ঈশ্বরদীতে সপ্তাহের ব্যবধানে এবার এক সহকারী শিক্ষককে শ্রেণিকক্ষ থেকে শার্টের কলার ধরে বারান্দায় এনে প্রকাশ্যে চড় থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠেছে এক অভিভাবকের বিরুদ্ধে। শনিবার শহরের মশুরিয়াপাড়ার গোলাম হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরপরই শিক্ষকেরা জরুরি সভায় অভিযুক্ত অভিভাবকের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন ও বিকেলে থানায় লিখিত এজাহার জমা দেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার জানান, আজ শনিবার বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস চলাকালে মাসুম হোসেন নামে এক অভিভাবক (শিক্ষার্থীর বাবা) উত্তেজিত হয়ে অফিসে এসে সহকারী শিক্ষক হামিদুর রহমানকে খুঁজতে থাকেন। কারণ জানতে তিনি বলেন, ‘শিক্ষক হামিদুর তাঁর ছেলেকে মেরেছেন কেন? এ কথা বলেই তিনি দ্বিতীয় শ্রেণির কক্ষে ঢুকে পাঠদানরত অবস্থায় ওই শিক্ষককে শার্টের কলার ধরে টানতে টানতে বাইরে এনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ও চড় থাপ্পড় মারেন। এতে হতভম্ব হয়ে পড়েন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। পাশেই স্কুলভবন নির্মাণকাজের ঠিকাদার এগিয়ে এলে তাকেও গালি দিয়ে মারতে উদ্যত হন ওই অভিভাবক।
প্রধান শিক্ষক বলেন, বিষয়টি আমরা তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি।
এদিকে শিক্ষককে থাপ্পড় মারার খবরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে দুপুরে ঈশ্বরদী উপজেলা সহকারী প্রাথমিক অফিসার গোলাম মোস্তফা ও পুলিশ সদস্যরা এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম মোস্তফা বলেন, যত দূর জানা গেছে, কোন শিক্ষক নাকি ওই অভিভাবকের প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রকে মেরেছে। বিষয়টি ওই অভিভাবক স্পষ্টভাবে কাউকে বলতে পারেনি। তবে শিক্ষক হামিদুর রহমান প্রথম শ্রেণির ক্লাসে ছিলেন না। তিনি দ্বিতীয় শ্রেণিতে ছিলেন। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে।
শিক্ষক হামিদুর রহমান বলেন, ‘আমি তো কিছুই বুঝে পাচ্ছি না-আমাকে মারল কেন? আমি তো পড়াই দ্বিতীয় শ্রেণিতে। কিন্তু প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীর অভিভাবক আমার ওপর হামলা করল কেন? তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।
এদিকে অভিযুক্ত অভিভাবক মাসুম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, বিদ্যালয় থেকে একটি এজাহার জমা দেওয়া হয়েছে। এতে মাসুম নামে একজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।