১২ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে নাটোরের লালপুর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে ২০২১-২০২২ আখ মাড়াই মৌসুমের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে মিলের সুগার কেইন কেরিয়ারে আখ নিক্ষেপের মধ্য দিয়ে আখ মাড়াইয়ের উদ্বোধন করেন নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের সচিব চৌধুরী রুহুল আমিন কায়সার, চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) আরিফুর রহমান অপু, নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ হুমায়ন কবীর, আখচাষি নেতা আনছার আলী দুলাল, সুকুমার সরকার প্রমুখ। এর আগে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কৃষিবিদ হুমায়ন কবীর জানান, চলতি ২০২১-২০২২ মাড়াই মৌসুমে ৬৮ কার্যদিবসে ১ লাখ ৯৪ হাজার ২৮৬ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করা হবে। এতে ১২ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চিনি আহরণের হার ধরা হয়েছে শতকরা ৭ ভাগ। মিল এলাকায় আখ চাষ হয়েছে প্রায় ১৭ হাজার একর।
গত মাড়াই মৌসুমে ২ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৮ শতাংশ হারে ২৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে চিনি আহরণের হার ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ হওয়ায় মোট চিনি উৎপাদন হয়েছিল ১৫ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন।
তিনি আরও জানান, মিলে বর্তমানে চিনি অবিক্রীত রয়েছে প্রায় ২০০ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক মূল্য ১৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা। গত মৌসুমে লোকসান হয়েছে ২২ কোটি টাকা। আর মিলের পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ এ পর্যন্ত ৭৬৬ কোটি টাকা। গত মৌসুমের তুলনায় এবার ১ লাখ ১ হাজার ৭১৪ মেট্রিক টন কম পরিমাণ আখ মাড়াই হবে এবং চিনি উৎপাদন কম হবে প্রায় ১৩ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে মাঠে কৃষকদের আখ থাকলেও মিলে সরবরাহ করতে পারেননি। ফলে ২০২১ সালের ১১ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে আখ সংকটের কারণে মিলের মাড়াই মৌসুম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে মিলকে লোকসান গুনতে হয়।
তিনি বলেন, নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল এলাকায় প্রায় ১৮ হাজার আখ চাষি ৭টি সাব জোনের মাধ্যমে ৩২টি কেন্দ্রে এবং মিলগেটে আখ সরবরাহ করে থাকেন। কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় কৃত আখের মূল্য শিওর ক্যাশের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়। মিলজোন এলাকায় পাওয়ার ক্রাশার বন্ধ এবং উন্নত জাতের আখ চাষ আবাদ করে তা মিলে সরবরাহ করা গেলে চিনি আহরণের হার বৃদ্ধি পাবে। এতে চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে এবং মিলকে আর লোকসানের মুখে পড়তে হবে না।