ঈশ্বরদীতে সোমবার গভীর রাত থেকে আজ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে স্বস্তি ফিরেছে আমনচাষিদের মধ্যে। তীব্র খরার কবলে পড়ে নষ্ট হতে যাওয়া আমনের খেতের মাটি ভিজে জমিতে পানি জমেছে। এতে পানির অভাবে চাষাবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকা কৃষকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
আজ মঙ্গলবার উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা জমিতে কাজ করছেন। জমিতে জমে থাকা বৃষ্টির পানি যেন বেরিয়ে যেতে না পারে সে জন্য জমির আইল উঁচু করছেন। জমে থাকা পানি দিয়েই বেশ কিছুদিন সেচ খরচ বাঁচাতে নিরলস কাজ করছেন তাঁরা। বৃষ্টিতে মাটি ভিজে নরম হওয়ায় কেউ কেউ জমিতে গজিয়ে ওঠা আগাছা পরিষ্কার করছেন।
যেসব এলাকায় পানির অভাবে রোপণ করা অনেক দূরে থাক চাষও করতে পারেননি কৃষক। চাষ করতে না পারলে বোরো আবাদের আগ পর্যন্ত চলবে কী করে, এ নিয়ে তাদের কপালে ছিল চিন্তার ভাঁজ।
গতকাল সোমবার গভীর রাতের ভারী বর্ষণে দূর হয়েছে তাঁদের সে চিন্তা। চাষের জন্য ট্রাক্টর মালিকদের কাছে দৌড়ঝাঁপ চলছে। সবাই আগে চাষ দিয়ে জমিতে চারা রোপণে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
উপজেলার লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের কৈকুন্ডা গ্রামের কৃষক ওমর ফারুক, নূর আজিজুর ও নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভারী বর্ষণ হওয়ায় আপাতত জমিতে আর টাকা খরচ করে সেচ দিতে হবে না তাঁদের। বেশ কিছুদিন চলে যাবে এই পানিতে। জমির মাটি আবার উর্বরতা ফিরে পাবে।
উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের বাঘইল কলপাড়া গ্রামের চাষি কাওসার মিয়া বলেন, ‘বৃষ্টির অভাবে জমিতে ধান রোপণ করতে পারছিলেন না। চারাও অনেক বড় হয়ে গেছে। রাতের ভারী বর্ষণে জমি ধান রোপণের উপযোগী হয়েছে।’
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, ‘এ বছর উপজেলায় ৩ হাজার ৭৮৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতদিন আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় পানির অভাবে কিছু এলাকার কৃষক দুশ্চিন্তায় ছিলেন। ভারী বর্ষণে তাঁরা এখন ধান রোপণ করতে পারবেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে পুরো উপজেলার ধান রোপণ শেষ হবে।’
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, ‘মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ৪৯ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।’