ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের গাড়িচালক সম্রাট খান হত্যায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে নিহতের বন্ধু ও প্রধান আসামি মমিন। স্ত্রীকে অসামাজিক কাজে বাধ্য করায় স্বামী-স্ত্রী উভয়ে মিলে হত্যা করেছে বলে আদালতকে জানায়।
বুধবার (২৯ মার্চ) জেলা দায়রা জজ শামসুজ্জামানের আদালতে এ স্বীকারোক্তি দেয়। এর আগে মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিকালে মমিনের স্ত্রী সীমা খাতুনও একই আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়। ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, মমিন ও নিহত সম্রাটের মধ্যে বন্ধুত্বের ফলে তাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই একপর্যায়ে একদিন সম্রাট সীমাকে কৌশলে অচেতন করে নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। সেই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে সম্রাট বার বার সীমাকে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করতো। এতে সম্রাটের ওপর সীমা ও তার স্বামী মমিন চরম ক্ষুব্ধ ছিলো। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে তারা সুযোগ খুঁজতে থাকে।
গত ২৩ মার্চ রাতে সম্রাটকে পরিকল্পনা করে মমিনের বাড়িতে ডেকে আনা হয়। রাত ৯টার দিকে খাওয়া-দাওয়া শেষে সম্রাট মাথা ব্যথার কথা বলে বিছানায় শুয়ে পড়ে। মমিনের অনুপস্থিতির সুযোগে সম্রাট জাপটে ধরে বন্ধুর স্ত্রীকে। একপর্য়ায়ে সুযোগ বুঝে মমিন রান্নাঘরে লুকিয়ে রাখা লোহার হাতুড়ি এনে সম্রাটের মাথায় আঘাত করে। পরে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে মিলে সম্রাটকে নাকে-মুখে কাপড় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে মমিন সম্রাটের লাশ বস্তায় ভরে গাড়িতে করে নিয়ে যায়। ঘটনার দুই দিন পর ২৫ মার্চ সকালে কুষ্টিয়ার শিলাইদহ ঘাট এলাকা থেকে সম্রাটের লাশসহ গাড়িটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ২৫ মার্চ রাতে নিহতের বাবা আবু বক্কর বাদী হয়ে মমিন ও তার স্ত্রী সীমা খাতুনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনকে আসামি করে ঈশ্বরদী থানায় মামলা করেন।
পুলিশ ২৫ মার্চ রাতেই মমিনের স্ত্রী সীমা খাতুনকে আটক করে। পরে র্যাব রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে মমিনকে গ্রেপ্তার করে।