কিশোর ফুটবলারদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি আশা করি বাংলাদেশ ভবিষ্যতে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলবে এবং তোমাদের (ফুটবলারদের) নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করতে হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বালক অনূর্ধ্ব-১৭ এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বালিকা অনূর্ধ্ব-১৭ এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ফুটবল টুর্নামেন্টে উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ের ১ লাখ ১০ হাজার ৫৫২ জন ছেলে ও মেয়ের অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এটি একটি বিস্ময়কর ঘটনা। আমি মনে করি, বিশ্বে এমন আর কোনো দেশ নেই যেখানে এত বিপুল সংখ্যক ফুটবলার একটি টুর্নামেন্টে অংশ নেয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২১ বছর পর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রচেষ্টা ছিল আমাদের সন্তানদের ফুটবল, ক্রিকেট এবং অন্যান্য খেলাধুলায় আরও উৎসাহিত করা। আমাদের শিশুরা যত বেশি খেলাধুলায় নিজেকে নিয়োজিত করবে আমরা তত বেশি সুবিধা পাব।
শেখ হাসিনা বলেন, এই টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া ৮০ জন ছেলে-মেয়েকে প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) তিন মাস প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশেও পাঠানো হবে।
এই সরকারের প্রথম মেয়াদে ক্রিকেটে বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা অর্জন করেছিল উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা ফুটবলের উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করছি এবং একই সঙ্গে নারীদের খেলাধুলায় সম্পৃক্ত করছি।
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তৃণমূলের মেধাবীদের বের করে আনার লক্ষ্যে ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করছি। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু ও বয়স্কদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করছি এবং তারা অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে।
দেশের প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম এবং প্রতিটি জেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণের পাশাপাশি একাডেমি নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ৫৬টি জেলায় স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগে বিকেএসপি প্রতিষ্ঠা করা হবে, যার লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিটি খেলার ক্রীড়াবিদকে যথাযথ প্রশিক্ষণের সুবিধা দেওয়া। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের বিশ্বমানের ক্রীড়া মঞ্চে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া তৃণমূলে খেলাধুলা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সারা দেশে সুইমিং পুল, শুটিং রেঞ্জ, কাবাডি ও ভলিবল স্টেডিয়াম এবং স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন ব্যবস্থা করছি যাতে প্রতিটি জায়গায় সবাই খেলাধুলায় অংশ নিতে পারে।’
ক্রীড়া উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে বিভিন্ন জেলায় ১৮টি ক্রীড়া ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা ও ক্রীড়া পরিষদ প্রতিষ্ঠার অনুমতি দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী রংপুর বিভাগ ও খুলনা বিভাগের মধ্যকার মেয়েদের ফাইনাল ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের খেলা প্রত্যক্ষ করেন। খেলায় রংপুর বিভাগ চ্যাম্পিয়ন হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবাহ উদ্দিন।