারা বছরের পড়াশোনার খরচ হয়ে যায়। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই বাগানে কাজ করি। মজুরি বাড়ানোর দাবি জানালেও বাগানমালিকরা এর চেয়ে বেশি মজুরি দিতে চান না।

জাতীয় কৃষি পদকপ্রাপ্ত লিচু চাষি আব্দুল জলিল কিতাব বলেন, লিচু বাছাই ও গণনার কাজে নারী শ্রমিকরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এখন শ্রমিকের যে সংকট, তাতে নারী শ্রমিক না থাকলে লিচু বাছাই ও গণনার কাজ কঠিন হয়ে যেত। এবার নারীদের ৪০০ টাকা মজুরি এবং সকাল-দুপুরে খাবার দিতে হয়। গত বছর মজুরি ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এবার কোথায়ও কোথায়ও বাড়িয়ে ৪০০ টাকা করা হয়েছে।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ