ঈশ্বরদী পৌর শহরের শৈলপাড়ায় অবস্থিত জামিয়া ইসহাকিয়া দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসায় ৬লক্ষ ৮২হাজার ৫৫৩ টাকা অডিট আপত্তি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এই টাকা সাবেক হিসাব রক্ষক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত মুহতামিন কথিত মাওলানা হাসান বশির আত্মসাৎ করেছেন বলে অডিট প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে ২০২১ সাল ডিসেম্বর পর্যন্ত করা এই ৬ বছরের অডিটে ১০টি খাতে ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়েছে।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, জামিয়া ইসহাকিয়া দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসার সভাপতি শওকত পাশার নির্দেশে অডিট কমিটি নিয়োগ করা হয়। জামিয়া ইসহাকিয়া দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসার জয়েন্ট সেক্রেটারী মোঃ গিয়াস উদ্দিন খানকে অডিট কমিটির আহবায়ক করা হয়।
জামিয়া ইসহাকিয়া দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসা কমিটির পরিচালনা কমিটির কাছে জমা দেয়া গোপন অডিট প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, হাসান বশির ভারপ্রাপ্ত মুহতামিন ও হিসাব রক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই মাদ্রাসার সকল কাজে অগণিত অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ তছরুপ করেছেন, যা ক্ষমার অযোগ্য। ২০২২ সালের ১৬ মে মাদ্রাসার সভাপতি অভ্যন্তরীণ অডিট রিপোর্ট গ্রহণ করেন। অডিটে বলা হয় ২৯/০৩/২০১৫ তারিখে ৫০ বস্তা সিমেন্টের মূল্য ২বার খরচ দেখানো হয়েছে-২০,১০০টাকা, ১১/০৫/১৫ তারিখে টাস তৈরির মজুরী আংশিক ডাবল পরিশোধ দেখানো হয়েছে-৬,৭৯১টাকা, ১০/০৬/২০১৫ তারিখে ১৫ কেজি খাসীর গোশত ২বার দেখানো হয়েছে-১০,৫০০টাকা, মে ২০১৯ তারিখে ইফতার মাহফিলের গোশত ২বার খরচ দেখানো হয়েছে-২৪,৫০০টাকা। এছাড়া অনলাইনে আগত টাকা রসিদ কাটা হয় নাই তা নিম্নরুপ-হিসাব নং ১২৬০০৯(সাধারণ তহবিল)-৬,০০০টাকা, ৩৮,৩৮০টাকা, ৬,০০০টাকা, ৭,১৭৭টাকা, (লিল্লাহ তহবিল)-৬,০০০টাকা, ১৯,৯৮৩টাকা। ২০/০৭/২০১৯ তারিখে ৫০ টিরেহেল ক্রয়(যার মূল্য ছাত্রদের নিকট থেকে নেয়া হয়েছে) ১৫,০০০টাকা, ক্যাশ বহি ও দৈনিক আদায় রেজিষ্টারে জমা ও খরচের খাতে যে সকল ভুল-ক্রটি হয়েছে তার পরিমান-৫২,৫৩৯টাকা, গোশত ক্রয়ের ২০টি ভাউচারের মধ্যে ৪টি ভাউচারের বিপরীতে লিল্লাহ খাতে আয়ের রসিদ কাটা হয় নাই-২৫,০৫০টাকা, ভুল সংশোধন-২৩৮,০২০টাকা, ঋণ পরিশোধ দেখানো হয়েছে কিন্তু তার বিপরীতে ঋণ গ্রহণ দেখানো হয় নাই, তার পরিমান-৩,৯১,৪৮৪ টাকা, ক্যাশ বহির জমার সাইডে যে সমস্ত ভুল সংশোধন করা হয়েছে-৫৩,০৪৯টাকা।
অডিট রিপোর্টে দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ স্বরূপ ১০টি প্রমাণ সংযুক্ত করা হয়।
বিষয়টি নিয়ে জামিয়া ইসহাকিয়া দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি শওকত পাশা জানান, কারো দ্বারা বিরাগ ও প্রভাবিত না হয়ে নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে কমিটির মাধ্যমে অডিট করা হয়েছে। সাবেক হিসাব রক্ষক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত মুহতামিন মাওলানা হাসান বশির বিরুদ্ধে অডিট সঠিক এবং দুর্নীতিও সঠিক। আমরা দুর্নীতির তথ্য প্রমাণ সংযুক্ত করেছি। এতে কারো সন্দেহ থাকার কথা নয়।