সোমবার , ২৭ মার্চ ২০২৩ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

ঈশ্বরদী : হাতুড়ি দিয়ে মাথায় ও গোপানাঙ্গে আঘাত করে গাড়িচালক সম্রাটকে হত্যা….

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
মার্চ ২৭, ২০২৩ ১২:৪১ পূর্বাহ্ণ

‘বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে সম্রাট গাড়ি নিয়ে আমার বাসায় আসে। তার মাথা ধরেছে বলে বিছানায় শুয়ে পড়ে। আমার স্বামী মোমিন ওষুধ আনতে গেলে সম্রাট আমার শরীরে হাত দেয়। আমি রাগে হাতুড়ি দিয়ে তার মাথায় ও গোপানাঙ্গে আঘাত করলে সে গুরুতর আহত হয়। পরে স্বামী বাসায় ফিরলে আহত অবস্থায় বস্তায় ভরে ওই গাড়িতে তুলে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরাঘুরি করার পর আমাকে নামিয়ে দিয়ে শিলাইদহ ঘাটে গাড়ি রেখে সটকে পড়ে।’

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের নিকিমত কোম্পানির পরিচালকের গাড়িচালক সম্রাট হোসেনকে (২৯) হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার সীমা খাতুন (২৫) পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়ে এসব কথা বলেছেন। রোববার (২৬ মার্চ) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঈশ্বরদী থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে শনিবার (২৫ মার্চ) সকালে পাবনা-কুষ্টিয়ার সীমান্তবর্তী শিলাইদহ পদ্মা নদীর খেয়াঘাট এলাকা থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের নিকিমত কোম্পানির পরিচালক ইউরো ফেদোলোভের গাড়িচালক সম্রাট হোসেনের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এদিকে রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে সম্রাট হত্যায় জড়িত গ্রেপ্তার সীমা খাতুনকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তুলে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাইলে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক মো. শামসুজ্জামান। দুই দিনের রিমান্ড শেষ হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়ার হয়।

নিহত সম্রাট ঈশ্বরদী অরণকোলা আলহাজ্ব ক্যাম্প এলাকার আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে। অভিযুক্ত সীমা খাতুন ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের বাঁশেরবাদা মধ্যপাড়ার বাহাদুর খানের মেয়ে ও আব্দুল মোমিনের (৩৫) স্ত্রী। সীমা খাতুন দুই কন্যা সন্তানের জননী। বর্তমানে তিনি গর্ভবতী।

ঈশ্বরদী থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সম্রাট ও গ্রেপ্তার সীমা খাতুনের স্বামী আব্দুল মোমিন দুজনই স্থানীয় আরবিডি কোম্পানির মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে নিকিমথ কোম্পানির গাড়িচালক ছিলেন। একসঙ্গে কাজের সূত্রে দুইজনের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এ কারণে আব্দুল মোমিনের বাড়িতে সম্রাটের অবাধ যাতায়াত ছিল। কিছু দিন আগে সম্রাটের গাড়িতে ঈশ্বরদী যাওয়ার সময় সীমাকে কোমল পানীয়তে কিছু একটা মিশিয়ে পান করানো হয়। এতে সে অচেতন হয়ে পড়লে সম্রাট গাড়িতেই সীমাকে ধর্ষণ করেন। সেই ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখেন। এরপর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মাঝে মধ্যেই তাকে ধর্ষণ করতেন। কয়েক দিন আগে মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও মুছে ফেলার কথা বলে সীমাকে পাকশী রিপোর্টে ডেকে নিয়ে যান সম্রাট। সেখানেও তাকে ধর্ষণ করা হয়। অনুরোধ করার পরও ভিডিও মুছে ফেলেননি সম্রাট।

আটক সীমা খাতুন ও পালাতক আব্দুল মোমিন


এরপর গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সম্রাট গাড়ি নিয়ে বন্ধু আব্দুল মোমিনের বাড়িতে যায়। তার মাথা ব্যথা করছে জানিয়ে মোমিনের বিছানায় শুয়ে পড়েন। আর বন্ধু আব্দুল মোমিনকে স্থানীয় ফার্মেসির দোকানে ওষুধ আনতে পাঠান। মোমিন দোকানে গেলে মোমিনের স্ত্রী সীমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন সম্রাট। এ সময় সীমা ঘরে থাকা হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাকে গুরুতর আহত করে। মোমিন ওষুধ নিয়ে বাসায় ফিরে অবস্থা বেগতিক দেখে ও স্ত্রীর নিকট থেকে সব শুনে আহত সম্রাটকে বস্তায় ভরে গাড়িতে তুলে চলে যান। এই সময় সম্রাট মৃত্যু যন্ত্রণায় বস্তার ভেতর থেকে গোংরাতে থাকে। তখন তারা গাড়িতে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে থাকেন। তার মৃত্যু নিশ্চিত হলে সীমাকে পাবনা সদরের মাধপুর এলাকায় নামিয়ে দিয়ে বস্তাভর্তি লাশ নিয়ে গাড়িসহ মোমিন চলে যান।

শনিবার সকালে পাবনার সীমান্তবর্তী কুষ্টিয়ার শিলাইদহ ঘাট এলাকায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি গাড়ি দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাডো জিপের ভেতর থেকে সম্রাটের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে নিহতের স্বজনেরা গিয়ে মরদেহটি সম্রাটের বলে শনাক্ত করেন।

নিহত সম্রাটের বাবা আবু বক্কর বলেন, আমার ছেলে সম্রাট তার বন্ধু মোমিন ও মোমিনের স্ত্রীকে চাকরি দিয়েছিল। তবে তাদের চাকরি চলে যায়। আবারও তাদের শ্রমিক হিসেবে চাকরি পাইয়ে দেয়। আমার ছেলে নিকিমত কোম্পানিতে কয়েকটি গাড়ি ভাড়াও দিয়েছিল। প্রতি মাসে বড় অংকের টাকা বিল তুলতো। গেল বৃহস্পতিবার বিল হয়। কৌশলে আমার ছেলেকে স্বামী-স্ত্রী ডেকে নিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে হত্যা করেছে। সীমার স্বামী মোমিনকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।

ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার জানান, গ্রেপ্তার সীমা পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। রোববার দুপুর ২টার দিকে তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হলো বিচারক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুই দিনের রিমান্ড শেষ হলে তাকে কারাগারে পাঠাতে বলা হয়েছে।

এর আগে শনিবার (২৫ মার্চ) রাতে ঈশ্বরদী থানায় নিহতের বাবা আবু বক্কর বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। মামলায় সম্রাটের বন্ধু আব্দুল মোমিন ও মোমিনের স্ত্রী সীমা খাতুনসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিন থেকে চারজনকে আসামি করা হয়েছে।

সূত্র : ঢাকা পোষ্ট

 

 

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ