দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার আসামিরা ভিকটিমের বাবাসহ আত্মীয়ের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে লুটপাট, কুপিয়ে জখম ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন গোয়েন্দ সংস্থার নজরদারিতে আনার লক্ষে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন ভুক্তভুগীরা।
আজ শুক্রবার সকালে ঈশ্বরদীর মুলাডুলি ইউনিয়নের নিকড়হাটা গ্রামের বাজারে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের পক্ষে নুর জামাল মোল্লা বলেন, গত ২৫ আগস্ট পূর্ব শত্রুতার জেরে ওহিদ প্রামাণিকের ছেলে হৃদয়, তার বন্ধু আকাশ, আসলাম, তাসফিক ও সাব্বির ওই স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে তাকে কয়েক দফা ধর্ষণ করা হয়। এ বিষয়ে স্কুলছাত্রীর চাচা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এরপর গত ২৪ সেপ্টেম্বর আসামি ও তাদের আত্মীয় স্বজন সিদ্দিক সরদার, লিটন সরকার, শের আলী, রফিকুল ইসলাম, আকাশ, সাব্বির, রাব্বি, আসলাম মন্ডলসহ অপর আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে স্কুলছাত্রীর বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে। চাচাকে কুপিয়ে জখম করে।
তিনি আরো বলেন, থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ আসামি সিদ্দিক সরদারকে আটক করে কারাগারে প্রেরণ করেছে। পরে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার শর্তে বাদীর জবানবন্দিতে আসামি জামিন লাভ করেন। এরপর উভয় পক্ষের সম্মতিতে সমঝোতা প্রক্রিয়া চলাকালে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আসামি লিটন সরদারের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বাদী হয়ে স্কুলছাত্রীর বাবাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে ঈশ্বরদী থানায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত না করে বাদীর আত্মীয় পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার নির্দেশে ঈশ্বরদী থানার ওসি মামলা রুজু করেন।
স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, আসামিরা আমার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে অপহরণ করে কয়েকদিন ধরে ধর্ষণ করেছে। পুলিশ মেয়েটি উদ্ধার করে মেয়ের জবানবন্দি নিয়ে আমার বাড়িতে পাঠিয়েছে। এখন আবার মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে।
শুক্রবারের কর্মসূচিতে স্থানীয় বাজার সমিতির সভাপতি ইসমাইল হোসেন, বয়োবৃদ্ধদ্বয় নুরা মোল্লা, আবু বক্কার মোল্লা, আলিমদ্দি শেখ, মহাবুল বিশ্বাস, আক্তার মোল্লা, বাদশা আলম, আলম সরদার, আলী আকবর, ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম, আইনুল হোসেন, শিক্ষক আ. কাদের, বাদশা মোল্লা, কফিল মোল্লা, আজিবার রহমান, আকমল সরদার ও উকিল মোল্লা, আনজেরা বেগম, হাফিয়া বেগমসহ গ্রামের কয়েকশত মানুষ উপস্থিত ছিলেন। পরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
যোগাযোগ করা হলে ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার সাবিনা ইয়াসমিনের দায়ের করা মামলাটি একটি কাউন্টার মামলা বলে স্বীকার করে বলেন, অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তদন্ত করা হয়েছে। অধিকতর তদন্ত করে অভিযোগটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন হলে আদালতে মামলার চূড়ান্ত তালিকা থেকে আসামিদের নাম বাদ দেওয়া হবে। তবে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগটি ঈশ্বরদী থানায় কেন মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হলো না জানতে চাইলে প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যান ওসি।
সূত্র : কালেরকণ্ঠ