আশ্বাস দিয়েও বিয়ে না করায় প্রেমিকার করা ধর্ষণ মামলায় পাবনার ঈশ্বরদী পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম শাওন কারাগারে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। শাওন ঈশ্বরদী পৌরসভার পূর্বটেংরি ঈদগাহ রোডের শহীদুল ইসলামের ছেলে।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে ঈশ্বরদী খায়রুজ্জামান বাবু বাস টার্মিনালে ওই তরুণী ছাত্রলীগ নেতা শাওনকে দেখে কলার চেপে ধরে টানা হিঁচড়ে থানায় নিয়ে যান। দু’পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে বিয়ে হবে এমন আশ্বাসে শাওন থানা থেকে বের হয়ে আসেন।
স্থানীয়রা জানান, আশ্বাস দিয়েও বিয়ে না করায় বুধবার রাত ৮টার দিকে মেয়েটি শাওনের বাড়িতে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা এসে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেন। শাওন বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ফের তাদের থানায় নিয়ে যায়।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আব্দুল লতিফ মিন্টু বলেন, বুধবার রাতে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি আমাকে ফোনে জানায়, শাওনের বাড়িতে একটি মেয়ে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নিয়েছে। শাওনের বাড়িতে গিয়ে দেখি অসংখ্য মানুষের ভিড়। মেয়েটির সঙ্গে বিয়ের প্রসঙ্গ এলে শাওন অস্বীকৃতি জানান। এ সময় মেয়েটি একটি ঘরের দরজা লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাকে সবাই মিলে উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সদস্যরাও উপস্থিত ছিল। দুপক্ষের মধ্যে কোনো সমঝোতা না হওয়ায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ শাওন ও মেয়েটিকে থানায় নিয়ে যায়। এরপর পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছে বলে শুনেছি।
তরুণী জানান, ঈশ্বরদী ইপিজেডে চাকরির সুবাদে শাওনের সঙ্গে তিন বছর আগে পরিচয় হয় তার। শাওন সে সময় ঈশ্বরদী পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরিচয়ের সুবাদে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন শাওন। তবে বিয়েতে রাজি না হলে ধর্ষণ মামলার সিদ্ধান্ত নিলে শাওনের বাবা শহিদুল ইসলাম বিয়ের আশ্বাস দেন।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘শাওন আমাদের বিশেষ মুহূর্তের ছবি ভিডিও করে রেখেছে। তাকে বিয়ের জন্য বললে সে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। আমার গচ্ছিত টাকা শাওনকে দিয়েছি। সে বলেছিল এ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেই বিয়ে করবে। টাকা নেওয়ার পর থেকে সে লাপাত্তা। মঙ্গলবার রাতে তাকে ধরে থানায় নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাকে বিয়ে করবে বলে জানালে পুলিশ শাওনকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু থানা থেকে বেরিয়ে এসে আবারও সে বিয়ে করতে অস্বীকার জানায়। বুধবার রাতে বিয়ের দাবিতে তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। বিয়ে করতে অস্বীকার করায় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছি।’
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার। তিনি বলেন, শাওনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছেন এক তরুণী। আদালতের মাধ্যমে তাকে পাবনা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন :