ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সন্নিকটে এনআরবিসি ব্যাংকের সামনে থেকে ছিনতাই হওয়া দুই ট্রাক লোহার সন্ধান করতে পারেনি পুলিশ।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে এই লোহা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলেও ২০ দিনেও পুলিশ কোনও কূলকিনারা করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লোহা ব্যবসায়ী মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার কালাপাড়া এলাকার আব্দুল জলিল মিয়ার ছেলে লোহা ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ। ঘটনার পরপরই তিনি ঈশ্বরদী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প কেন্দ্রিক শক্তিশালী লোহা চোর ও ছিনতাইকারী সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় থাকলেও অজ্ঞাত কারণে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটলেও পুলিশ কার্যত কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, এই চক্রটি বেশ প্রভাবশালী ও সুচতুর হওয়ায় তাদের সনাক্ত করা এবং চিহ্নিত করা বেশ দুষ্কর হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ২ ট্রাক লোহা ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ বেশ তৎপরতা চালালেও তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় প্রযুক্তিগতভাবে তাদের অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমরা আমাদের নানা সোর্স ব্যবহার করে তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, নিরব অ্যালুমিনিয়াম স্টারের নামে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান নিকিমট অটামট্রয়-জেএসসি’র কাছ থেকে ৩৫০ মেট্রিক টন লোহা স্ক্যাপ ক্রয় করেন। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে আব্দুল হামিদ ১৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৯টার সময় ৬টি ট্রাকযোগে ৭৪ টন ৩১০ কেজি লোহা স্ক্যাপ লোড করে ডেলিভারি নেন।
রাত ১০টার সময় রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বের হয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের সামনে এসে গাড়িগুলো বাঁধার জন্য দাঁড় করানো হয়। কিছু সময় পরই অজ্ঞাত কিছু লোক এসে ড্রাইভারকে মারধর করে ড্রাইভারসহ ৬টি ট্রাক ছিনতাই করে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে।
ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ বলেন, অনেক খোঁজ করে পরের দিন ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টার দিকে পাবনা সদরের গাছপাড়া পেট্রল পাম্পের সামনে মালামাল ভর্তি ৪টি ট্রাকের সন্ধান পাই। কিন্তু আরও দুটি ট্রাকের কোন সন্ধান করতে পারিনি। ছিনতাই হওয়া ওই ট্রাকের ড্রাইভার আলতাব হোসেন ও ড্রাইভার কাওছার আলী।
ক্ষতিগ্রস্ত লোহা মালের স্বত্বাধিকারী আব্দুল হামিদ বলেন, গাছপাড়া পেট্রল পাম্পের কাছে থাকা ছিনতাইকৃত মালামাল ভর্তি ৪টি ট্রাক পাবনা সদর থানা পুলিশের তৎপরতায় উদ্ধার হলেও এখন দুটি মালভর্তি ট্রাক সন্ধান দিতে পারেনি ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। তার অভিযোগ, ইতোপূর্বেও রপপুর প্রকল্পের আশেপাশে থেকে কমপক্ষে ১০ থেকে ১২টি লোহা ভর্তি ট্রাক ছিনতাই বা গায়েব হয়ে গেলেও সেগুলো উদ্ধার হয়নি। এই লোহা চোর সিন্ডিকেটের কারণে আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা নিরাপদে ব্যবসা করতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, ছিনতাই হওয়া লোহা স্ক্যাপের বাজারমূল্য কমপক্ষে ৪০ লাখ টাকা। এতোগুলো টাকার মাল উদ্ধার না হলে আমাকে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
