বুধবার , ১ মার্চ ২০২৩ | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

ট্রেনের টিকিট: ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে বিষণ্ন মুখে ফিরে গেলেন ১১ কৃষক

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
মার্চ ১, ২০২৩ ৭:৩৬ অপরাহ্ণ

বুধবার সকাল ৮টা। পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের পাশে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার হরিনা গ্রামের আনসার আলী ও জহুরুল ইসলামসহ ১১ কৃষকের বিষণ্ন মুখ। তাঁদের গন্তব্য ছিল ফরিদপুরের ভাঙ্গায়, কিন্তু তাঁরা কেউ ট্রেনের টিকিট কাটতে পারেননি। জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে না থাকায় নিবন্ধনের মাধ্যমে টিকিট কাটতে পারেননি তাঁরা।

একই দুরবস্থা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর গ্রামের গৃহবধূ রোকেয়া পারভিন ও তাঁর স্কুলগামী মেয়ে সেতু আক্তারের। নিবন্ধন না থাকায় তাঁরা টিকিট পাননি। নিম্নবিত্ত হওয়ায় বাসে যাওয়ার মতো বাড়তি টাকা সঙ্গে ছিল না তাঁর। বাধ্য হয়ে বাবার বাড়ি পাবনার আটঘরিয়ায় ফিরে যান তাঁরা।

শুধু তাঁরাই নন, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের মাধ্যমে টিকিটিংয়ের নতুন এই পদ্ধতি চালু হওয়ায় দুপুর পর্যন্ত অনেক রেলযাত্রী টিকিট না পেয়ে ফিরে গেছেন। অনেকে আবার তাৎক্ষণিক কম্পিউটারের দোকান থেকে নিবন্ধন সম্পন্নের পর টিকিট সংগ্রহ করে রেলে ভ্রমণ করেছেন। প্রথম দিনে তুলনামূলক কম টিকিট বিক্রিও হয়েছে বলে জানিয়েছে রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ।

রেল বুকিং কাউন্টারের সামনে সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে নিবন্ধন না থাকায় ট্রেন যাত্রীদের অনেকে টিকিট না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত গরিব, অসহায় ও অশিক্ষিতের সংখ্যাই বেশি। আবার শিক্ষিত অনেক যাত্রীকে পরিচয়পত্র বা নিবন্ধন না থাকায় বিকল্প পথে ফিরে যেতে হয়। অনেকে কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে সেখানে টাঙানো নতুন পদ্ধতির লেখা দেখে তা মোবাইলে আইডি দিয়ে নাম নিবন্ধন করছেন। নিবন্ধন সম্পন্ন করে টিকিট কাউন্টার থেকে তাঁরা টিকিট সংগ্রহ করেন। এতে তাঁদের ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লেগে যায়। এ সময় আইডি কার্ড থাকা যাত্রীদের সহজে টিকিট কাটতে দেখা যায়।

ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কিনতে আসা ঈশ্বরদী সাঁড়া গোপালপুর এলাকার ফরহাদ ইবনে আল ইমাম বলেন, ‘নিবন্ধন সম্পন্ন করে খুবই সহজভাবে টিকিট সংগ্রহ করলাম। কোনো সমস্যা হয়নি। কাউন্টারে এসে ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই টিকিট পেয়ে গেলাম।’

ফরহাদ আরও বলেন, ‘পদ্ধতিটা ভালো। তবে অভ্যস্ত না থাকায় অনেকের সমস্যা হচ্ছে।’

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের কৃষক মঞ্জরুল ইসলামের সঙ্গে আরও ১০ জন ঈশ্বরদী স্টেশন থেকে মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনে ভাঙ্গায় যাবেন বলে টিকিট কাটতে এসেছিলেন। কিন্তু আইডির নিবন্ধন না থাকায় টিকিট কাটতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েন। ফিরে যান কাউন্টার থেকে। তিনি বলেন, ‘আমি তো জানি না। রেলের প্রচার-প্রচারণা আমাদের চোখে পড়েনি।’

মঞ্জুরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা গরিব ও অশিক্ষিত মানুষ। টিকিট কাটতে নতুন পদ্ধতি বুঝতে পারছি না। আমরা যাতে সহজে ট্রেনের টিকিট নিতে পারি, সে জন্য সরকার যেন সেই ব্যবস্থা করে।’

ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে টিকিট বুকিং কাউন্টার সূত্রে জানা যায়, এই কাউন্টারে সারা দিনে ২০টি ট্রেনের টিকিট বিক্রি হয়। ট্রেন চলাচল করে ৩৬টির মতো। প্রচুর যাত্রী হয় এখানে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ এখানে কম টিকিট বিক্রি হয়েছে। নতুন সিস্টেমের কারণে অনেকে ট্রেনের কিনতে পারেননি। তাদের আইডি কার্ড নিবন্ধন ছিল না। তাই টিকিট কম বিক্রি হয়েছে।

এদিকে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনে নেতৃত্বে বুধবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে রেলওয়ে টাস্কফোর্সের বিশেষ অভিযান। এর মাধ্যমে যাঁরা নিবন্ধন করে টিকিট কাটতে পারছেন না, তাঁদের টিকিট কাটতে সহযোগিতা করা ও পদ্ধতি সম্পর্কে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম পাঁচ দিন শিথিল অবস্থায় থাকব। এ সময় যাত্রীদের পদ্ধতির সম্পর্কে অবহিত করা এবং নিবন্ধনে উদ্বুদ্ধ করা হবে। এরপর আমরা আইন পুরোপুরি প্রয়োগ করব।’

নাসির উদ্দিন আরও বলেন, ‘যেহেতু এটা নতুন পদ্ধতি, সেহেতু মানুষের বুঝতে একটু সমস্যা হতে পারে। তবে আশা করি খুব শিগগিরই যাত্রীরা এটি আয়ত্ত করতে পারবেন।’

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ