উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত যে পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়নে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বড় ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতার জন্য রাশিয়া ও দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
আজ বুধবার নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটে রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল (পারমাণবিক চুল্লিপাত্র) স্থাপন উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী এ ধন্যবাদ জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিটের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হয়ে, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের মানুষই সবচেয়ে উপকৃত হবে। শিল্প-কারখানা ও সেচকাজ অথবা নিজের ঘরসহ সব কাজেই প্রতিটি প্রতিষ্ঠান এই বিদ্যুৎ কাজে লাগাতে পারবে। প্রথম ইউনিটে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট এবং দ্বিতীয় ইউনিটে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটসহ মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে, এটা মোটেই কম কথা না। যা আমাদের দারিদ্র্যমুক্তি ও মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিরাট অবদান রাখবে।’
‘আমরা ২০২১ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা নিয়েছি, তা বাস্তবায়নে এই পারমাণবিক বিদ্যুৎ বিরাট ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। এর জন্য বন্ধুপ্রতিম দেশ রাশিয়াকে আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ধন্যবাদ এবং রোসাটমকেও ধন্যবাদ। আজকে এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরাট অর্জনের দিন হিসেবে শনাক্ত হয়ে থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরমাণু ব্যবহার করা খুবই কঠিন। পরমাণু মানুষের কল্যাণের জন্য। বাংলাদেশ শান্তির জন্য এটা ব্যবহার করছে। এ প্রকল্প নির্মাণকালে সার্বিক নিরাপত্তার দিকে সবচেয়ে বেশি নজর দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের পারমাণবিক বজ্র ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ, জনস্বাস্থ্যসহ সবকিছু মাথায় রেখেই নির্মাণ কাজ চলছে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতির সময়ও রাশিয়ার বিশেষজ্ঞ প্রকল্পের কাজ বন্ধ করেনি। নিরাপত্তাসহ সব বিভাগই কাজ অব্যাহত ছিল। সবার আন্তরিকতার কারণেই অত্যন্ত কঠিন এই কাজ আমরা করতে পেরেছি। এ কারণেই আজকের অগ্রগতি হয়েছে।
‘আজকে সত্যিকারের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন। যদিও ২০২১ সালে ১০ অক্টোবর প্রথম ইউনিটের প্রেসার ভেসেল স্থাপন। এরপর অল্প সময়ের মধ্যেই আজ দ্বিতীয় ইউনিটের রিয়াক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপন করা হলো। এ জন্য আমি রাশিয়ার বিশেষজ্ঞ, বাংলাদেশের কর্মকর্তা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়সহ সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। বাংলাদেশ অন্ধকারে থাকবে না। ২০২৩ সালের মধ্যে প্রথম ইউনিটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। যাতে বিদ্যুৎ সংযোগ পেতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেবেন। ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটও চালু করার আশা রাখি। এর মাধ্যমে জলবায়ু সম্মেলনের যে সিদ্ধান্ত ছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের যে ঝুঁকি, এতে পরিবেশের কোনো প্রভাব পড়বে না। সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন করে মানুষকে দিতে পারব।
‘আমরা এখনো প্রভাব পরিবর্তনের প্রভাব থেকে মানুষকে রক্ষা করে যাচ্ছি। এই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে তা অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ হবে। এটা আমাদের কোনো ক্ষতিই করবে না বরং মানুষ স্বচ্ছ বিদ্যুৎ পাবে। মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে একটি বড় অবদান রেখে যাবে। সে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
বৈশ্বিক পরিস্থিতির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা খাদ্য নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছি। বিদ্যুৎ উৎপাদন করে গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে দিচ্ছি।