মঙ্গলবার , ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন ও আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ঈশ্বরদী
  5. করোনাভাইরাস
  6. কৃষি
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. গল্প ও কবিতা
  10. চাকরির খবর
  11. জাতীয়
  12. তথ্যপ্রযুক্তি
  13. নির্বাচন
  14. পাবনা
  15. ফিচার

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি : আস্থা হারাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

প্রতিবেদক
বার্তা কক্ষ
ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২২ ৬:০৮ অপরাহ্ণ
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি : আস্থা হারাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানহীন শিক্ষা ব্যবস্থা, সার্টিফিকেট বাণিজ্য, মাত্রাতিরিক্ত টিউশন ফি, শিক্ষার্থীদের জঙ্গি ও দেশবিরোধী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। ফলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আস্থা রাখতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
অভিভাবকরাও এসব প্রতিষ্ঠানে সন্তানকে ভর্তি করিয়ে ঝুঁকিতে ফেলতে চাচ্ছেন না। তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চাহিদার তুলনায় আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় এক প্রকার বাধ্য হয়েই ভর্তি হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

দেশে বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৫০টি (৩টি কার্যক্রম চালু হয়নি)। আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১০৮টি (৬টি কার্যক্রম শুরু করেনি। আর আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৩টি।

পাবলিকের তুলনায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। অথচ এইচএসসিতে উত্তীর্ণ ১০ ভাগ শিক্ষার্থীরও পছন্দের তালিকায় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নেই। এর কারণ হিসেবে সদ্য এইচএসসিতে জিপিএ ৫ পাওয়া ইসমাইল হোসেন হƒদয় বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানে মানের সংকট রয়েছে। এছাড়া জঙ্গিসহ নানা অভিযোগ তো আছেই। তাই আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাই।
রাজধানীর সামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী মিম বলেন, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কারণে অনেকে চাকরি করতে পারছেন না। তাদের সার্টিফিকেট বাতিল হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার মান অনেক ভালো এবং খরচও অনেক কম বলে মন্তব্য করেন তিনি।


কেবল হৃদয় ও মিমই নয় সারাদেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থীর অভিমত প্রায় একই।


এদিকে প্রতিবছরই ‘প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে সতর্কতা জারি করে বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেখভাল করা প্রতিষ্ঠান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। প্রতিষ্ঠানটি যাচাই বাছাই করে শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়ার আহ্বান জানায়। যাতে শিক্ষার্থীরা অননুমোদিত প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে সমস্যায় না পড়েন।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান (বাসস) আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সংবাদ প্রতিদিনকে বলেন, দেশে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটা বৈষম্য বিরাজ করছে। ফলে স্বভাবতই সকল শিক্ষার্থীর প্রথম পছন্দ থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। যেহেতু আসন সংখ্যা সীমিত, তাই অনেক শিক্ষার্থীকে বাধ্য হয়েই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হয়।

আমাদের দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ মালিক বা ট্রাস্টিগন প্রতিষ্ঠানটিকে বাণিজ্যিকীকরণ করেন। তারা শিক্ষায় বিনিয়োগ না করে বাণিজ্যিকীকরণে মনোযোগ দেন। ফলে দিন দিন মান হারাচ্ছে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তিনি বলেন, দেশে শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়বে এবং প্রতিষ্ঠানটি হতে হবে অলাভজনক। তাহলেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আঙুল তোলা বন্ধ হবে।
মাত্রাতারিক্ত টিউশন ফি, অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মানহীন পড়াশোনা, আর সার্টিফিকেট বাণিজ্যের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সরকারের উচিত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি পড়াচ্ছে? টিউশন ফি কতো নিচ্ছে? লেখাপড়া আদৌ হচ্ছে কিনা? সামগ্রিক বিষয়ের ওপর সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা। তাহলে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হবে এবং নিশ্চিত হবে শিক্ষাব্যবস্থা।

শিক্ষাবিদ আরেফিন সিদ্দিক আরো বলেন, পৃথিবীতে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় অধিকাংশই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ই স্থান দখল করে আছে। এক্ষেত্রে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সারা পৃথিবী থেকে আসা অধিকাংশ শিক্ষার্থীরই পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। তার কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, লেখাপড়ার মান ও গবেষণায় অনেক এগিয়ে প্রতিষ্ঠানটি। এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। তবে সব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় যে খারাপ তা কিন্তু নয়। যাচাই বাছাই করে শিক্ষার্থীদের ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য।

ইউজিসি সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে ৫০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে কার্যক্রম চালুর অপেক্ষায় আছে ৩টি। এগুলো হলো, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা।
আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১০৮টি। এর মধ্যে রবীন্দ্র মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়, রুপায়ণ একেএম শামসুজ্জোহা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা খান বাহাদুর আহসান উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়, শাহ মাখদুম ম্যানেজমেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, মাইক্রোল্যান্ড বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কার্যক্রম শুরু করেনি। এছাড়াও আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৩টি। এগুলো হলো ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর ওমেন এবং সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি।

বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সতর্কবার্তা ইউজিসির
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, লাল তারকা চিহ্ন দেয়া রয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, দ্যা পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, ঢাকায় আউটার ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে সিটি ইউনিভার্সিটি, পুন্ড্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (এলএলবি অনুমোদিত নয়)। ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি, ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি, ইবাইস ইউনিভার্সিটি, দ্যা ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা। (ওয়েবসাইটে লেখা রয়েছে কার্যক্রম শুরু হয়নি, অথচ তারা ভুয়া ২টি ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে)। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনটির নেই অনুমোদন আবার কোনোটির নেই বিষয়ভিত্তিক অনুমোদন।
এ প্রসঙ্গে ইউজিসির ডিরেক্টর (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) ওমর ফারুক সংবাদ প্রতিদিনকে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যাতে যাচাই বাছাই করে ভর্তি হন। কোন অননুমোদিত প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে যাতে শিক্ষার্থীরা সমস্যায় না পড়েন। আমরা ইউজিসির ওয়েবসাইটে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের আপডেট তথ্য দিয়ে থাকি। সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী যে বিষয়ে ভর্তি হবেন সে বিষয়ে অনুমোদন আছে কিনা ভালোভাবে দেখেশুনে ভর্তির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। অভিভাবকদেরও এক্ষেত্রে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান ইউজিসির এ কর্মকর্তা।

সর্বশেষ - ঈশ্বরদী

দুঃখিত,এই ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি কপি করা নিষিদ্ধ