ভারত থেকে পণ্য পরিবহনে ২০২০-২১ (জুলাই-জুন) অর্থবছরে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে রাজস্ব আয় করেছে ১৮৩ কোটি ৪১ লাখ ২৮ হাজার ২২৩ টাকা। চলতি অর্থবছরে ভারত থেকে মালবাহী ট্রেনের কোচ এসেছে বাংলাদেশ ১ হাজার ৬১৩টি।
২০১৯-২০ (জুলাই-জুন) অর্থবছরে আয় হয়েছিল ১০২ কোটি ৪৬ লাখ ৯৬ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা। এক অর্থবছরের ব্যবধানেই রাজস্ব আয় বেড়েছে ৮০ কোটি ৯৪ লাখ ৩১ হাজার ৪০৭ টাকা।
ভারত থেকে গম, চাল, ভুট্টা, পাথর, পেঁয়াজ, খৈল, ফ্রাই আশ, বক্সেন পাথর হস্তান্তর করেছে ভারত। মালবাহী ট্রেনযোগে এসব পণ্য দেশে আসে।
একইসঙ্গে আবার দেশে খাদ্য চাহিদা পূরণ সম্ভব হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সকালে ৯টার দিকে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম জানান, করোনাকালীন সময়ে লকডাউনের জন্য যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল কিছুদিন বন্ধ ছিল। সে সময় পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের রাজস্ব আয় বাড়াতে পণ্যবাহী ট্রেনগুলোর দিকে বেশি নজর দেওয়া হয়। যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ থাকার কারণে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলে ক্রসিং (এক ট্রেন স্টেশনে রেখে অন্য ট্রেনকে পার করা) সমস্যা ছিল কম। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সদর দপ্তর পাকশী হওয়ার কারণে লোকোমোটিভ ইঞ্জিন, ক্রু (চালক) এবং ট্রেন পরিচালক (গার্ড) চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া গেছে। যার কারণে এক অর্থবছরে শুধু ভারতের থেকে রেক আসা সম্ভব হয়েছে ১ হাজার ২১৩টি এবং পুনরায় খালি রেক ফেরত গেছে ১ হাজার ৬০৮টি।
২০২০-২১ অর্থবছরে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের আওতায় বিভিন্ন আন্তঃনগর যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে আয় হয়েছে ১৫৭ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার ৭৩৮ টাকা। যাত্রীবাহী ট্রেনের চেয়ে এক অর্থবছরে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের রাজস্ব আয় ২৬ কোটি ১৫ লাখ ৭৭ হাজার ৪৮৫ টাকা।
পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেন জানান, এক সময় এসব পণ্য সড়কপথে আসা-যাওয়া করতো। সে সময় ভারত থেকে মালবাহী ট্রেন দেশে খুব কম আসতো। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর ভারত থেকে সর্বোচ্চ রেক বাংলাদেশ এসেছে এবং খালি রেক ফেরত গেছে। এছাড়া গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি বছরে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের রাজস্ব আয় বেশ বেড়েছে।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) শাহীদুল ইসলাম জানান, ভারত থেকে আগে সড়কপথে পণ্যসামগ্রী দেশে আনা হতো। এতে ভোগান্তি পোহাতে হতো বেশ। কম সময়, স্বল্প খরচে দেশে ট্রেনযোগে নিয়ে আসা যায়। দেশে যেন খাদ্যের ঘাটতি সৃষ্টি না হয়। বর্তমান রেলবান্ধব সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে রেলপথ মন্ত্রণালয় সার্বক্ষণিকভাবে পার্শ্ববর্তী বন্ধুপ্রতীম দেশ ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন।
ডিআরএম শাহীদুল ইসলাম জানান, মালবাহী ট্রেনে ভারত থেকে পণ্যসামগ্রী আসার কারণে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের রাজস্ব আয় বেড়েছে। খাদ্য চাহিদা পূরণের সঙ্গে জনবলের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাঘাট নির্মাণ সামগ্রী উন্নয়নমূলক কাজের পণ্যাদি আমদানি স্বল্প খরচে, কম সময়ে আনা সম্ভব হচ্ছে। এতে উভয় দেশে রাজস্ব বাড়ানো সঙ্গে সু-সম্পর্কের ‘প্লাটফর্ম’ তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পণ্যবাহী রেল যোগাযোগ হওয়ার পর চলতি অর্থবছরে সর্বোচ্চ পণ্যবাহী রেক ভারত বাংলাদেশ প্রবেশ করেনি। স্বাধীনতার পর প্রথম রেকর্ড সৃষ্টি করছে। এতে বাংলাদেশ-ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব দৃঢ় হয়েছে বলে মনে করছেন রেলওয়ে কর্মকর্তারা।