টিকিট চেকিং ও ইঞ্জিনের ত্রুটি দেখিয়ে পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে রাজশাহী থেকে খুলনাগামী ৭৬২ নাম্বার যাত্রীবাহী আন্তঃনগর সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটি তিন ঘণ্টা থামিয়ে রাখা হয়।
ট্রেনটি দুই ঘণ্টা দেরিতে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে আসে।
এতে দুর্ভোগে পড়েন ভ্রমণপ্রিয় যাত্রীরা।
শনিবার (২২ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত স্টপেজ দিয়ে থামিয়ে রাখা হয় ট্রেনটি।
পরে দুপুর ১টায় খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
ট্রেনটি রাজশাহী থেকে সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে ঈশ্বরদী এসে ৮টা ৫ মিনিটে ছেড়ে যায়।
সপ্তাহের সোমবার ছাড়া প্রতিদিন এ নিয়মে চলে। কিন্তু শনিবার (২২ অক্টোবর) দুই ঘণ্টা দেরিতে সকাল ১০টায় ঈশ্বরদী জংশনে আসে।
এদিকে টানা তিন ঘণ্টা ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে আন্তঃনগর সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটি দাঁড়িয়ে থাকার কারণে বিশেষ করে কোমলমতি শিশুরা দুর্ভোগ পড়ে।
এদিকে শনিবার (২২ অক্টোবর) সকাল ১০টায় রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী ৭৬২ নাম্বার সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসে বিনা টিকিটের ট্রেন যাত্রীদের ব্লক চেকিং করা হয়। পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডেন্ট মোর্শেদ আলম, বিভাগীয় সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা, কে এম নুরুল ইসলাম, ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক গৌড় চন্দ্র সিংহ, সাব্বির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
সড়ক ও জনপথের প্রকৌশলী জানে আলম। প্রতিদিনই সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে তিনি কোটচাঁদপুর অফিস করেন। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, অফিসে দেরিতে যেতে হবে আজ। দিনটা ট্রেনেই কেটে গেল।
কলকাতা চিকিৎসার জন্য যাবেন তাই দর্শনা যাচ্ছেন শেখ দিদারুল আলম। তিনি বলেন, কোথায় কার সমাবেশ? রেলওয়ের কী এতে? মানুষ ট্রেন ভ্রমণ স্বস্তি মনে করেন। এভাবে যদি ট্রেনে দুর্ভোগ হয়, যাত্রীরা ট্রেন বিমুখ হয়ে যাবে। আমার সকালে বর্ডার ক্রস করার কথা ছিল, পারলাম না। খানিকটা তো দুর্ভোগই।
সপরিবারে রাজশাহীতে বেড়াতে এসেছিলেন ব্যবসায়ী একরামুল হক। তিন ঘণ্টায় কিছুটা দুর্ভোগে পড়ে গিয়েছিলেন ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে। দুপুরে হোটেল থেকে খাবার নিয়ে এনে ট্রেনের মধ্যে বসে খেতে দেখা যায় তাদের। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আনন্দ করতে রাজশাহী গিয়েছিলাম সপরিবারে, সকালে সাড়ে ৯টায় চুয়াডাঙ্গা পৌঁছানোর কথা ছিল। ঈশ্বরদীতে ট্রেন আসলো ১০টায় ছাড়লো দুপুর ১টায়! আনন্দের শেষে বাড়ি ফেরার পথে সত্যিই বিমূর্ষ হয়ে গেলাম।
পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিন জানান, ৭৬২ নাম্বার সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনে আকস্মিক ব্লক চেকিং অভিযান চালানো হয়। এসময়ে বিনা টিকিটের কোনো যাত্রীকে ট্রেনে যেতে দেওয়া হয়নি। যারা বিনা টিকিটে উঠেছিলেন তাদের টিকিট করানো হয়েছে।
পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেন জানান, ইঞ্জিনে ত্রুটি থাকায় ঈশ্বরদী লোকোমেটিভ ডিজেল কারখানা থেকে পাওয়ার বদলাতে সময় লেগেছে। ট্রেন যাত্রীদের যেন দুর্ভোগ কম হয়, যার কারণে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে ট্রেনটি থামিয়ে পাওয়ার বদল করা হয়।
খুলনায় বিএনপির সমাবেশ, ঈশ্বরদী-খুলনা রেলরুটের বিভিন্ন স্টেশন থেকে বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীরা বিনা টিকেটেই ট্রেনে উঠে পড়তো। এতে ভ্রমণপ্রিয় ট্রেন যাত্রীরা অনেকটা দুর্ভোগে পড়তো।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ জানান, ইঞ্জিনে ত্রুটি থাকার কারণে পাওয়ার বদল করতে সময় লেগেছে। ভ্রমণপ্রিয় ট্রেন যাত্রীদের কিছুটা দুর্ভোগ হয়েছে, এতে পাকশী রেলবিভাগ আন্তরিকভাবে দুঃখিত। এছাড়া অন্য ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ে বিভিন্ন গন্তব্যে চলছে সঠিক সময়ে।