ঈশ্বরদীতে রূপপুর প্রকল্পের নৈশ প্রহরীদের ধাওয়া খেয়ে পদ্মা নদীতে ডুবে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার সকালে রনি (৩৩) নামের ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তিনি উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের চর রূপপুর বাহিরচর গ্রামের খুকু মাষ্টারের ছেলে।
রনির পারিবারিক সূত্র এবং স্থানীয়রা জানান, রূপপুর প্রকল্পে লোহা চুরি করতে গিয়ে ধাওয়া খেয়ে নদীর পানিতে পড়ে ডুবে মারা গেছেন তিনি। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নিহত রনির শ্বশুর আবুল খায়ের।
তবে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ জানিয়েছেন, নৈশ প্রহরার দায়িত্বে থাকা প্রশাসনের কর্মীদের বাঁশির হুইসেল শুনে দৌড়ে পালানোর সময় এ ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে রনি ও তার এক বন্ধু রূপপুর প্রকল্পের পেছন দিকে চর রূপপুর বাহিরচর পাড়া দিয়ে প্রকল্পের লোহাসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি করার জন্য গিয়েছিলেন। এ সময় সেখানে দায়িত্বরত প্রশাসনের লোকজন তাদের ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে তারা দুজন দৌড়ে পদ্মার শাখা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
রনির সহযোগী বন্ধু সাঁতরে পাড়ে উঠে এলেও রনি পানিতে তলিয়ে যায়। সাঁতরে পাড়ে উঠে আসা রনির ওই সহযোগীর মুখে এ ঘটনার বর্ণনা শুনে শুক্রবার সারাদিন রনির পরিবারসহ এলাকার লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনও সন্ধান না পেয়ে উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন।
শনিবার সকালে প্রকল্পে কাজ করতে যাওয়ার সময় শ্রমিকরা পদ্মা নদীতে লাশ ভেসে থাকার খবর জানালে রনির পরিবারের লোকজন এসে লাশটি উদ্ধার করেন। ঘটনাস্থলের এক কিলোমিটার দূরে রনির লাশ ভেসে ওঠে বলে জানান তার বাবা খুকু মাষ্টার।
পাকশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক বিশ্বাস জানান, বৃহস্পতিবার থেকে রনি নিখোঁজ ছিল, তার সহযোগী বন্ধুকে প্রথমে দেখা গেলেও পরে সে গা ঢাকা দিয়েছে। এই অবস্থায় রূপপুর প্রকল্পে কাজ করতে যাবার সময় শনিবার সকালে নদীতে একটি লাশ ভেসে ওঠার খবর জানালে রনির লাশ উদ্ধার করা হয়। এ এলাকায় প্রায়ই প্রকল্পের লোহা চুরির ঘটনা ঘটে থাকে বলে জানান তিনি।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, খবর পেয়ে নিহত রনির বাড়ি গিয়েছিলাম। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে রনির সঙ্গে থাকা তার সহযোগী পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলের রূপপুর প্রকল্পের ৪ নম্বর গেটের কাছে কোনও পুলিশ প্রহরার দায়িত্বে ছিল না। ঘটনাস্থলের ওই স্থানটি বিভিন্ন সংস্থার লোকজন দেখাশোনা করেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন।